লাইফস্টাইল
আম্বানিপুত্রের বিয়ের চূড়ান্ত আয়োজন: অভিন্ন ঐতিহ্যে দেশি-বিদেশি তারকা ও বিশ্বখ্যাত ব্যক্তিরা
ভারতীয় ঐতিহ্যের সব রঙ, দেশ-বিদেশের জনপ্রিয় তারকা আর বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব। অনন্ত আম্বানি ও রাধিকা মার্চেন্টের রাজকীয় বিয়ের চূড়ান্ত আয়োজনে এগুলোর সবই থাকা চাই। শত হলেও এশিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মুকেশ আম্বানির কনিষ্ঠ পুত্রের বিয়ে বলে কথা। বর ও কনের চার হাত এক করার লক্ষ্যে গত ৩ জুলাই থেকে যেন তারই মহড়া চলছে। উৎসবের মধ্যমণি অনন্ত-রাধিকা হলেও এখানে এমন সব তারকা ও ব্যক্তিদের একত্রিত করা হয়েছে, যা শুধুমাত্র আম্বানিদের পক্ষেই করা সম্ভব। চলুন, সেই পরিচিত মুখগুলোর পাশাপাশি চোখ ধাঁধানো এই আয়োজনের বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
বন্যা পরবর্তী পানিবাহিত রোগ থেকে সতর্ক থাকার উপায়
প্রতিবারের মতো এ বছরের বর্ষা মৌসুমেও বন্যাগ্রস্ত অবস্থায় দিন অতিবাহিত করছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটি সামলাতে হচ্ছে দেশের উত্তর-পূর্বের বিভাগ সিলেটের অধিবাসীদের। বন্যার পানি ও শিল্পকারখানার বর্জ্যের সঙ্গে মিশ্রিত পানি সৃষ্টি করছে অস্বাস্থ্যকর বিপজ্জনক পরিবেশ। ফলে শঙ্কা বাড়ছে ডায়রিয়া, কলেরা, টাইফয়েড ও হেপাটাইটিস এ-এর মতো রোগের সংক্রমণের। ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের পর্যাপ্ত সেবা নিশ্চিত করতে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হচ্ছে চিকিৎসা সেবা কেন্দ্রগুলোকে। এমন ক্রমবর্ধমান সঙ্কটে প্রতিটি মহল্লা বা পাড়া, পরিবার, এমনকি ব্যক্তি পর্যায় থেকেও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। চলুন, বন্যা পরবর্তী পানিবাহিত রোগ থেকে দূরে থাকার উপায়গুলো জেনে নেওয়া যাক।
বন্যা পরবর্তী পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধে করণীয়
পানি ফুটিয়ে নেওয়া
পানি থেকে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও অন্যান্য পরজীবীর মতো ক্ষতিকারক রোগজীবাণু নির্মূল করার সর্বোৎকৃষ্ট উপায় হচ্ছে পানি ফুটানো। এর জন্য কমপক্ষে এক মিনিট থেকে সর্বোচ্চ তিন মিনিট পর্যন্ত পানি গরম করা উচিৎ। অতঃপর ঠান্ডা করে পান করা সহ প্রয়োজনীয় কাজে এই পানি ব্যবহার করা যাবে। ফুটানোর বিকল্প হিসেবে পানি পরিশোধন ট্যাবলেট বা পানির ফিল্টার ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এগুলোর থেকে ফুটানোর মাধ্যমেই সবচেয়ে কার্যকরী ভাবে জীবাণু নির্মূল হয়। সর্বত ভাবে বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে বন্যার পর ডায়রিয়া বা কলেরার সংক্রমণ থেকে দূরে থাকা যায়।
আরও পড়ুন: বন্যার সময় খাবার পানি পরিশোধিত করার উপায়
বন্যার পানি যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলা
পয়ঃনিষ্কাশন, রাসায়নিক পদার্থ এবং অন্যান্য আবর্জনার কারণে বন্যার পানি দূষিত হয়। প্লাবিত রাস্তাঘাটে যাতায়াতের সময় এবং ঘরবাড়িতে বন্যার পানি ঢুকে পড়লে হরহামেশাই মানুষ এই দূষিত পানির সংস্পর্শে আসে। আর এ থেকেই তৈরি হয় নানা ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি। বন্যার পানিতে থাকে রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু, যা বিভিন্ন ভাবে শরীরে প্রবেশ করতে পারে। তাই সংস্পর্শ যতটা সম্ভব কমানোর জন্য পানিরোধী বুট এবং গ্লাভ্স পরা যেতে পারে। এছাড়া সংস্পর্শের সঙ্গে সঙ্গেই সাবান এবং পরিষ্কার পানি দিয়ে সংস্পর্শে যাওয়া শরীরের স্থানটি ভালভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই সাবধানতা ত্বকের সংক্রমণের মতো গুরুতর রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস করে।
ঘরবাড়ির মেঝে জীবাণুমুক্ত করা
অতিরিক্ত বন্যায় দূষিত পানি বাড়ির আঙ্গিনা সহ ঘরের ভেতরে ঢুকে যেয়ে সর্বত্রে রোগজীবাণু ছড়াতে পারে। গ্রামের ঘরবাড়ি এবং শহরের নিচ তলার বারান্দা ও ঘরগুলো এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকে। তাই বাড়ির চারপাশ সহ ঘরের মেঝে, ফার্নিচার, দরজার হাতল এবং পানির কলগুলো জীবাণুমুক্ত করা আবশ্যক। এর জন্য এক গ্যালন পানিতে এক কাপ পরিমাণ ব্লিচ মিশিয়ে তৈরিকৃত দ্রবণ দিয়ে স্থানগুলো মুছতে হবে। পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলার আগে দ্রবণটিকে কমপক্ষে ১০ মিনিটের জন্য ভালভাবে মিশতে দিতে হবে। এ সময় হাতে ডিস্পোজেবল গ্লাভ্স পরতে হবে, আর ধোয়া-মোছার সময় জানালা খুলে দিয়ে ঘরে বায়ুচলাচল নিশ্চিত করতে হবে।
