শুধু উত্তরাঞ্চল নয়, শীতে কাঁপছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলাগুলোও। কনকনে ঠান্ডা আর হাড় কাঁপানো শীতে জবুথবু চুয়াডাঙ্গার জনজীবন।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় এবং সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গায় ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৮ শতাংশ।
শুক্রবার মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে এ অঞ্চলের উপর দিয়ে। দিন দিন তাপমাত্রা আরও কমবে। এমনটাই জানিয়েছে প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া অফিস, চুয়াডাঙ্গার সিনিয়র পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান।
এ বছর কুয়াশার ঘনত্ব এবং স্থায়িত্ব বেশি হওয়ায় কৃষকের নতুন ধানের বীজতলা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
এরই মাঝে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে বাড়তে শুরু করেছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রকিব সাদী জানিয়েছেন, ১ সপ্তাহে প্রায় ৩ হাজার রোগী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। এদের মধ্যে শিশু আর বৃদ্ধদের সংখ্যা বেশি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শীতের সকালে গায়ে গরম কাপড় জড়িয়ে কাঁপতে কাঁপতে কাজের সন্ধানে বেরিয়েছেন খেটে খাওয়া। কৃষি শ্রমিকেরা খেতে কাজ করতে যাচ্ছেন শীতের মধ্যেই।
তবে শীতের কষ্টের মধ্যেও খানিকটা উৎসবের আমেজ দেখা যায় গ্রামাঞ্চলে। পিঠা-পায়েসসহ নানা রকমের খাবার তৈরির আয়োজন সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বহু বছর ধরে।
হাড়কাঁপানো শীতের মধ্যেই গাছ থেকে খেজুর রসের হাঁড়ি নামাতে দেখা গেছে গাছিদের। সেই রস থেকে গুড়-পাটালি তৈরির আয়োজনও চলছে। চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জ গুড়ের হাটও জমে উঠতে শুরু করেছে। এ অঞ্চলের গুড় এবং নলেন পাটালির চাহিদা দেশব্যাপী। বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা আসছে সরোজগঞ্জ গুড়ের হাটে।
সামান্য রোদের আশায় কুমড়ো-কলায়ের বড়ির ডালা নিয়ে ঘুরছেন গৃহিণীরা।
এছাড়াও চুয়াডাঙ্গার শপিংমলগুলোতে শুরু হয়েছে শীতের পোশাক কেনার ধুম। জমে উঠেছে দোকান ও আউটলেটগুলো। তবে ক্রেতারা বলছে গরম পোশাকের দাম হাতের নাগালের বাইরে।
কর্কটক্রান্তি রেখা বরাবর চুয়াডাঙ্গার অবস্থান হওয়ায় শীত মৌসুমে প্রায় দিনই দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করে এখানে।