সরকারের দমন-পীড়ন ও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ব্যাপক গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে মঙ্গলবারের কর্মসূচি স্থগিত করেছে বিএনপি।
সোমবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ ঘোষণা দেন।
৭ নভেম্বর তাদের কর্মসূচি স্থগিত করার কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণতন্ত্রকামী মানুষ ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা এখন অমানবিক ও ভয়ংকর পরিবেশে দিন কাটাচ্ছে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘সরকারের নিষ্ঠুর ও নির্মম নিপীড়নের প্রতিবাদে আগামীকাল (মঙ্গলবার) ৭ নভেম্বর আমাদের শহীদ রাষ্ট্রপতি ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্র ধ্বংস ও বাকস্বাধীনতা দমন করে একদলীয় বাকশাল শাসন প্রতিষ্ঠা করে।
রিজভী বলেন, ‘৭ নভেম্বর বিপ্লবের মধ্য দিয়ে বাকশাল থেকে উত্তরণের পথ তৈরি হয়েছিল। প্রতি বছর গণতন্ত্র এবং জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে ভালোবাসে এমন মানুষেরা এই দিন উদযাপন করে। কিন্তু '৭৫ সালে গণতন্ত্রকে হত্যাকারী শাসকেরা এখন আবার বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছে। তারা নতুনভাবে বিরোধীদের কণ্ঠ স্তব্ধ করতে বিএনপি কার্যালয়ে তালা দিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, সরকার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতাদের গ্রেপ্তার করে দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমাদের অনেক নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করায় তারা ঘরে থাকতে পারছেন না। সরকারের দমন-পীড়নের কারণে হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।’
১৯৭৫ সালের ‘বেসামরিক-সামরিক অভ্যুত্থান’ উপলক্ষে প্রতি বছর ৭ নভেম্বরকে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ৭ নভেম্বরকে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসেবে পালন করে বিএনপি।
১৯৭৫ সালের এই দিনে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে সৈন্য ও বেসামরিক জনগণ যৌথভাবে তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানকে ঢাকা সেনানিবাসের বন্দিদশা থেকে মুক্ত করে তার ক্ষমতায় আসার পথ সুগম করে।
বিএনপি ও তার জোটের শরিকরা ৭ নভেম্বরকে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে পালন করলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তার সমমনা সংগঠনগুলো একে মুক্তিযোদ্ধা হত্যা দিবস হিসেবে বিবেচনা করে।