বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বেইলি রোডের কাচ্চি ভাইয়ের আউটলেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৪৩ জন নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত (১ মার্চ) ২টার পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৩ জন এবং শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে ১০ জন মারা গেছেন।
অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা রাতভর বাড়তে থাকে এবং আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এর আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া জানান, শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউট ও ঢামেক হাসপাতালে ৩৯টি লাশ রয়েছে।
ঢামেক হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি ব্লকের আবাসিক সার্জন ডা. আলাউদ্দিন এর আগে অন্তত ২০ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: রাজধানীর জুরাইনে গ্যাসের চুলার আগুনে নারীসহ ৩ জন দগ্ধ
বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের পর বেশ কয়েকজনকে ঢামেক হাসপাতালে আনা হলেও তাদের মধ্যে ২০ জনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে বলে জানান এই সার্জন।
তিনি জানান, নিহতদের মধ্যে পাঁচজন পুরুষ, ১০ জন নারী, তিনজন শিশু ও দুজন অজ্ঞাত রয়েছেন।
এর আগে, ঢামেক হাসপাতালে ১২ জনকে এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নয়জনকে ভর্তি করা হয়েছিল বলে ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া নিশ্চিত করেন।
বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বেইলি রোডের 'কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে' লাগা আগুন প্রায় দুই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে আসে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার শাহজাদী সুলতানা বলেন, আগুন লাগার দুই ঘণ্টা পর রাত ১১টা ৫০ মিনিটে পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
তিনি বলেন, রাত সাড়ে ১২টার দিকের আপডেট অনুযায়ী দমকলকর্মীরা রেস্তোরাঁ থেকে ৭৫ জনকে উদ্ধার করেন।
এর আগে রাত ৯টা ৫০ মিনিটে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে জানান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের গুদাম পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: মিরপুরের ঝিলপাড় বস্তির আগুন নিয়ন্ত্রণে
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি স্টেশনের আটটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানান তিনি।
পরে আরও চারটি ইউনিট যোগ করা হয় এবং পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়।
তাৎক্ষণিকভাবে আগুনের সূত্রপাত জানা যায়নি জানিয়ে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, এ বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন পরে বলেন, ভবনটিতে মাত্র একটি দোকান ছিল, বাকি আউটলেটগুলোর সবই রেস্তোরাঁ। পুরো ভবন জুড়ে গ্যাস সিলিন্ডার ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল। এর যে কোনো একটি বা গ্যাসের চুলা বিস্ফোরিত হয়ে আগুন লাগতে পারে। তদন্তের পর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।