শুকনো খাবার, পানি ও চিকিৎসা সামগ্রী সংরক্ষণ
ভারী বর্ষণে এবং পরবর্তীতে বন্যার সময় দীর্ঘ সময় যাবৎ পানিবন্দি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এমন অবস্থায় তাৎক্ষণিক ভাবে খাদ্যসামগ্রী, খাবার পানি এবং ঔষধপত্র সংগ্রহের উপায় থাকে না। তাই আগে থেকেই মুখবন্ধ পানিরোধী পাত্রে জরুরি খাবার এবং খাবার পানি সংরক্ষণ করে রাখতে হবে। টিনজাত এবং শুকনো খাবারের মতো অ-পচনশীল খাবার বা যেগুলোর জন্য খুব বেশি রান্নার প্রয়োজন হয় না এমন খাবার জমিয়ে রাখতে হবে। পানীয় এবং স্যানিটেশনের প্রয়োজনে পর্যাপ্ত পানি সঞ্চয় করতে হবে। সঞ্চয়ের তালিকায় প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য দরকারি প্রতিটি ঔষধও রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: বন্যা বা ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বেই যেসব খাবার সংরক্ষণ করা জরুরি
বর্জ্য অপসারণ
নর্দমা এবং বন্যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত সামগ্রী বা ধ্বংসস্তূপের ময়লা-আবর্জনার যথাযথ নিষ্পত্তি দরকার। বর্জ্যের জন্য নির্দিষ্ট বিন ব্যবহার এবং তা সময়মতো অপসারণ করা হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া জরুরি। ধোঁয়া ছড়াতে পারে এমন পোড়া উপকরণগুলোর নিষ্পত্তির সময় যথেষ্ট সতর্ক থাকতে হবে। সিটি করপোরেশনের নিয়োজিত আবর্জনা সংগ্রহকারী কর্মীরা যথাসম্ভব দ্রুত বর্জ্য অপসারণে সক্রিয় থাকছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এই বিষয়ে এলাকার সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণ প্রয়োজন। কেননা অব্যবস্থাপনার শিকার হওয়া বর্জ্য হেপাটাইটিস ই এবং গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিসের মতো রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটায়।
বৃষ্টির পানি কাজে লাগানো
বন্যার সময় যখন পানির প্রায় সব কৃত্রিম উৎসগুলো দূষিত হয়ে যায়, তখন বৃষ্টির পানি হতে পারে সব থেকে মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ। খোলা জায়গায় মুক্ত ভাবে পড়ন্ত বৃষ্টির পানি সরাসরি একটি পরিষ্কার পাত্রে সংগ্রহ করা যায়। যেখানে এই সুযোগ নেই সেখানে পানি সংগ্রহের পর তা একটি পরিষ্কার কাপড়ের মাধ্যমে ফিল্টার করতে হবে। অতঃপর কমপক্ষে এক মিনিট সিদ্ধ করে যাবতীয় রোগজীবাণু মেরে ফেলতে হবে।
আরও পড়ুন: স্পঞ্জ সিটি: ঢাকা ও অন্যান্য শহরে বন্যা-জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান
বর্ষাকালে সুউচ্চ ঝর্ণা-পাহাড়ে হাইকিং ও ট্রেকিং: ঝুঁকির কারণ ও প্রয়োজনীয় সতর্কতা
দেশের সুউচ্চ দুর্গম পাহাড়গুলো প্রতিনিয়ত এক অমোঘ আকর্ষণে কাছে টানে দুঃসাহসিক ভ্রমণপিপাসুদের। বিশেষ করে বর্ষাকালে ঝর্ণার পানিতে স্নান করার অভিজ্ঞতা নিতে মুখিয়ে থাকে হাইকার ও ট্রেকাররা। কিন্তু এই শ্বাসরুদ্ধকর সৌন্দর্যের প্রতি পরতে পরতে লুকিয়ে থাকে মৃত্যু ফাঁদ।
চলতি বছর ২১ জুন বান্দরবানের আলীকদমের মারাইংতাং পাহাড়ে খিঁচুনির পর রহস্যজনকভাবে মারা যান মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী মো. ইফতেখারুল আহমেদ আবিদ (২০)। গত বছর ১২ আগস্ট এই একই অঞ্চলের সাইংপ্রা পাহাড় থেকে পা পিছলে পড়ে মারা যান ২৯ বছর বয়সি ট্যুর গাইড আতাহার ইসরাত রাফি।
এই মর্মান্তিক মৃত্যুগুলো একদিকে যেমন বেদনাদায়ক অন্যদিকে হাইকিং ও ট্রেকিং-এ উৎসাহী তরুণ প্রজন্মের জন্য নিরুৎসাহের কারণ। এই লক্ষ্যে দুর্ঘটনাগুলোর নেপথ্যের মূল কারণ এবং তা থেকে নিরাপদ থাকতে করণীয় নিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের নিবন্ধ। চলুন, বর্ষাকালে হাইকিং ও ট্রেকিং-এ সম্ভাব্য ঝুঁকির কারণ এবং তা থেকে সতর্ক থাকতে জরুরি পদক্ষেপ জেনে নেওয়া যাক।
বর্ষাকালে হাইকার ও ট্রেকারদের মারাত্মক দুর্ঘটনার কারণসমূহ
পিচ্ছিল ঝিরিপথ ও পাহাড় ধস
সারাদিন একটানা বৃষ্টিপাত উঁচু ঝর্ণার ধাপগুলোসহ ভেতরের পাহাড়ি ট্রেইলগুলোকে অত্যন্ত পিচ্ছিল করে রাখে। কাদা ও ভেজা শিলাগুলোতে যে কোনো মুহূর্তে পা পিছলে যেতে পারে। খুব কম হলেও পায়ের এখানে সেখানে শিলার ধারালো জায়গাগুলোতে লেগে জখম হতে পারে। এছাড়াও বৃষ্টির জমে থাকা পানি পাহাড়ি মাটির গঠনকে দুর্বল করে পাহাড়-ধস ঘটায়। এসব ভূমিধ্বস আকস্মিকভাবে চলাচলের পথ বন্ধ করে দিতে পারে। এমনকি প্রচণ্ড প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এই ধসের নিচে পড়ার মতো মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
