বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, সরকার বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা চালিয়ে পরিকল্পিতভাবে দেশে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করছি যে এই সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশকে সংঘাতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তারা বিনা উসকানিতে বিরোধী দলের কর্মসূচিতে হামলা ও বাধা দিয়ে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়।’
রবিবার এক আলোচনা সভায় এই বিএনপি নেতা বলেন, তাদের দল এ পর্যন্ত সকল বাধা-বিপত্তি ও দমনমূলক কর্মকাণ্ডকে উপেক্ষা করে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিকভাবে তাদের চলমান আন্দোলনের সকল কর্মসূচি পালন করে আসছে।
আওয়ামী লীগ সব সময় সংবিধান মেনে চলার কথা বলে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, সংবিধানে বিরোধীদের কথা বলার ও প্রতিবাদ করার অধিকার রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘কেন আমরা সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারি না? সরকার কি রাষ্ট্র নাকি ঈশ্বর? সরকার ঈশ্বর নয় (যে আমরা এর সমালোচনা করতে পারি না)।’
ক্ষমতাসীন দল গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না বলে অভিযোগ করেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, ‘তারা (যারা ক্ষমতায় আছে) একাই কথা বলবে এবং সবাইকে দাসের মতো তাদের কথা মেনে চলতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ তা হতে দেবে না।’
গত মাসে নওগাঁয় ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মচারী সুলতানা জেসমিনকে র্যাব হেফাজতে মুত্যুর প্রতিবাদে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল।
ফখরুল বলেন, ‘সুলতানা জেসমিনকে অবৈধভাবে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কোনো সভ্য ও গণতান্ত্রিক দেশে এটা হতে পারে না। এটা আইন ও সংবিধানের চরম লঙ্ঘন।’
তিনি আরও বলেন, জেসমিন হত্যার ঘটনাকে ছোট করে দেখার কোনো কারণ নেই। ‘এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে যে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার মানুষকে হত্যা ও নির্যাতন করে এবং তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চায়।’
সরকারের উচ্চপদস্থদের নির্দেশে এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যরা দমন-পীড়ন ও গণহত্যায় লিপ্ত রয়েছে বলে অভিযোগ করেন এই বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, দুর্নীতি ও অন্যায়ের কথা যারা বলে এবং এর বিরুদ্ধে সোচ্চার সরকার ক্রমবর্ধমান হারে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ) ব্যবহার করে তাদের দমন করছে।
ফখরুল বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিক ভাই ও সম্পাদকদের সঙ্গে নিয়ে এই আইনের প্রতিবাদ করে আসছি। কিন্তু তারা (সরকার) এটা করবে না (এটি বাতিল বা সংশোধন)।’
তিনি বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার সরকারকে ডিএসএ সংস্কার এবং এর দুটি ধারা বাতিল করার আহ্বান জানালেও আইনমন্ত্রী তা প্রত্যাখ্যান করেন।
এই বিএনপি নেতা বলেন, সরকার দমনমূলক আইন ব্যবহার করে জনগণের কথা বলার অধিকার এবং প্রতিবাদের অধিকার সম্পূর্ণভাবে কেড়ে নিতে চায় বলে ডিএসএ বাতিলের করছে না।
তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সত্য প্রকাশের জন্য অনেক সাংবাদিককে ডিএসএ-এর অধীনে করা মামলায় গ্রেপ্তার ও কারাগারে পাঠানো হয়েছে।