যথাযোগ্য মর্যাদা ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত হয়েছে।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার পর ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
৩০ লাখ মানুষের আত্মত্যাগ এবং দুই লাখ নারীর সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ অর্জন করে কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা।
এদিনটিতে (২৬ মার্চ) সরকারি ছুটি থাকে।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবসে বঙ্গভবনে ভুটানের রাজা-রানীকে সংবর্ধনা
মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধ থেকে ফিরে প্রধানমন্ত্রী ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে কিছুক্ষণ অবস্থান করেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আরেকটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পরে স্বাধীনতা দিবসের একটি স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: ভুটানের রাজাকে ঢাকায় লাল গালিচা সংবর্ধনা
প্রধানমন্ত্রী আজ তার সরকারি বাসভবন গণভবনে এক অনুষ্ঠানে ১০ টাকা মূল্যমানের স্মারক ডাকটিকিট, ১০ টাকা মূল্যমানের প্রথম দিনের কভার এবং ৫ টাকার ডাটা কার্ড উন্মোচন করেন।
সরকারি-বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় এবং সরকারি, আধা-সরকারি ভবন ও অন্যান্য সরকারি স্থাপনায় আলোকসজ্জা করা হয়।
বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করে।
দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি রেডিও ও টেলিভিশন চ্যানেল বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার এবং সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে।
জাতির পিতা, জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধের শহীদ এবং দেশের সকল দেশপ্রেমিক সন্তানদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দেশের সকল মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
হাসপাতাল, কারাগার, চাইল্ড কেয়ার এবং বৃদ্ধাশ্রম ও ডে কেয়ার সেন্টারে বিশেষ খাবার বিতরণ করা হয়।
শিশুপার্ক, জাদুঘর দিনভর সবার জন্য খোলা থাকে। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল ও চাঁদপুরের অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) টার্মিনালে জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের নৌবাহিনী জাহাজসমূহ সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত খোলা রাখা হয়।
স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরতে দেশের সকল জেলা, উপজেলা পর্যায়ে এবং বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে অনুরূপ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবসে বঙ্গভবনে ভুটানের রাজা-রানীকে সংবর্ধনা