বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাদের দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পরবর্তী নির্বাচনের ঘোষণা না দেওয়া ও আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে সরে না আসা পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোনো সংলাপে বসবে না।
তিনি বলেন, ‘যতক্ষণ না সরকার ঘোষণা করে যে আগামী নির্বাচন একটি নিরপেক্ষ বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে, আপনি যেভাবেই বলুন না কেন আমরা কোনও ফরম্যাটে আলোচনায় অংশ নিতে চাই না। সরকারকে আগে এটা ঘোষণা করতে হবে তারপর ক্ষমতা ছাড়তে হবে।’
অন্যথায়, আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোনো সংলাপের প্রশ্নই আসে না বলে মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা।
আরও পড়ুন: আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট, হাসিনার সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেব না: মির্জা ফখরুল
বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে ১২ দলীয় জোটের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ফখরুল এ মন্তব্য করেন।
এর আগে বুধবার প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, আদালতের বাতিল করা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে বিএনপির সঙ্গে কোনো সংলাপ হবে না।
ফখরুল বলেন, দেশের প্রতি ভালোবাসা দেখিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করলে দেশের সব মানুষ খুশি হবে।
আরও পড়ুন: তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাস্তবায়নে ‘এক দফা’ আন্দোলনের ধরন ভিন্ন রকম হবে: ফখরুল
বিএনপি নেতা বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এলে আমরা স্বাগত জানাব।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দেশের জন্য যে কোনো ধরনের ত্যাগ স্বীকার করতে পারেন। ‘যখন তিনি ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করতে চান এটি তার সত্য মন্তব্য নয়।’
ফখরুল বলেন, আগামী নির্বাচন হবে জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এতে দেশের অস্তিত্ব ও স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন থাকবে কি থাকবে না তা নির্ভর করছে।
তিনি বলেন, অতীতে রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের ঐকমত্য বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এবং সংবিধানের বাইরে গিয়ে নির্বাচনের আয়োজন করেছিল। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) যদি দেশের জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে চান, তাহলে তিনি (তত্ত্বাবধায়ক সরকার) পদক্ষেপ নিবেন।
বিএনপি নেতা বলেন, গণতন্ত্র ও সব গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য তারা ৩৬টি বিরোধী দলের সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে একযোগে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন ইতোমধ্যে চূড়ান্ত পর্যায়ে এসেছে। এই বছরটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আওয়ামী লীগ আবারও একটি পাতানো নির্বাচনের লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের নির্বাচন দেশের জনগণ কখনই মেনে নেবে না।’
আরও পড়ুন: পদত্যাগ ছাড়া সরকারের আর কোনো বিকল্প নেই: ফখরুল
ফখরুল বলেন, তাদের সব দাবি আদায়ে কাজ করে যাচ্ছেন। ‘আন্দোলনকে চূড়ান্ত রূপ দিতে আমরা শিগগিরই আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপের ঘোষণা দেব।’
জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটের আহ্বায়ক মোস্তফা জামাল হায়দার জানান, বৈঠকে আলোচনার মাধ্যমে তারা তাদের ভবিষ্যৎ আন্দোলন ও কর্মসূচির রূপরেখা চূড়ান্ত করেছেন। ‘আমরা বৈঠকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছি তবে আমরা এখন তা প্রকাশ করছি না।’
কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান ও ১২ দলের নেতা সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বীর প্রতীক বলেন, তারা বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে এক দফা আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তিনি বলেন, সব দলের সঙ্গে আলোচনা করে এক দফা আন্দোলনের বিস্তারিত পরিকল্পনা পরবর্তীতে প্রকাশ করা হবে।
আরও পড়ুন: নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়: ইইউ রাষ্ট্রদূতকে ফখরুল