ফরিদপুরে যাত্রীবাহী বাস ও পিকআপ ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের ৫ জনসহ নিহত হয়েছেন ১৩ জন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে জন। নিহতরা সবাই পিকআপের যাত্রী।
মঙ্গলবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ফরিদপুর সদরের কানাইপুরের তেঁতুলতলা এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। খরব পেয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে ফায়ার সার্ভিস, হাইওয়ে পুলিশ ও জেলা পুলিশের সদস্যরা উদ্ধার কাজ শুরু করে।
ঢাকা থেকে মাগুরাগামী ইউনিক পরিবহনের সঙ্গে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থেকে আসা একটি পিকআপ ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় ঘটনাস্থলেই পিকআপ ভ্যানের চালকসহ ১১ জন নিহত হন। পরে আহতদের উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে আরও ২ জনের মৃত্যু হয়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে ছুটে যান ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার ও পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম। এ ঘটনায় ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ও আহতদের প্রত্যেককে ৩ লাখ টাকা দেওয়ার ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, ‘খবর পেয়েই আমরা ছুটে এসেছি। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া নিহতদের পরিবারের সদস্যদের জন্য ৫ লাখ এবং আহতদের পরিবারের জন্য ৩ লাখ টাকা ঘোষণা করা হয়েছে।’
এসপি মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম বলেন, ‘সড়কে আমাদের চলাচলে আরও সচেতন হতে হবে। তা না হলে থামবে না মৃত্যুর মিছিল। শুধু যাত্রীদেরই নয়, মালিক ও শ্রমিকদের বড় ভূমিকা রাখতে হবে।’
একই পরিবারের নিহত ৫ জন হলেন- ফরিদপুরের বোয়ালমারীর বেজিডাঙ্গা গ্রামের রফিক মোল্লা (৩৫), তার স্ত্রী সুমি বেগম (২৩), ২ ছেলে রুহান মোল্লা (৬) ও হাবিব মোল্লা (৩) এবং রফিকের মা।
রফিক ঢাকায় একটি সরকারি অফিসে লিফটম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ঈদের ছুটি শেষ করে তিনি মা, স্ত্রী ও ২ ছেলেকে নিয়ে পিকআপ ভ্যানে করে ঢাকায় যাচ্ছিলেন। নিহত বাকিদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
নিহতের স্বজনরা জানান, বাসে সিট না পেয়ে পিকআপ ভ্যান ভাড়া করে সবাই বাড়ি থেকে সকালে বের হয়ে ফরিদপুরের উদ্দেশে রওনা হন।
এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কানাইপুরের দিগনগর গ্রামের বাসিন্দা সাহানা বেগম বলেন, ঘটনাস্থলে আসার পর বাসটির একটি চাকা রাস্তার গর্তে পড়ে যায়। গাড়িটি আড়াআড়িভাবে সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে যায়। এ সময় পিকআপ ভ্যানটি বাসটির মাঝামাঝিতে এসে আঘাত করলে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসানুজ্জামান বলেন, ‘লাশের সুরতহালের পরে আমার পরিচয় শনাক্ত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।’