কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমারসহ ১৬টি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে প্রায় দেড় লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ স্বাক্ষরিত নথি থেকে জানা যায়, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৭২, হাতিয়া পয়েন্টে ৭১ ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ৬৮ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এ ছাড়াও ধরলা নদী ব্রীজ পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার, তালুক শিমুলবাড়ি পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার ও দুধকুমর নদীর পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমর ও ধরলা নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী তীরবর্তী ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী, কুড়িগ্রাম সদর, উলিপুর, রাজারহাট, চিলমারী, রৌমারী, চর রাজিবপুর- এই ৮ উপজেলার ৪২ টি ইউনিয়নের ৮৪ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের তথ্যমতে প্রায় দেড় লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছেন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, পানিবন্দি অর্ধলক্ষেরও বেশি মানুষ
জেলা প্রশাসক আরও জানান, ১৪৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পানিবন্দি ৩৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও ২০টি মাদরাসা ও ৪৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
বন্যার্তদের জন্য ৪০৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৩ হাজার ১২৪ জন বন্যার্ত আশ্রয় নিয়েছেন। ইতোমধ্যে বন্যার্তদের মাঝে ২৯১ মেট্রিক টন চাল, ২১ লাখ ৫০হাজার টাকা ও ১৫ হাজার ৩২০ প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
৬ হাজার ৬১৫ হেক্টর ফসলি জমি নিমজ্জিত অবস্থায় রয়েছে। বন্যার্তদের সহায়তায় ইউনিয়ন পর্যায়ে ৮৩টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
এদিকে অধিকাংশ পরিবারে ৬দিন থেকে জ্বলছে না চুলা। হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধির কারণে বানভাসিরা পড়েছেন মহাবিপাকে। তারা ছুটছেন আশ্রয়ের খোঁজে। এদের বেশিরভাগ নৌকায় রাত কাটাচ্ছেন। প্রশাসন থেকে দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানো হলেও এখনও সবার কাছে পৌঁছায়নি ত্রাণ সহায়তা।