সিলেট জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠকের পরও কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেনি সিলেট বিভাগীয় ট্রাক, পিকআপ ও কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
সোমবার (৩১অক্টোবর) সকাল থেকে জেলায় পণ্য পরিবহন বন্ধ রাখার ব্যাপারে তারা অনড় বলে জানিয়েছেন।
সিলেটের সকল পাথর কোয়ারী খুলে দেয়ার দাবিতে সোমবার সকাল ৬ টা থেকে ৪৮ ঘন্টার এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সিলেট বিভাগীয় ট্রাক, পিকআপ ও কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
পণ্য পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘট আহ্বানের প্রেক্ষিতে সোমবার বিকালে সংগঠনটির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান।
বৈঠকে ধর্মঘট থেকে সরে আসার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।
তবে এই বৈঠক শেষে ধর্মঘট থেকে সরে না আসার ঘোষণা দেন ট্রাক, পিকআপ ও কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতারা।
এ প্রসঙ্গে সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবুর রহমান বলেন, পাথর উত্তোলনের দাবির প্রেক্ষিতে খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৩ নভেম্বর এই কমিটির সদস্যরা সিলেটের কোয়ারিগুলো পরিদর্শনে আসবেন। তারা সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখবেন পাথর উত্তোলনের যৌক্তিকতা আছে কি না। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সরকার পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, আজকের বৈঠকে পরিবহন শ্রমিক নেতাদের আমি এ কথা জানিয়েছি। মন্ত্রাণালয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করে তারা যাতে নিজেদের দাবি জানাতে পারেন এই সুযোগ করে দেয়ারও আশ্বাস দিয়েছি। তারা এখানে বৈঠকে ধর্মঘট থেকে সরে আসার কথা জানিয়েছেন। তবে এখান থেকে যাওয়ার পর বলছেন, তাদের অনেকেই নাকি ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত মানছেন না।
জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠকে কোন সমাধান হয়নি জানিয়ে সিলেট বিভাগীয় ট্রাক পিকআপ কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক শাব্বীর আহমদ ফয়েজ বলেন, আমরা আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।
এদিকে, কর্মবিরতি পালন উপলক্ষে মালিক-শ্রমিকদের এক যৌথ সভা রবিবার দুপুরে সিলেট জেলা ট্রাক পিকআপ কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সিলেটের পাথর কোয়ারী বন্ধ থাকায় দশ লক্ষাধিক মানুষ রোজগার হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সাম্প্রতিক প্রলয়ঙ্কারী বন্যায় বৃহত্তর সিলেটের মানুষের জীবন ও জীবিকা মারাত্মক সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে। আয় রোজগার না থাকায় প্রান্তিক এ শ্রমজীবী মানুষগুলো দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। পাথর কোয়ারী বন্ধ রেখে বিদেশ থেকে রিজার্ভের ডলার খরচ করে পাথর আমদানি করে উন্নয়ন কাজ চালানো হচ্ছে। ফলে রাষ্ট্রীয় রিজার্ভ সংকটে নিপতিত হয়েছে। লাখো মানুষের জীবন রক্ষা এবং রাষ্ট্রীয় রিজার্ভের ডলার সাশ্রয়ের জন্য সিলেটের পাথর কোয়ারী জরুরি ভিত্তিতে খুলে দেয়া আবশ্যক।