ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের অবসান ঘটানোর লক্ষ্য নিয়ে ১৫-১৬ জুন সুইজারল্যান্ডের বার্ন শহরে বসছে আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলন। অনেক পশ্চিমা রাষ্ট্রের সঙ্গে এই সম্মেলনে যোগ দিতে হাজির হয়েছে ইকুয়েডর, আইভরি কোস্ট, কেনিয়া ও সোমালিয়ার মতো দেশের প্রেসিডেন্টরা। তবে উক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রথম এই পদক্ষেপে অংশ নিচ্ছে না রাশিয়া।
সুইস কর্মকর্তারা বলছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কিসহ ৫০টিরও বেশি রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান বার্গেনস্টক রিসোর্টে আয়োজিত এই সম্মেলনে যোগ দেবেন। এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘসহ প্রায় ১০০টি প্রতিনিধিদল সম্মেলনে উপস্থিত থাকবে।
কারা থাকবে আর কারা থাকবে না, এটি সম্মেলের আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। তবে সমালোচকরা বলছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অনুপস্থিতিতে এই সম্মেলন হবে অর্থহীন।
আরও পড়ুন: আগের শর্তে ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় রাজি রাশিয়া
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন। পাশাপাশি তুরস্ক ও সৌদি আরব ইতোমধ্যে তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের পাঠিয়েছে। ব্রাজিলের মতো উন্নয়নশীল দেশ এই সম্মেলনে পর্যবেক্ষকের ভূমিকা পালন করবে। এছাড়া ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা নিম্ন স্তরে প্রতিনিধিত্ব করবে।
তবে রাশিয়ার সমর্থক বিভিন্ন দেশের মতো চীনও এই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছে না। কারণ হিসেবে বেইজিং বলেছে, যেকোনো শান্তি প্রক্রিয়ায় রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়েরই অংশগ্রহণ থাকা দরকার।
রাশিয়ার সেনারা বর্তমানে পূর্ব ও দক্ষিণ ইউক্রেনের প্রায় এক-চতুর্থাংশ ভূমি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। গত গ্রীষ্মে যখন সুইজারল্যান্ড এই শান্তি সম্মেলন আয়োজনের উদ্যোগের কথা জানায়, তখন খেরসনের দক্ষিণাঞ্চল ও খারকিভের উত্তরাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেয় ইউক্রেন।
যুদ্ধ এবং কূটনৈতিক কৌশলগুলির মধ্যে সম্মেলনের আয়োজকরা তিনটি পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছেন। সেগুলো হচ্ছে- রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো স্থাপনায় পারমাণবিক নিরাপত্তা, মানবিক সহায়তা ও যুদ্ধবন্দি বিনিময় এবং খাদ্য নিরাপত্তা, যা কৃষ্ণ সাগরে জাহাজ আটকে দেওয়ার কারণে হুমকিতে পড়ে।
আরও পড়ুন: গাজা-ইউক্রেন বিষয়ে 'দ্বৈত নীতি' পরিহার করতে ইইউর প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিবের আহ্বান
এছাড়া, ২০২২ সালের শেষে জেলেনস্কির ১০ দফা শান্তি প্রস্তাবে বর্ণিত কিছু কম বিতর্কিত বিষয়ও এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ইউক্রেনের ভূখণ্ড থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহার, শত্রুতার অবসান এবং ক্রিমিয়াসহ রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় সীমানা পুনরুদ্ধারের মতো বিষয় উল্লেখযোগ্য।
অপরদিকে পুতিন চান, যেকোনো শান্তি চুক্তি করার আগে এমন প্রাথমিক খসড়া চুক্তি তৈরি করা, যাতে ইউক্রেনের নিরপেক্ষ অবস্থা এবং দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়। সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগ দিতে ইউক্রেনের বহু বছরের চেষ্টার কারণেই মস্কোর এই অবস্থান বলে জানান তিনি।