আরো পড়ুন: বান্দরবানের বাকলাই জলপ্রপাত ভ্রমণ: বাংলাদেশের অন্যতম সুউচ্চ ঝর্ণায় যাবার উপায় ও খরচ
আকস্মিক বন্যা
অতি বৃষ্টির ফলে পাহাড়ের ভেতর দিয়ে এঁকেবেঁকে চলা নদী এবং ছোট খালগুলো ভরে ফুলে-ফেঁপে উঠতে পারে। এই আকস্মিক বন্যা ট্রেইলসহ সামনে পড়া সেতু এবং ক্যাম্পসাইটগুলোকে ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারে। ভেসে যাওয়ার সময় প্রবাহিত পানির চাপে এলোমেলোভাবে পড়ে থাকা পাথর বা ধ্বংসস্তূপের সঙ্গে সংঘর্ষের ঝুঁকি বাড়ে। এর ফলে ট্রেকারদের ভয়ানক জখম হওয়াসহ মৃত্যুর হুমকি সৃষ্টি হয়।
ভারী বর্ষণে পথ খুঁজে পেতে সমস্যা
মুষলধারে বৃষ্টিতে এমনিতেই চারপাশের দৃশ্য আবছা হয়ে যায়। সেখানে ভারী বর্ষণে সর্পিলাকার ঝিরিপথ বা খালের সংকীর্ণ ধারাগুলো একেবারে অস্পষ্ট হয়ে যায়। এর মধ্যে আবার নিরাপদ ট্রেইলের সাইনবোর্ডগুলো খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়। এমনকি স্থানীয়রাও প্রায় ক্ষেত্রে অতি বৃষ্টির সময় বিড়ম্বনায় পড়ে যান। আর এই ধোঁয়াশার মধ্য দিয়ে জোর করে পথ চলা মানেই দিকভ্রান্ত হয়ে বিপজ্জনক রাস্তায় চলে যাওয়া।
ক্ষতিকর বন্যপ্রাণী
ভারী বৃষ্টিপাতের সময় মানুষের মতো বন্যপ্রাণীরাও বন্যা থেকে বাঁচতে আশ্রয় খুঁজে। এ সময় বিষাক্ত সাপ ও পোকামাকড়ের মতো নানা ধরনের ক্ষতিকর বাস্তুচ্যুত বন্যপ্রাণী সামনে পড়তে পারে। চারপাশ পানিতে টইটম্বুর থাকার মুহূর্তে এগুলোকে শনাক্ত করাই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এসময় অতর্কিতে এগুলোর যেকোনোটির ওপর একবার পা পড়া মানেই কামড় খাওয়া। এই বিষাক্ত আক্রমণে থাকে দ্রুত সংক্রমণের ভয়। আর প্লাবিত অবস্থায় এমন সংক্রমণে মাথা ঠান্ডা রেখে তাৎক্ষণিক চিকিৎসার কথা ভাবা দুস্কর হয়ে ওঠে।
আরো পড়ুন: বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড় ভ্রমণ: বাংলার দার্জিলিং যাওয়ার উপায় ও খরচের বৃত্তান্ত
অ্যাকিউট মাউন্টেন সিক্নেস এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা
হাইট সিক্নেস, পোকামাকড় বা স্যাঁতসেঁতে পরিবেশের তীব্র অ্যালার্জির মতো স্বাস্থ্য জটিলতা থাকা ব্যক্তিদের পর্বতারোহণ এড়িয়ে চলা উত্তম। বিশেষ করে বৃষ্টির সময়ে পাহাড়ি অঞ্চলে তীব্র মাউন্টেন সিক্নেসে আক্রান্তদের মাথাব্যথা ও বমি বমি ভাব দেখা দিতে পারে। অবিলম্বে এর চিকিৎসা না করা হলে আরও গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে। বর্ষার স্যাঁতসেঁতে ও আর্দ্র অবস্থা তীব্র শ্বাসকষ্ট থাকা ব্যক্তিদের প্রাণনাশের কারণ হতে পারে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাট: ঘুরে আসুন বাংলাদেশের বৃহত্তম আমবাজার
সহায়ক আবহাওয়া ও উর্বর মাটির সুবাদে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চাষাবাদ হয় সুস্বাদু ফল আমের। বিশেষত রাজশাহী বিভাগের নামটি সবচেয়ে বেশি জড়িয়ে আছে সুমিষ্ট এই ফলটির সঙ্গে। তবে আরও স্পষ্ট করে বলতে গেলে দেশজুড়ে আমের সর্ববৃহৎ যোগান দাতা হচ্ছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ। এই জেলারই কানসাট নামের ইউনিয়নটিতে বসে বাংলাদেশের বৃহত্তম আমের বাজার। তাই আমের মৌসুমে ভ্রমণ করার জন্য এটিই সব থেকে উৎকৃষ্ট গন্তব্য। চলুন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটে ভ্রমণ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
কানসাটের নামকরণ
আগে এই অঞ্চলটির নাম ছিল কংসহট্ট। এখানকার রাজবাড়িটিকে স্থানীয়রা বলতো কুঁজো রাজার বাড়ি। ইতিহাসবিদদের মতে, এই কংসহট্ট কালের বিবর্তনে বদলে বর্তমান কানসাট নাম পেয়েছে। বর্তমানে শিবগঞ্জে আগত পর্যটকরা যে কানসাট রাজবাড়িটি পরিদর্শনে যান, এটি মূলত সেই কুঁজো রাজার বাড়ি।
কানসাটের বিশেষত্ব
দেশের সর্ববৃহৎ আমের বাজারটি বসে এই কানসাটে। শুধু বাংলাদেশের বৃহত্তম বাজারই নয়, কানসাট গোটা এশিয়া মহাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম আম বাজার। ছোট-বড়-মাঝারি সব মিলিয়ে এখানে প্রায় আড়াইশ’ আড়তে দিনভর চলে আমের বিকিকিনি। চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের আড়তদাররা আম কিনতে এখানে চলে আসেন। প্রতিদিন ভোর থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত জমজমাট থাকে এই হাট। রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের অন্যত্র অনেকগুলো আমের হাট থাকলেও পাইকারি বাজারের জন্য কানসাটই সবচেয়ে বড় ও প্রসিদ্ধ।
আরও পড়ুন: সোনাদিয়া দ্বীপ ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
আমের ভরা মৌসুমে প্রতিদিন একশ’রও বেশি ট্রাক এখান থেকে আমভর্তি হয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের উদ্দেশে রওনা হয়। শুধু এই কানসাটেই প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪ কোটি টাকার আম বেচা-কেনা হয়।
আরও একটি কারণে কানসাটের খ্যাতি রয়েছে, আর সেটি হচ্ছে মিষ্টি। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের মালদহে একটি নামকড়া মিষ্টি রয়েছে এই স্থানের নামে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের মতো মালদহও আমের জন্য বিখ্যাত। আর আমের পরেই জেলার ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত খাবার হচ্ছে কানসাট মিষ্টি।
ঐতিহ্যবাহী এই মিষ্টির কারিগর হচ্ছেন মহেন্দ্রনাথ সাহা, যিনি মূলত বাংলাদেশের শিবগঞ্জ জেলার কানসাটের এলাকার মানুষ। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর পূর্ববঙ্গ (বর্তমান বাংলাদেশ) থেকে শত শত মিষ্টি কারিগর পাড়ি জমিয়েছিলেন মালদহের উদ্দেশে। সে সময় অন্যান্যদের মতো মহেন্দ্রনাথের ছেলে বিজয় কুমার সাহাও মালদহে চলে যান। এরপর বাবার শেখানো রন্ধন কৌশল কাজে লাগিয়ে সেখানে তিনি কানসাট বানানো শুরু করেন।
আরও পড়ুন: বান্দরবানের বাকলাই জলপ্রপাত ভ্রমণ: বাংলাদেশের অন্যতম সুউচ্চ ঝর্ণায় যাবার উপায় ও খরচ
সারা পশ্চিমবঙ্গজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে কানসাটের মিষ্টি স্বাদ। বর্তমানে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত এই ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বিজয় কুমারের ২ ছেলে জয়দেব সাহা ও বিশ্বজিৎ সাহা। ভারতের অন্যত্র এই মিষ্টি বানানো হলেও এদের কানসাটের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি।
দৃকে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ প্রেস ফটো প্রদর্শনী ২০২৪
বাংলাদেশের সম্মুখ সারিতে কর্মরত আলোকচিত্র সাংবাদিকদের অর্জনকে উদযাপন এবং সম্মান জানাতে দৃক পিকচার লাইব্রেরি কর্তৃক আয়োজিত বাংলাদেশ প্রেস ফটো প্রদর্শনী ২০২৪ এর উদ্বোধন করা হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকাস্থ দৃক গ্যালারিতে প্রদর্শনীটির উদ্বোধন করা হয়।
এবারের প্রদর্শনীতে ২০২২ সাল থেকে দৃকের ধারাবাহিক আয়োজন বাংলাদেশ প্রেস ফটো কনটেস্টের (বিপিপিসি) ৩য় সংস্করণে নির্বাচিত ৩০টি আলোকচিত্র স্থান পেয়েছে।
এ বছর ১৬ এপ্রিল ছবি আহ্বানের মধ্যে দিয়ে প্রতিযোগিতাটি উন্মুক্ত করা হয়। এতে আলোকচিত্র সাংবাদিকরা ২০২৩ সালে তোলা রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক প্রায় ১ হাজারের বেশি ছবি জমা দেন।
আজকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিপিপিসি ২০২৪ এর অন্যতম বিচারক এবং দৃক পিকচার লাইব্রেরির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলম। তিনি বলেন, ‘দুনিয়ার কোনো প্রেস ফটো প্রতিযোগিতায় আমার জানামতে গণমুখী সাংবাদিকতার ক্যাটাগরি নেই। মিডিয়ার মালিকানাসহ নানা কারণে তারকা বা প্রধানমন্ত্রীর ছবিসহ দলীয় প্রচারেই মিডিয়ার কাজ সীমাবদ্ধ থাকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকের প্রদর্শিত ছবিগুলোর আলোকচিত্রীরা নিজেদের দায়বদ্ধতা থেকেই এই কাজগুলো করেছে। তাদের কাজের মাধ্যমে নিজেদের প্রমাণ করে বাংলাদেশের আলোকচিত্র আজ অনেক দূর পৌঁছে গিয়েছে।’
প্রতিযোগিতার অন্য বিচারক ছিলেন- অমল আকাশ, শিল্পী, গায়ক, আন্দোলনকর্মী, সমগীত; মনিরুল আলম, আলোকচিত্র সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, ইপিএ; শোয়েব ফারুকী, আলোকচিত্রী, শিক্ষাবিদ, ফটোব্যাংক গ্যালারি এবং তাসমিমা হোসেন, সম্পাদক, দৈনিক ইত্তেফাক।
আরও পড়ুন: ‘রেজ অ্যান্ড হোপ’: দৃকে মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রের ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপিত
এবারে বর্ষসেরা আলোকচিত্র ২০২৩ বিজয়ী হয়েছেন ফোকাস বাংলার কুদ্দুস আলম এবং তিনি পুরস্কার পেয়েছেন ১ লাখ টাকা।
একই সঙ্গে ৩টি বিভাগে পুরস্কার জিতেছেন আরও ৬ আলোকচিত্রী। বিভাগ বিজয়ীরা হচ্ছেন-
শিল্প, সংস্কৃতি এবং ক্রীড়া: কাজী গোলাম কুদ্দুস হেলাল, এফআইএপি এবং বিশেষ সম্মাননা পুরস্কার পেয়েছেন পিয়াস বিশ্বাস, নিউজবাংলা২৪.কম।
রাজনীতি: নায়েম আলী, দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এবং বিশেষ সম্মাননা পুরস্কার পেয়েছেন মো. সাজিদ হোসাইন, দৈনিক প্রথম আলো।
জনমুখী সাংবাদিকতা: আবদুল গনি, দৈনিক ইত্তেফাক এবং বিশেষ সম্মাননা পুরস্কার পেয়েছেন সৈয়দ মাহমুদুর রহমান, দৈনিক বাংলা।
