বিশ্বব্যাপী বিলুপ্তপ্রায় মাতৃভাষা ও ভাষা আন্দোলন নিয়ে গবেষণার জন্য একটি ট্রাস্ট ফান্ড গঠনের লক্ষ্যে জাতীয় সংসদে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট (সংশোধন) আইন-২০২৪ উত্থাপন করা হয়েছে।
‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষা গবেষণা ট্রাস্ট ফান্ড’নামে প্রস্তাবিত তহবিলটির মাধ্যমে বাংলা ভাষার প্রসারে জাতির পিতার অবদানকে সম্মান জানাতে চায়।
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বিলটি উত্থাপন করলে তা পর্যালোচনার জন্য সংশ্লিষ্ট যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো হয়। কমিটিকে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
বিলে দুই ধরনের তহবিল গঠনের রূপরেখা দেওয়া হয়েছে: স্থায়ী এবং চলতি।
স্থায়ী তহবিলের উৎস:
১. সরকার থেকে এককালীন অনুদান।
২. সরকার থেকে পর্যায়ক্রমিক অনুদান।
৩. স্থায়ী তহবিলের বিনিয়োগ থেকে আয় বা মুনাফা।
৪. অনুমোদিত অন্যান্য উৎস থেকে অবদান।
আরও পড়ুন: নিরাপদ খাদ্যে বিশেষ নজরদারির আহ্বান সংসদীয় কমিটির
বর্তমান তহবিল ব্যবহার:
১. বাংলা ভাষা ও অন্যান্য ভাষা আন্দোলন নিয়ে গবেষণা।
২. ভাষা গবেষণা ও শিক্ষার জন্য বৃত্তি, ফেলোশিপ, অনুদান ও প্রশিক্ষণ।
৩. বিপন্ন ও অলিখিত ভাষার সংরক্ষণ ও বিকাশ।
৪. অনুবাদ কার্যক্রমের জন্য আর্থিক সহায়তা।
৫. ইনস্টিটিউটের গ্রন্থাগার, বিশ্ব লিপি আর্কাইভ এবং ভাষা জাদুঘর বাড়ানো।
৬. গবেষণা কার্যক্রমের জন্য আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা।
বর্তমান তহবিল উৎস:
১. সরকারি অনুদান।
২. সরকারের অনুমোদিত স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অনুদান।
৩. বিদেশি সরকার, আন্তর্জাতিক সংস্থা বা সরকার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থায়ন, অনুদান, ঋণ।
৪. চলতি তহবিলের বিনিয়োগ থেকে আয়।
৫. অনুমোদিত অন্যান্য উৎস থেকে অবদান।
আরও পড়ুন: গ্রামাঞ্চলে অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে আশঙ্কা সংসদ সদস্যের
তহবিলের পরিচালনা পর্ষদে অন্তর্ভুক্ত থাকবে:
১. শিক্ষামন্ত্রী (চেয়ারম্যান)।
২. প্রতিমন্ত্রী বা শিক্ষা উপমন্ত্রী।
৩. মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব।
৪. অর্থ বিভাগের সচিব।
৫. সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব।
৬. পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব।
৭. প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব।
৮. বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক।
৯. বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল, ঢাকা।
১০. ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সভাপতি।
১১. বাংলাদেশে ইউনেস্কোর প্রধান।
১২. সরকারের মনোনীত কমপক্ষে দুইজন ভাষা শিক্ষা বিশেষজ্ঞ।
১৩. আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালক (সদস্য-সচিব)।
ভাষা শিক্ষার জন্য ফেলোশিপ ও সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ২০২০ সালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এই ট্রাস্ট ফান্ড গঠনের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিলে বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আন্দোলন শুরু করেছিলেন এবং তার সম্মানে ট্রাস্ট ফান্ডের নামকরণ যথার্থ। এ উদ্যোগের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট থেকে অনুমোদন পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন: ১০ বছরে ২৬ হাজার ১৮১টি নদী তীরবর্তী অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ: নৌপ্রতিমন্ত্রী