বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) নতুন প্রধান নিয়োগের সাক্ষাৎকার নিতে ১০ জনকে ডেকেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী ১১ ও ১২ ডিসেম্বর সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হবে।
তবে বাছাই প্রক্রিয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মতে, এই পদের জন্য সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ব্যাংকের অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি যাদের মধ্যে কয়েকজন সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এস আলম গ্রুপের সঙ্গেও সম্পৃক্ত।
তারা সতর্ক করে দিয়েছেন, এই জাতীয় ব্যক্তিদের নিয়োগ করা আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থার নিরপেক্ষতাকে নষ্ট করতে পারে এবং পাচার হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করতে পারে।
আর্থিক অপরাধ দমনে বিএফআইইউ'র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তুলে ধরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পর্যবেক্ষকরা। তাদের আশঙ্কা, দুর্নীতিতে জড়িত বা ব্যাংক জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের নিয়োগ দিলে ইউনিটটির বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হতে পারে। কিছু সমালোচক দাবি করেছেন যে এটি পাচার করা তহবিলের পুনরুদ্ধারকে বিপন্ন করতে পারে এবং শিক্ষার্থী এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সংগ্রামসহ অতীতের ত্যাগকে অর্থহীন করে তুলতে পারে।
তালিকায় থাকা ব্যক্তিরা হলেন-বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এ এফ এম শাহীনুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, জহুরুল হুদা, আখতারুল ইসলাম, নুরুল আমিন, বর্তমান নির্বাহী পরিচালক রফিকুল ইসলাম, এ কে এম এহসান, মামুন হোসেন, মো. সাইফুল ইসলাম খান এবং এনসিসি ব্যাংকের সাবেক একজন উপব্যবস্থাপনা পরিচালকও রয়েছেন তালিকায়।
প্রার্থীদের মধ্যে জহুরুল হুদা বিশেষ সমালোচনার মুখে পড়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অবসর নেওয়ার পর এস আলম গ্রুপের ট্রেনিং একাডেমিতে যোগ দেন নূরুল হুদা। এস আলম গ্রুপ ন্যাশনাল ব্যাংক অধিগ্রহণের পর তাকে ব্যাংকটির স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকে থাকাকালে সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত কয়েকজন প্রার্থী এস আলম গ্রুপকে অবৈধ সুবিধা দিয়েছিলেন। বিনিময়ে, তারা অবসর গ্রহণের পরে ব্যবসায়িক গোষ্ঠীটিতে লাভজনক পদ পেয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
সমালোচকরা যুক্তি দেখান যে, বিএফআইইউর নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য এই জাতীয় ব্যক্তিদের নিয়োগ করা গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক তদারকি এবং দুর্নীতিবিরোধী পদক্ষেপগুলো ধ্বংস করে ফেলতে পারে। বাংলাদেশের আর্থিক ব্যবস্থার বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করতে বাছাই প্রক্রিয়ায় অধিকতর যাচাই-বাছাই ও স্বচ্ছতার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনা-রেহানার ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছে বিএফআইইউ