প্রতিটি বিভাগ থেকে একজন বিজয়ী ও একজন বিশেষ সম্মাননা পুরস্কার বিজয়ী পেয়েছেন যথাক্রমে ৫০ হাজার টাকা ও ১০ হাজার টাকা। পাশাপাশি তারা প্রত্যেকে পেয়েছেন সম্মাননা স্মারক ও সনদ।
দৃক ২০২৩ সাল থেকে আলোকচিত্র সাংবাদিকতায় প্রান্তিক গোষ্ঠীর অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করার জন্য 'আদিবাসী জনগোষ্ঠী গ্র্যান্ট' প্রবর্তন করেছে। এ বছর এই গ্র্যান্টটি জিতেছেন আদিবাসী আলোকচিত্রী ডেনিম চাকমা, যার মূল্যমান ৫০ হাজার টাকা।
এবারের প্রদর্শনীতে ২০২৩ সালের প্রথম অনুদান বিজয়ী পদ্মিনী চাকমার কিছু বাছাইকৃত ছবি প্রদর্শিত হচ্ছে।
প্রদর্শনীটি ২৬ জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
আরও পড়ুন: ‘রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি’ নিয়ে দৃক গ্যালারিতে চলছে প্রদর্শনী
স্মরণশক্তি বাড়ানোর জন্য যেসব খাবার উপকারী
একাডেমিক পড়াশোনা, গবেষণাধর্মী কাজ ও কর্মজীবনের উন্নতির জন্য সৃজনশীলতার পাশাপাশি আরও একটি প্রয়োজনীয় বিষয় হচ্ছে স্মরণশক্তি। প্রতিটি মানুষেরই স্বাভাবিক বিকাশের পরিচয় বহন করে এই শক্তি। শুধু তাই নয়, নিত্য-নৈমিত্তিক জীবনে এর তুলনামূলক উপস্থিতির ভিত্তিতে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে বিশেষত্ব সৃষ্টি হয়। চর্চা বা সাধনার পাশাপাশি এই স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে কিছু পুষ্টিকর খাবার। সময়মতো সুফল পেতে এই খাবারগুলোতে শৈশব থেকেই অভ্যস্ত হওয়া জরুরি। চলুন, স্মৃতিশক্তি ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সেরা খাবারগুলোর তালিকা দেখে নেওয়া যাক।
স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতে উপকারী ১০টি খাবার
হলুদ
যে কোনো রান্নায় বহুল ব্যবহৃত এই উপকরণে রয়েছে পুষ্টি উপাদান কারকিউমিন। এটি মূলত এক ধরনের যৌগ, যার মধ্যে আছে উৎকৃষ্ট প্রদাহ-বিরোধী ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য। কারকিউমিন মস্তিষ্ক থেকে প্রাপ্ত নিউরোট্রফিক ফ্যাক্টর বাড়ায়, যা মস্তিষ্কের কোষের বৃদ্ধি ও রক্ষণাবেক্ষণে কাজে লাগে। এর ফলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা উন্নত হয় ও স্মৃতিশক্তি হারানোর ঝুঁকি হ্রাস করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, কারকিউমিন মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালনে যাবতীয় বাধা অতিক্রম করে মস্তিষ্কের টিস্যুগুলোকে সতেজ রাখে। এভাবে তরকারিতে নিয়মিত হলুদ ব্যবহারের মাধ্যমে দীর্ঘ মেয়াদে স্মৃতি ধারণ ক্ষমতা বাড়ানো যেতে পারে। এটি আলঝেইমারের মতো নিউরোডিজেনারেটিভ (স্মৃতিশক্তির পর্যায়ক্রমিক অবনতি) রোগ থেকে রক্ষা করতে পারে।
আরও পড়ুন: নিরাপদে স্ট্রিট ফুড খাওয়ার ১০টি উপায়
চর্বিযুক্ত মাছ
মলা, ঢ্যালা, আইলা, টুনা, সরপুটির মতো সামুদ্রিক মাছগুলো যথেষ্ট পরিমাণে ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। এই অপরিহার্য চর্বিগুলো মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে এবং জ্ঞানীয় কার্যকারিতা উন্নত করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওমেগা -৩ স্মৃতিশক্তি বাড়ায়, প্রদাহ কমায় ও মস্তিষ্কের কোষগুলোর পারস্পরিক যোগাযোগ বজায় রাখে।
এই পুষ্টি উপাদান কোষগুলোর কাঠামোগত অখণ্ডতায়ও অবদান রাখে। নিয়মিত চর্বিযুক্ত মাছ খাওয়া মস্তিষ্ক জনিত যাবতীয় সমস্যা রোধ করে সামগ্রিক মানসিক বিকাশে সহায়তা করে। এটি মস্তিষ্কের জন্য পুষ্টিকর খাদ্য-উপাদানের একটি বৃহৎ অংশের যোগান দেয়। সপ্তাহে অন্তত ২ বার ভারী খাবারে চর্বিযুক্ত মাছ রাখা উচিৎ।
পালং শাক
ঘন পাতাযুক্ত এই সবুজ শাক ভিটামিন কে, ই, ও ফোলেট সমৃদ্ধ। ভিটামিন কে স্ফিংগোলিপিড গঠনে সহায়তা করে, যেটি মূলত মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে কোষ গঠন ও কোষের সঠিক কার্যক্ষমতার জন্য অপরিহার্য। ভিটামিন-ই একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে কোষগুলোকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে।
আরো পড়ুন: রেস্তোরাঁ-শপিং মলে প্রবেশের আগে যে বিষয়গুলোতে সাবধান থাকা জরুরি
আর ফোলেট জ্ঞানীয় কার্যক্রমগুলোতে সাহায্য করে, যার কারণে বয়সের সঙ্গে মস্তিষ্কের সাধারণ অবনতির ঝুঁকি কমে। নিয়মিত পালং শাক খাওয়া মস্তিষ্কের শক্তি বাড়ায় এবং নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের বিরুদ্ধে মস্তিষ্ককে রীতিমতো দুর্গ বানিয়ে তোলে। প্রতিদিনের ডায়েটে অন্তত এক বেলা পালং শাক রাখা হলে দীর্ঘ মেয়াদে কাঙ্ক্ষিত জ্ঞানীয় সুবিধা পাওয়া যেতে পারে।
বাদাম
আখরোট, কাজু বাদাম, এমনকি চিনাবাদাম শুধু মস্তিষ্কের জন্যই নয়; সমস্ত দেহের জন্য বেশ উপকারী। এই বাদামগুলো ভিটামিন ই, স্বাস্থ্যকর চর্বি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মতো মস্তিষ্ক-সহায়ক উপাদানে ভরপুর। ভিটামিন-ই মস্তিষ্কের কোষের অম্লতা-জনিত ক্ষতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।
অন্যদিকে স্বাস্থ্যকর চর্বি মস্তিষ্কের ভেতরে কোষের গঠনে অংশ নেয় এবং জ্ঞানীয় কার্যকারিতায় সাহায্য করে। বাদামে ম্যাগনেসিয়াম ও জিঙ্কের মতো প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান রয়েছে, যা জ্ঞানীয় স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সরাসরি অংশ নেয়। বাদাম স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর জন্য প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় একটি দারুণ সংযোজন হতে পারে। স্ন্যাক্স হিসেবে বিভিন্ন ধরনের বাদাম নিত্যদিনের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে যথেষ্ট। বিভিন্ন মিষ্টি জাতীয় খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে এগুলোকে আরও মুখরোচক করে তোলা যায়।
আরও পড়ুন: মিয়াজাকি বা সূর্যডিম আম কেন এত দামি
গাজর
বিটা-ক্যারোটিনের এই চমৎকার উৎসটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়। বিটা-ক্যারোটিন মস্তিষ্কের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস প্রতিরোধে অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। এই স্ট্রেসের কারণে জ্ঞানীয় কার্যক্রমগুলোর ধীরে ধীরে অবনতি হয়। বিটা-ক্যারোটিন সমৃদ্ধ খাবার স্মৃতিশক্তি এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সঙ্গে মস্তিষ্কের যোগাযোগ সমুন্নত রাখে।
গাজরে থাকা ভিটামিন সি ফ্রি-র্যাডিক্যালের কারণে সৃষ্ট ক্ষতি প্রতিরোধ করে মস্তিষ্ককে সুরক্ষিত রাখে। বার্ধক্য-জনিত স্মৃতিশক্তি হ্রাস থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত গাজর খাওয়া যেতে পারে। সালাদ, জুস, এমনকি রান্না করা খাবারের মাধ্যমেও গাজর অন্তর্ভুক্ত করা যায় প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায়।
মুরগির ডিম
এই বহুমুখী ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবারটি কোলিন ও ভিটামিন বি-১২ সহ একটি সুস্থ মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। কোলিন হলো অ্যাসিটাইলকোলিনের প্রধান উপাদান, যেটি স্মৃতি ধরে রাখা ও কোনো কিছু শিখতে সাহায্য করে। যে কোনো বয়সেই জ্ঞানীয় কার্যকারিতা অক্ষুন্ন রাখতে ও স্মৃতিশক্তি হ্রাস রোধ করার জন্য পর্যাপ্ত কোলিন গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।
আরো পড়ুন: গরুর দুধের বিকল্প হিসেবে খেতে পারেন যেসব স্বাস্থ্যসম্মত খাবার
ভিটামিন বি-১২ স্নায়বিক অংশগুলোর অখণ্ডতা বজায় রেখে মস্তিষ্ককে অটুট রাখে। এটি স্নায়ু তন্তুর সুরক্ষা এবং কোষগুলোর মাঝে পারস্পরিক যোগাযোগ নিশ্চিত করে। মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিকাশের জন্য প্রতিদিন মুরগির ডিম খাওয়া আবশ্যক। শুধু সকালের নাস্তাতেই নয়, অন্যান্য তরকারির সঙ্গে ডিমের অতিরিক্ত সংযোজন খাবারটিকে বেশ উপাদেয় করে তোলে। এছাড়া শুধু সিদ্ধ ডিমও প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগান দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
কুমড়োর বীজ
পুষ্টির পাশাপাশি সুস্বাদু সবজিগুলোর মধ্যে চালকুমড়ো অন্যতম। এর বীজে আছে ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ম্যাগনেসিয়াম মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপে অংশ নিয়ে কোনো কিছু শেখা এবং স্মৃতি ধারণ প্রক্রিয়া চালু রাখে। এটি নিউরোট্রান্সমিটার সিগন্যালিং নিয়ন্ত্রণ তথা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মধ্যকার পারস্পরিক যোগাযোগ স্থাপন করতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে। জিঙ্ক নিউরোপ্রোটেকশনে অবদান রাখে, যা যে কোনো পরিস্থিতিতে মস্তিষ্কের প্রক্রিয়া চালু রাখার জন্য জরুরি।
কুমড়োর বীজের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মস্তিষ্কের কোষগুলোকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে দূরে রাখে। তাই স্মৃতিভ্রষ্ট থেকে বাঁচতে হলে নিয়মিত এই বীজ খাওয়া আবশ্যক। অন্যান্য খাবারের সঙ্গে জুড়ে নিমেষেই এটি উপাদেয় মিশ্রণ তৈরি করতে পারে।
আরও পড়ুন: ওমেগা-৩ ডিম কি আসলেই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি?
মসুর ডাল
ফোলেট, আয়রন ও ফাইবারে ভরপুর এই সহজলভ্য খাবারটি মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যক্রমের জন্য অপরিহার্য। সেরোটোনিন, ডোপামিন ও নোরপাইনফ্রিনের মতো নিউরোট্রান্সমিটার সংশ্লেষণের কাজ করে ফোলেট। এর মাধ্যমে মেজাজ, স্মৃতিশক্তি ও যাবতীয় জ্ঞানীয় প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণাধীন থাকে।
পর্যাপ্ত ফোলেট গ্রহণ স্মৃতিভ্রষ্ট সম্পর্কিত নানা ধরণের রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে। অন্যদিকে আয়রনের কাজ হলো মস্তিষ্কে অক্সিজেন পরিবহন করে জ্ঞানীয় প্রক্রিয়া চালু রাখা।
মস্তিষ্কের সঠিক কার্যাবলির জন্য মস্তিষ্কের পাশাপাশি দেহের অন্যান্য অংশও ঠিক থাকা জরুরি। বিশেষ করে অন্ত্র সুস্থ থাকলে মস্তিষ্ক তার প্রয়োজনীয় রসদ থেকে বঞ্চিত হয় না। আর এই বিষয়টি নিশ্চিত করে ফাইবার।
আরও পড়ুন: তীব্র গরমে পানিশূন্যতা প্রতিরোধে উপকারী শাকসবজি
ফুলকপি
ভিটামিন কে ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের একটি উৎকৃষ্ট উৎস হচ্ছে ফুলকপি। ভিটামিন কে-এর কাজ মস্তিষ্কের কোষ গঠনে দরকারি উপাদান সরবরাহ করা। সালফোরাফেনের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মস্তিষ্ককে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস ও প্রদাহ থেকে রক্ষা করে। ফুলকপিতে থাকা যৌগগুলো জ্ঞানীয় কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি ও স্মরণশক্তি উন্নয়নে সহায়ক। বার্ধক্যে স্মরণশক্তির অবনতি থেকে বাঁচতে কম বয়স থেকেই ফুলকপির খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা আবশ্যক। রান্না ছাড়াও সালাদে বা সাইড ডিশ হিসেবে ফুলকপি একটি উযুক্ত খাবার।
কমলা
নানা ধরনের সতেজ ফলের মধ্যে স্মরণশক্তির জন্য সহায়ক ফল হলো কমলা। বাদাম ও গাজরের মতো এটিও মস্তিষ্ককে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করতে পারে, কেননা এতে আছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ভিটামিন সি সেরোটোনিনের মতো নিউরোট্রান্সমিটারের উৎপাদনে সহায়তা করে, যা সঠিক মানসিক অবস্থার জন্য দরকার।
এছাড়া কোলাজেন সংশ্লেষণেও এটি একটি আবশ্যিক উপাদান, কারণ এর মাধ্যমে মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে কোষ ও রক্তনালীগুলোর গঠন বজায় থাকে। প্রতিদিন অন্তত একটি পুরো কমলা খাওয়া দীর্ঘমেয়াদে জ্ঞানীয় কর্মক্ষমতাকে উন্নত রাখার সহায়ক হতে পারে।
আরো পড়ুন: শহরে রান্নার জন্য গ্যাসের চুলার সেরা কয়েকটি বিকল্প
তাছাড়া বয়সের সঙ্গে জ্ঞানীয় অবনতির ঝুঁকি কমাতেও এই অনুশীলন আবশ্যক। সরাসরি ফল হিসেবে খাওয়ার পাশাপাশি কমলার তাজা জুস একটি জনপ্রিয় কোমল পানীয়।
পরিশিষ্ট
এই ১০টি পুষ্টিকর খাবার সর্বাঙ্গীনভাবে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি ও মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে পারে। হলুদের প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য থেকে শুরু করে কমলার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পর্যন্ত প্রতিটি খাবারেই রয়েছে অনন্য পুষ্টিগুণ। পুরো সপ্তাহের খাদ্যাভাসে এই খাবারগুলোকে যুক্ত করার মাধ্যমে মস্তিষ্ককে যে কোনো কাজের জন্য প্রস্তুত করা যেতে পারে। সেই সঙ্গে উত্তরোত্তর অনুশীলনও চালিয়ে যেতে হবে যুগপৎভাবে। এরই দৌলতে ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে কর্মজীবন পর্যন্ত যে কোনো প্রতিযোগিতায় কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জন করা সম্ভব।
আরও পড়ুন: চিনির কিছু স্বাস্থ্যকর প্রাকৃতিক বিকল্প
ট্রেকিং, হাইকিং, ক্যাম্পিং ও ভ্রমণের সময় সাপের কামড় থেকে নিরাপদে থাকার উপায়
