মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মো. মনোয়ার হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশের একটি বহুমাত্রিক সংস্কৃতি, সমৃদ্ধ সাহিত্য এবং গর্ব করার মতো ইতিহাস রয়েছে। যা দুই বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী দেশের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়াতে ও সম্মিলিত সমৃদ্ধির লক্ষ্যে মিয়ানমারের নতুন প্রজন্মকে জানানো দরকার।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) মিয়ানমারের প্রশাসনিক রাজধানী নে পি’ত-তে অবস্থিত জাতীয় গ্রন্থাগারে বই অনুদান অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে এসব কথা বলেন।
এ সময় মিয়ানমারের ধর্ম ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপমন্ত্রী দাও নু মিয়া জান উপস্থিত ছিলেন।
বই হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, ইতিহাস, ভাষা, শিল্প, সংস্কৃতি, সাহিত্যকর্ম, উৎসব, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পর্যটন, গ্রামীণ উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রকাশিত শতাধিক বই লাইব্রেরিতে প্রদান করা হয়।
বইগুলো প্রদর্শনের জন্য দুটি বড় বুক শেল্ফও লাইব্রেরিতে দান করা হয়েছে যার নাম হবে ‘নো বাংলাদেশ’ কর্নার।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ দূতাবাস, ইয়াঙ্গুনের উদ্যোগে সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা দিবস পালিত
অনুদানের প্রতীক হিসেবে রাষ্ট্রদূত আনুষ্ঠানিকভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘দ্য আনফিনিশড মেমোরিজ’ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘দ্য কোয়েস্ট ফর ভিশন ২০২১’ হস্তান্তর করেন। এটি ছিল বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক নে পি ত’তে অবস্থিত মিয়ানমারের জাতীয় গ্রন্থাগারে প্রথম বই অনুদান।
রাষ্ট্রদূত মনোয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি যার রয়েছে হাজার বছরের পুরনো ইতিহাস ও সংস্কৃতি। ড. হোসেন বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করা আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অর্জনসমূহ তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে প্রকৃত রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রদর্শন করুন: জাতিসংঘে মিয়ানমারকে বাংলাদেশ
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২০৩১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার সঠিক পথে রয়েছে।
রাষ্ট্রদূত হোসেন সব ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই অগ্রগতির জন্য অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি ‘সাংস্কৃতি বিনিময়কে’ দু’দেশের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের ভিত্তিতে দু’দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে উল্লেখ করেন।
দূতাবাসের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দূতাবাসের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের জাতীয় গ্রন্থাগারে বই অনুদানের উদ্দেশ্য সংস্কৃতি ও জ্ঞান বিনিমিয়ের মাধ্যমে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সম্পর্কসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার করা, যা দীর্ঘমেয়াদে দু’দেশের স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির জন্য সহায়ক হবে।
অনুষ্ঠানে মিয়ানমারে সংস্কৃতিবিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অনুবিভাগের মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ দূতাবাস, ইয়াঙ্গুনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। দূতাবাস শিগগিরই মিয়ানমারের জাতীয় গ্রন্থাগারের ইয়াঙ্গুন শাখায়ও কিছু বই অনুদান করবে বলে জানানো হয়।
আরও পড়ুন: অটিজম সচেতনতায় দক্ষিণ এশিয়ায় অগ্রগামী বাংলাদেশ: মিয়ানমারে বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত