সোমবার সকাল ৭টার দিকে সেকান্দার হোসেনের (৪৫) নামে এ প্রবাসী বাটালী রোড়ের নিজ বাসায় করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান। পরে রাতে তার করোনা রিপোর্ট পজেটিভ আসে।
রাত ১০টার দিকে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানোর পর প্রশাসন এ প্রবাসীর বাড়ী লকডাউন করে দিয়েছে।
এদিকে প্রবাসী সেকান্দারের স্বজনরা অভিযোগ করেছেন- ১৫ দিন ধরে জ্বর-সর্দির সাথে শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন তিনি। বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তির চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। গত কয়েকদিন আগে রোগীর অবস্থার আরও অবনতি হলে করোনা পরীক্ষার জন্য জেনারেল হাসপাতালে তার নমুনা দেয়া হয়। রিপোর্ট আসার ধীরগতির কারণে মৃত্যুর আগে জানা যায়নি তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন।
মৃত প্রবাসীর স্ত্রী জানান, তার স্বামী চলতি বছরের জানুয়ারির শেষ দিকে সৌদি আরব থেকে দেশে আসেন। তখন তিনি সুস্থ্ ছিলেন।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি জানান, মারা যাওয়া প্রবাসীর নমুনা আগেই সংগ্রহ করা হয়েছিল। পুলিশের সহযোগিতায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন কবরস্থানে দাফন কাজ করেছে। রাতে তার করোনা রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে। এটিসহ চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে মারা গেল ৭ জন।
সিএমপি কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ‘সোমবার করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া প্রবাসীর রিপোর্ট রাতে পজেটিভ এসেছে বলে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জানানোর পর আমরা এনায়েত বাজারের বাটালি রোডে অবস্থিত ওই প্রবাসীর ভবনটি লক ডাউন করছি।’
এর আগে গতকাল সকালে সেকান্দর মারা যাওয়ার পর করোনা সন্দেহে দুপুর থেকে এলাকা ঘিরে রাখে পুলিশ সদস্যরা।
সেকান্দারের শ্যালক সালমান ফারুকী বলেন, ‘গত ৩১ জানুয়ারি দেশে ফিরেছিলেন দুলাভাই। ১৫ দিন আগে হাল্কা জ্বর হলে সেটা সেরে যায়। পরে আবারও জ্বর হয়, সঙ্গে দেখা দেয় শ্বাসকষ্ট। আমরা চেষ্টা করেও তাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে পারিনি। সবার কথা ছিল, আগে করোনা রিপোর্ট, তারপর ভর্তি।’
আক্ষেপ করে ফারুকী বলেন, ‘বৃহস্পতিবার জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে নমুনা দেয়া সম্ভব হয়। তখন আমরা তাকে হাসপাতালে ভর্তির অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু সেখানে সিট খালি না থাকায় ভর্তি নেয়নি। রোগীকে বাসাতেই চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। তখন আমরা চেষ্টা করেছি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব করোনার রিপোর্টটি হাতে পেতে। তাহলে হাসপাতালে ভর্তি করানো যেত। কিন্তু সিভিল সার্জন জানান এক সপ্তাহের আগে রিপোর্ট আসবে না। অথচ মারা যাওয়ার পর জানা গেছে দুলাভাই করোনা আক্রান্ত ছিল।’
পরিবারের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন বলেন, ‘আমাদের করণীয় কিছুই ছিল না। বিআইটিআইডি থেকে করোনার নমুনার ফলাফল পেতে এক সপ্তাহের বেশি সময় লাগছে।’