দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিস্থিতি এবং দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশে সফররত ইইউ ইলেকশন এক্সপার্ট মিশনের প্রতিনিধি দল জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার ও কার্যকরী সভাপতি রবিউল আলমের সঙ্গে দেড় ঘন্টাব্যাপী বৈঠক করেন।

শনিবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুর ৩টায় সংসদ সদস্য ভবন কমপ্লেক্সে হাসানুল হক ইনুর ফ্ল্যাটে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে ইইউ ইলেকশন এক্সপার্ট কমিশনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন তাদের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মি. আলেক্সান্ডার ম্যাটুস এবং লিগ্যাল/হিউম্যান রাইটস বিশেষজ্ঞ মিজ্ রেবেকা কক্স।

তারা সংবিধান, নির্বাচনী আইন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিস্থিতি, জাসদের দলীয় ইতিহাস, অবস্থান ও ভূমিকা, ১৪ দলীয় নির্বাচন জোট ইত্যাদি বিষয়ে জানতে চান।

তাদের প্রশ্নের জবাবে হাসানুল হক ইনু বলেন, দেশের সংবিধান ও আইন অনুযায়ী পরিচালিত একটি প্রজাতন্ত্র বাংলাদেশ। দেশের কোনো ব্যক্তিই সংবিধান ও আইনের ঊর্ধ্বে নন। দেশের বিচার বিভাগ অত্যন্ত শক্তিশালী ও স্বাধীন। সরকার বা নির্বাহী বিভাগের দ্বারা কোনো ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার প্রতিকার পাওয়ার জন্য আইনের আশ্রয় অধিকার সুসংরক্ষিত।

তিনি আরও বলেন, প্রায়ই নির্বাহী বিভাগ দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি প্রতিকার পাওয়ার জন্য আদালতে প্রার্থনা করেন এবং আদালত নির্বাহী বিভাগের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পেলে নির্বাহী বিভাগের বিরুদ্ধে রায় দিয়ে থাকেন।

তিনি বলেন, বিএনপি বা জামায়াতের যারা গ্রেপ্তার হয়েছে বা যারা বিচারিক প্রক্রিয়ায় দণ্ডিত হয়েছেন, তারা রাজনৈতিক কর্মী হলেও সর্বজনীন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া, চর্চা, অনুশীলন ও সংস্কৃতির বাইরে গিয়ে সন্ত্রাসবাদী তৎপরতায় যুক্ত হয়েছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডের সুনির্দিষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত দণ্ডাদেশ দিয়েছে। তারপরও তাদের নিম্ম আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার অধিকার সুসংরক্ষিত আছে।

ইনু বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হলেও এটা সত্য, বিএনপি ও জামায়াত স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পথ পরিহার করে সম্পূর্ণ সন্ত্রাসবাদী রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, জামাত সস্বীকৃত এবং উচ্চ আদালতে প্রমাণীত যুদ্ধাপরাধী দল। দেশের সংবিধান ও আইন অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধী ও যুদ্ধাপরাধীদের দলের রাজনীতি ও দল করার অধিকার নেই।

ইনু বলেন, সংবিধান অনুযায়ী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন (ইসি) দেশের সংবিধানের দেওয়া ক্ষমতা ও এখতিয়ারের ভিত্তিতে স্বাধীনভাবে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। সরকার ও নির্বাহী বিভাগ সংবিধান ও আইন অনুযায়ী ইসির চাহিদা অনুযায়ী ইসিকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। বিএনপি নির্বাচন বর্জন ও প্রতিহত করার সন্ত্রাসবাদী রাজনীতির পথ পরিহার করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে নির্বাচন আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতো।

তিনি বলেন, নির্বাচন যত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয় ততই নির্বাচন সৌন্দর্যমণ্ডিত হয়। বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে এবং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও প্রতিষ্ঠানসমূহকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) যে ভূমিকা পালন করে আসছে ভবিষ্যতেও সেই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।