বাগেরহাটের চিতলমারীতে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো একটি কুমির উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (১২ এপ্রিল) রাত ৯ টায় উপজেলার কলাতলা ইউনিয়নের দক্ষিণ শৈলদাহ গ্রামের মো. হাসান শেখের মৎস্য ঘের থেকে কুমিরটি উদ্ধার করা হয়।
পরে ট্রাকে করে কুমিরটিকে খুলনা বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তার (ডিএফও)‘র কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কুমিরটিকে সুন্দরবনের গভীরে অবমুক্ত করা হবে বলে জানিয়ছেন ডিএফও নির্মল কুমার পাল।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) রাত থেকে কুমিরটি মো. হাসান শেখের মৎস্য ঘেরে অবস্থান করছিল।
স্থানীয়রা জানান, হঠাৎ করে মৎস্য ঘেরে কুমিরটি দেখা যায়। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়রা কুমির দেখতে ভিড় জমায়। এক পর্যায়ে কুমিরটিকে উদ্ধার করে। কুমিরের শরীরে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার রয়েছে। পরে বন বিভাগের কর্মকর্তারা কুমিরটিকে নিয়ে গেছে। খবর পেয়ে পুলিশও ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরের ভুবনেশ্বর নদ থেকে বিলুপ্তপ্রায় কুমির উদ্ধার
চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকরাম হোসেন বলেন, কেউ যাতে কুমিরটির ক্ষতি না করে সেজন্য ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। খবর শোনার পর থেকে আমরা বন বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেছি। খুলনা বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা তন্ময় আচার্য্যর নেতৃত্বে একটি দল ট্রাকে করে কুমিরটিকে খুলনায় নিয়ে গেছে।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তার (ডিএফও)নির্মল কুমার পাল বলেন, আমরা কুমিরটিকে উদ্ধার করেছি। কুমিরটি সুস্থ্য রয়েছে। পরবর্তীতে কুমিরটিকে সুন্দরবনের গভীরে অবমুক্ত করা হবে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরের ভুবনেশ্বর নদে কুমির, এলাকায় আতঙ্ক
গবেষণার মাধ্যমে সুন্দরবনের কুমিরের চলাচল ও গতিপথ জানার জন্য গত ১৩ মার্চ থেকে ১৬ মার্চ পর্যন্ত সময়ে স্যাটেলাইট ট্যাগ বসিয়ে চারটি কুমির সুন্দরবনের হারবাড়িয়া পয়েন্টে অবমুক্ত করা হয়। ৪টি কুমিরের ৩টি কুমিরের অবস্থান সুন্দরবনে পাওয়া গেলেও, অন্য একটি কুমিরের অবস্থান মোংলা, বাগেরহাট, মোরেলগন্জ, পিরোজপুর এলাকায় পাওয়া গেছে বিভিন্ন সময়। অবমুক্ত করা ৪টি কুমিরের মধ্যে দুটি পুরুষ ও দুটি নারী কুমির রয়েছে। এর আগে বিভিন্ন সময় সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র থেকে ২০০টি কুমির অবমুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু তাদের গতিবিধি এমনভাবে নজর দেওয়া হয়নি। তবে এর আগে একইভাবে শরীরে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসিয়ে কচ্ছপ ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।
সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজাদ কবির বলেন, স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো ৪টি কুমিরের মধ্যে ৩টি কুমির সুন্দরবন এলাকায় অবস্থান করলেও একটি কুমির অন্যত্র চলে গেছে। কিছুদিন ধরে সেটি পিরোজপুরের নদ-নদীতে ঘুরছে। নিজের জন্য কোনো নিরাপদ স্থান পেতে তার এমন পথ চলা বলে ধারণা করা হচ্ছে। কুমিরটি বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ উদ্ধার করেছে।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে সাড়ে ৩ বছরের শিশুকে হত্যা, আটক ১