ফেনীতে সম্প্রতি ভয়াবহ বন্যায় উদ্ধার-ত্রাণ বিতরণ ও সরকার পতন পরবর্তী নানা কার্যক্রমের পর এবার ‘বিনা লাভের বাজার’ পরিচালনা করছে জেলা স্বেচ্ছাসেবক পরিবার।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে শহরের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ কার্যক্রমের শুরু হয়।
জানা গেছে, সাশ্রয়ী দামে সাধারণ মানুষদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্য সরবরাহের উদ্দেশ্যে প্রতি বুধবার ও বৃহস্পতিবার এ বাজারের কার্যক্রম চলমান থাকবে। পুরো আয়োজনে স্বেচ্ছাশ্রমে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছেন। মুনাফা ছাড়া এ বাজারে প্রথম দিনে চাল, ডাল, মটর, তেল, চিনি, আলু, পেঁয়াজসহ আরও পাঁচ ধরনের সবজি ছিল। বিনা লাভের এ বাজার থেকে একটি পণ্য সর্বোচ্চ এক কেজি করে কেনার সুযোগ রয়েছে।
বিনা লাভের বাজারে প্রতি কেজি চাল ৬০ টাকা, মসুর ডাল এক কেজি ১০৮ টাকা, বুটের ডাল ৭৫ টাকা, তেল ১ লিটার ১৪৫ টাকা, আলু ৪৮ টাকা, পেঁয়াজ ১ কেজি ১১০ টাকা, চিনি ১২৫ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। যার বাজার মূল্যের থেকে ১০ থেকে ১৫ টাকা কম।
বাজার নিতে আসা রহিমা খাতুন নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘আমাদের মতো নিম্নআয়ের মানুষের জন্য এমন উদ্যোগ অনেক উপকারী। এখানকার একই পণ্য পাশের বাজারে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেশি নিচ্ছে। এ দুর্যোগকালীন এটি আমাদের জন্য অনেক বড় কিছু।’
সাজেদা আক্তার নামে আরেকজন বলেন, ‘এখানে এসে ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য অনুমান করতে পেরেছি। আমরা তাদের কাছে অসহায়। প্রতিটি পণ্যদ্রব্য বাজার থেকে কম দামে কিনতে পেরেছি। এটি যদিও দীর্ঘস্থায়ী হবে না, তারপরও পরবর্তী সময়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বাজার নিয়ন্ত্রণে নজরদারি বাড়ানো উচিত।’
এ ব্যাপারে স্বেচ্ছাসেবক নিষাদ আদনান বলেন, ‘তীব্র রোদ উপেক্ষা করে কাজ করে বিনা লাভের বাজারের মাধ্যমে মানুষের অকুণ্ঠ ভালোবাসা পেয়েছি। এটি অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার হলেও অত্যন্ত সুশৃঙ্খল পরিবেশে আমাদের বাজার কার্যক্রমের প্রথম দিন কেটেছে। আমরা বিনা লাভের বাজার চালু করে আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে সুবিধাভোগীর আওতায় আনার চেষ্টা করছি।’
ওসমান গনি রাসেল নামে আরেক স্বেচ্ছাসেবক বলেন, ‘বাজার থেকে জিনিসপত্র কিনে শুধু যাতায়াত ভাড়া যোগ করে আমরা বিক্রি করছি। আমাদের মূল লক্ষ্য বাজারের ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভাঙার বার্তা দেওয়া। এখানে স্বেচ্ছাশ্রমে সবাই কাজ করছে। বিনা লাভের এ বাজার থেকে একটি পণ্য সর্বোচ্চ এক কেজি করে কেনার সুযোগ রয়েছে।’