ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতের বেহাল দশার জন্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিরোধী দল ও স্বতন্ত্র তিন সংসদ সদস্য।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এবং দুই স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথ ও হামিদুল হক খন্দকার অভিযোগ করেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের কথা উঠলেই সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
খোঁড়া অজুহাতে বড় সংস্থাগুলোকে সুদ মওকুফ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে তার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারছে না বলেও অভিযোগ করেন তারা।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) জাতীয় সংসদে 'পেমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট বিল-২০২৪' পাসের সময় আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্যরা এই কঠোর সমালোচনা করেন।
তবে এমপিদের সমালোচনার জবাব দেননি অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
আরও পড়ুন: আইনি-কূটনৈতিক জটিলতায় তারেককে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
বিলের উপর বিতর্কে অংশ নিয়ে পঙ্কজ নাথ চারটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের সুদ মওকুফ নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদন তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘নিয়ম না মেনেই চারটি প্রতিষ্ঠানের ৬ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকার সুদ মওকুফ করা হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ অনুমোদনের প্রয়োজন ছিল। আমি বিস্তারিত বলব না, সংগঠনগুলোর নামও বলব না।’
পঙ্কজ নাথ বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া এই বিশেষ অনুমোদনে মরে যাচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও জনতা ব্যাংক।
সুদ মওকুফের সমালোচনা করে পঙ্কজ নাথ বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ঋণগ্রহীতার মৃত্যুর কারণে সুদ মওকুফ করা হচ্ছে। কিন্তু কিছুই হয়নি, এমনকি বিপর্যয়ও ঘটেনি। সন্দেহজনক ও খোঁড়া অজুহাত দেখিয়ে সুদ মওকুফ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগের বিধান রেখে সংশোধনী বিল পাস
মতিউর রহমানের নাম উল্লেখ না করে পঙ্কজ নাথ বলেন, দুর্নীতির কারণে প্রতিদিনই বিতর্কিত ব্যক্তির নাম আলোচিত হচ্ছে।
‘সরকারি ব্যাংক, এনবিআরের পরিচালক, আপিল ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান থেকে একজন ব্যক্তি রাষ্ট্রের তিন থেকে চারটি গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকেন। তার রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে ১৫ বছর আগে।’
এসব গুরুত্বপূর্ণ পদে তার নাম কারা সুপারিশ করেছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
‘সরিষার মধ্যেই ভূত থাকে। প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কেউ এই ভূত দূর করতে পারবে না।’
বিলের আলোচনায় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, পি কে হালদার চোরাচালানের টাকা নিয়ে ভারতে চলে গেছেন।
অনেক কোম্পানি আজ দেউলিয়া হয়ে গেছে। যারা লিজিং কোম্পানিতে টাকা জমা রেখেছেন এবং তা ফেরত পাবেন তাদের জন্য এই আইনে কোনো বিধান আছে কিনা, তা স্পষ্ট নয়। আইন আছে কিন্তু আইনের প্রয়োগও আছে।
হাফিজ উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক তার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারছে না। ব্যাংকটি ব্যাঙের ছাতার মতো হয়ে গেছে। আজ ১০-২০টি ব্যাংক বন্ধ রয়েছে। তাদের আর্থিক অবস্থা নাজুক।
হামিদুল হক খন্দকার বলেন, আমাদের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের কথা উঠলেই সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (সংশোধন) বিল-২০২৪ সংসদে পাস