সুদান ও দক্ষিণ সুদানের মধ্যে বিরোধপূর্ণ তেলসমৃদ্ধ আবেই অঞ্চলের গ্রামবাসীদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় জাতিসংঘের এক শান্তিরক্ষীসহ ৫২ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন অন্তত আরও ৬৪ জন।
রবিবার (২৮ জানুয়ারি) জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের আঞ্চলিক কার্যালয় ও আবেইর একজন কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে দেওয়া এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে আবেই তথ্যমন্ত্রী বুলিস কোচ বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় চালানো হামলার কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তবে এটি ভূমির নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে ঘটেছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদান থেকে জেদ্দায় পৌঁছেছেন আরও ১৭৬ বাংলাদেশি
এই অঞ্চলে মারাত্মক জাতিগত সহিংসতা সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানে প্রতিবেশী ওয়ারাপ রাজ্যের টুইক ডিঙ্কা উপজাতি সদস্যরা সীমান্তের অঞ্চল নিয়ে আবেইয়ের এনগোক ডিঙ্কার সঙ্গে ভূমি বিরোধে লিপ্ত।
কোচ বলেন, শনিবারের সহিংসতায় হামলাকারী নুয়ের উপজাতির সশস্ত্র যুবকরা গত বছর বন্যার কারণে ওয়াররাপ রাজ্যে চলে এসেছিল।
এক বিবৃতিতে আবেইতে মোতায়েন জাতিসংঘের অন্তর্বর্তীকালীন শান্তিরক্ষা বাহিনী (ইউএনআইএসএফএ) সংহিংসতায় এক শান্তিরক্ষী নিহতের ঘটনা সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছে।
নিইনকুয়াক, মাজবং এবং খাদিয়ান অঞ্চলে আন্তঃসাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইউএনআইএফএসএ। সংঘর্ষের ফলে হতাহতের ঘটনা ঘটেছিল এবং বেসামরিক লোকজনকে ইউএনআইএসএফএ ঘাঁটিতে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল বলেও জানায় জাতিসংঘের এই শান্তিরক্ষী মিশন।
বিবৃতিতে বলা হয়,‘আগোকের ইউএনআইএসএফএ ঘাঁটিতে একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামলা চালিয়েছে। মিশন হামলাটি প্রতিহত করলেও দুঃখজনকভাবে ঘানার এক শান্তিরক্ষী নিহত হয়।’
আরও পড়ুন: দক্ষিণ সুদানে অপহৃত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী উদ্ধার
২০০৫ সালে সুদানের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে কয়েক দশক ধরে চলা গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটানোর পর থেকে আবেই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সুদান ও দক্ষিণ সুদানের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। সুদান এবং দক্ষিণ সুদান উভয়ই আবের মালিকানা দাবি করে আসছে। এমনকি ২০১১ সালে সুদান থেকে দক্ষিণ সুদান স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এই অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি অমীমাংসিত রয়েছে।
এই অঞ্চলের সংখ্যাগরিষ্ঠ এনগোক ডিঙ্কা জনগণ দক্ষিণ সুদানের পক্ষে। অন্যদিকে নিজেদের গবাদি পশুর জন্য চারণভূমি খুঁজতে আবেইতে আসা মিসেরিয়া যাযাবররা সুদানের পক্ষে। তবে অঞ্চলটি বর্তমানে দক্ষিণ সুদানের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
আফ্রিকান ইউনিয়নের একটি প্যানেল আবেইয়ের জন্য একটি গণভোটের প্রস্তাব করেছিল তবে কে ভোট দিতে পারে তা নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে।
গত মার্চে দক্ষিণ সুদান আবেইতে সেনা মোতায়েনের পর থেকে আন্তঃসাম্প্রদায়িক ও আন্তঃসীমান্ত সংঘর্ষ বেড়েছে।