গাজা থেকে হামাসের হাতে জিম্মি আরও ছয়জনের লাশ উদ্ধার করেছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)। এদের মধ্যে একজন আমেরিকান বংশোদ্ভূত ইসরায়েলি নাগরিক রয়েছে, যিনি জিম্মি হওয়ার পর তাকে ফিরে পেতে তার বাবা-মা বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন।
আইডিএফ জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তাদের কাছে পৌঁছানোর কিছুক্ষণ আগে ছয়জনই নিহত হন।
তাদের জীবিত অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হওয়ায় দেশের নাগরিকদের রোষের মুখে পড়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
এ বিষয়ে নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েল ‘ঠান্ডা মাথায়’ জিম্মিদের হত্যার জন্য হামাসকে জবাবদিহি করবে।
যুদ্ধবিরতি আলোচনা স্থগিতে গোষ্ঠীটিকে দোষারোপ করে তিনি বলেন, ‘জিম্মিদের হত্যা করার মানে হচ্ছে, তারা যুদ্ধবিরতি চায় না।’
আরও পড়ুন: গাজা থেকে জিম্মি সেনা সদস্যের লাশ উদ্ধার করেছে ইসরায়েল
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামলার সময় দক্ষিণ ইসরায়েলের একটি কনসার্ট থেকে হার্শ গোল্ডবার্গ-পোলিন (২৩) নামের ওই তরুণসহ পাঁচ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায় হামাস সদস্যরা।
ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি গ্রেনেডের আঘাতে তার বাঁ হাতের কিছু অংশ হারিয়েছেন। এপ্রিলে হামাসের প্রকাশিত একটি ভিডিওতে তাকে জীবিত দেখা গেলেও তার বাঁ হাত যে নেই, তা বোঝা যায়।
নিহত অপর জিম্মিরা হলেন- ওরি দানিনো (২৫), ইডেন ইয়েরুশালমি (২৪), আলমগ সরুসি (২৭), ও আলেকজান্ডার লোবানভ (৩৩)। এদের কনসার্ট থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল। ষষ্ঠ ব্যক্তি হলেন ৪০ বছর বয়সী কারমেল গাটকে, যাকে নিকটবর্তী বিয়েরির কৃষকদের গ্রাম থেকে অপহরণ করা হয়েছিল।
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফার একটি সুড়ঙ্গের প্রায় এক কিলোমিটার ভেতর থেকে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়, যেখান থেকে গত সপ্তাহে আরেক জিম্মি কাইদ ফারহান আলকাদিকে (৫২) জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
ইসরায়েলের সামরিক শাখার মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাদাভ শোশানি বলেন, সেনাবাহিনী বিশ্বাস করে, ওই এলাকায় আরও জিম্মি রয়েছে। তবে এ বিষয়ে আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট কোনো গোয়েন্দা তথ্য ছিল না।
তিনি বলেন, হামাসই যে তাদের হত্যা করেছে এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
আরও পড়ুন: হামাসের কাছে জিম্মি এক আরব নাগরিককে উদ্ধার করেছে ইসরায়েল
প্রসঙ্গত, যুদ্ধের অবসান, গাজা থেকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী প্রত্যাহার এবং উচ্চপদস্থ হামাস সদস্যসহ বিপুলসংখ্যক ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তির বিনিময়ে জিম্মিদের মুক্তি দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে হামাস।
হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইজ্জত আল-রিশক বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ইসরায়েল মেনে নিলে জিম্মিরা এখনও জীবিত থাকত।