শিশু-কিশোরদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে দূরে রাখতে অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টে নতুন যে আইন উত্থাপন হয়েছে, তা দেশটির সরকারের কূট পরিকল্পনা হতে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন এক্স-এর মালিক মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক। মাস্কের সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করে উত্থাপিত বিলের উদ্দেশ্যের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে অস্ট্রেলিয়া সরকার।
শিশুদের বেড়ে ওঠা প্রাণবন্ত করার উদ্দেশ্যে বৃহস্পতিবার সামাজিক মাধ্যমে তাদের নিষেধাজ্ঞা চেয়ে পার্লামেন্টে এক প্রস্তাব উত্থাপন করেন অস্ট্রেলিয়ার যোগাযোগমন্ত্রী মিশেল রোল্যান্ড। প্রস্তাবিত আইনে ১৬ বছরের কম বয়সি শিশু-কিশোরদের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করা হয়।
রোল্যান্ড বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের মধ্য দিয়ে শিশুদের বেড়ে ওঠা যে অস্ট্রেলিয়ার সামাজিক বৈশিষ্ট নয়, এই বিলের মাধ্যমে এ বিষয়ে একটি নতুন আদর্শিক মূল্যবোধের প্রতিষ্ঠা হবে।’
‘যাচাই না করা বিপুল পরিমাণ কনটেন্টের সংস্পর্শ থেকে শিশু-কিশোরদের বিরত রাখতে তাৎক্ষণিকভাবে অবশ্যই কিছু করা উচিত। আর এ বিষয়টি দেশজুড়ে ব্যাপকভাবে স্বীকৃত।’
তবে বিষয়টিতে অন্য কিছুর গন্ধ পান ইলন মাস্ক। এক্স-এ তিনি লেখেন, অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকদের ইন্টারনেটে প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণে এটি (সরকারের) একটি গোপন কৌশল বলে মনে হচ্ছে।
তবে শুক্রবার মাস্কের এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন দেশটির কোষাধ্যক্ষ জিম চালমার্স।
আরও পড়ুন: ১৬ বছরের কম বয়সিদের জন্য সামাজিক মাধ্যম নিষিদ্ধ করবে অস্ট্রেলিয়া
মাস্কের দাবিই সরকারের উদ্দেশ্য কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই না।’
‘মাস্কের কাছ থেকে এমন মন্তব্য পাওয়া বিস্ময়কর কিছু নয়। কারণ আইন বাস্তবায়নের পর তা লঙ্ঘন করলে এক্সসহ সব সামাজিক প্ল্যাটফর্মকে ১৫ কোটি (অস্ট্রেলিয়ান) ডলার করে জরিমানা করা হবে।’
‘ফলে মাস্ক যে আমাদের এই পদক্ষেপে খুশি নন, তা আমাদের বিস্মিত করে না। তার মন্তব্য আমাদের খুব বেশি ভাবায় না।’
ব্যাপক রাজনৈতিক সমর্থন থাকায় এক্স, টিকটক, ফেসবুক, স্ন্যাপচ্যাট, রেডিট ও ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক প্ল্যাটফর্ম থেকে কিশোর-কিশোরীদের নিষিদ্ধ করতে আগামী সপ্তাহেই অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্ট আইনটি পাস হতে পারে। সোমবার এ নিয়ে দেশটির সংসদ সদস্যদের মধ্যে পার্লামেন্টে বিতর্ক হওয়ার কথা রয়েছে।
চালমার্স আরও বলেন, ‘ইলন মাস্ককে খুশি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নীতিমালা করা আমাদের কাজ নয়। আমাদের কাজ হচ্ছে অনলাইনে শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।’