ভ্রমণে ট্রেকিং, হাইকিং ও ক্যাম্পিংয়ের মতো রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নেওয়ার ক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয়গুলো নিশ্চিত করা জরুরি। পাহাড়ের খাঁদ, ঝিরিপথ ও জঙ্গল ঘেরা আদিবাসীদের গ্রামগুলো বিচরণের সময় সবচেয়ে বেশি যে ঝুঁকি থাকে তা হচ্ছে বিষাক্ত সাপের উৎপাত। বিশেষ করে পাহাড়ি সাপের দংশনে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া না হলে তা গুরুতর স্বাস্থ্য জটিলতার কারণ হতে পারে। ভ্রমণের আনন্দকে শতভাগ আরামদায়ক ও নির্ঝঞ্ঝাট করতে হলে সর্বাত্মকভাবে এই ধরনের ঝুঁকি এড়িয়ে চলা আবশ্যক। তাই চলুন, ভ্রমণের সময় সাপের কামড় থেকে দূরে থাকার উপায়গুলো জেনে নেই।
ভ্রমণের সময় সাপের কামড় থেকে দূরে থাকতে করণীয়
গন্তব্যে সাপের আনাগোনা সম্বন্ধে জেনে নেওয়া
প্রতিটি সফল ভ্রমণের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে তার সুষ্ঠ পরিকল্পনা। গন্তব্য ঠিক করার মুহূর্তে ভ্রমণের যানবাহন, সেখানকার আবাসন, খাওয়া-দাওয়া যাবতীয় বিষয়ে বিশদ ধারণা নেওয়া হয়। এগুলোর সঙ্গে সাপ থেকে নিরাপত্তার দিকটাও অন্তর্ভূক্ত করা উচিৎ। যে অঞ্চলে যাওয়া হচ্ছে সেখানকার স্থানীয় সাপের প্রজাতির ব্যাপারে সম্যক ধারণা থাকা প্রয়োজন। যেমন রাসেলস ভাইপার ও মনোক্লেড কোবরা সাধারণত গ্রামীণ অঞ্চলে বেশি থাকে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের মতো পাহাড়ি অঞ্চলে দেখা যায় সবুজ পিট ভাইপারের মতো প্রজাতি। এই সাপগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাতে সক্রিয় থাকে এবং ধানের খেত বা জলাবদ্ধ এলাকায় বসবাস করে। এ ধরনের তথ্য পাওয়া যাবে বাংলাদেশ বন বিভাগ, স্থানীয় বন্যপ্রাণী সংস্থাসহ বিভিন্ন জাতীয় পত্র-পত্রিকার ওয়েবসাইটগুলোতে।
আরও পড়ুন: বিষধর সাপ রাসেলস ভাইপার চেনার উপায় ও প্রয়োজনীয় সতর্কতা
সাপ প্রতিরোধী পরিধেয়
লম্বা প্যান্ট, মোটা মোজা ও উঁচু বুটের মতো পরিধেয়গুলো সাপের কামড়ের ঝুঁকি কমাতে পারে। দুর্গম অঞ্চল পেরিয়ে ঝর্ণা দেখার সময় বা ম্যানগ্রোভ বন ভ্রমণকালে সুরক্ষামূলক গিয়ার পরিধান করা অপরিহার্য। এছাড়া এখন স্নেক গেটারের মতো নানা ধরনের অত্যাধুনিক সেফটি গিয়ার পাওয়া যায়, যা বিভিন্ন বিষাক্ত কীট-পতঙ্গ ও সাপের আক্রমণের বিরুদ্ধে মজবুত ঢালের কাজ করে।
পাশাপাশি পরনে হালকা রঙের পোশাক থাকলে তা সাপ এড়িয়ে যাওয়ার জন্য সহায়ক হতে পারে। কেননা বৈশিষ্ট্যগতভাবে সাপ উজ্জল রঙিন বস্তুর প্রতি আকৃষ্ট হয়। বাংলাদেশে ট্রেকিং, ক্যাম্পিং ও হাইকিং জনপ্রিয় হয়ে ওঠায় বর্তমানে বিভাগীয় শহরগুলোতে অনেক ট্রাভেল শপ আছে। এই খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে ট্রাভেল সরঞ্জামের পাশাপাশি বেশ কিছু স্নেক-সেফটি গিয়ারও পাওয়া যায়।
প্রাথমিক চিকিৎসা প্রস্তুতি
সাপের কামড় থেকে বাঁচার জন্য প্রাথমিক চিকিৎসার জ্ঞান থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কীভাবে কামড়ের লক্ষণগুলো শনাক্ত করতে হয় এবং অবিলম্বে তাৎক্ষণিক চিকিৎসার জন্য করণীয়গুলো জানা থাকা জরুরি। দংশনের পর শরীরজুড়ে বিষের বিস্তার কমানোর চেষ্টা করতে হবে এবং আক্রান্ত অঙ্গটিকে যথাসম্ভব স্থির রাখতে হবে। ব্যান্ডেজ, অ্যান্টিসেপটিক এবং সম্ভব হলে সাকশন ডিভাইস ধারণকারী স্নেক বাইট কিট সঙ্গে রাখা উত্তম। রাঙ্গামাটি বা খাগড়াছড়ির পার্বত্য অঞ্চলের মতো এলাকায় পেশাদার চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছতে কয়েক ঘণ্টা লেগে যায়। এ অবস্থায় তাৎক্ষণিক উপযুক্ত প্রাথমিক চিকিৎসা যথেষ্ট সাহায্যে আসতে পারে।
নিরাপদ ট্রেইল অনুসরণ করা
জনপ্রিয় পর্যটন এলাকাগুলোতে যেখানে অধিক লোক সমাগম হয় সেখানে ভ্রমণের সুবিধার্তে ঝুঁকিমুক্ত পথের নির্দেশনা দেওয়া থাকে। এই পথগুলো সাধারণত নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। এরকম নির্দেশনা উল্লেখ করা সাইনবোর্ডগুলো একই সঙ্গে নিরাপদ ও সহজ ভ্রমণের নিশ্চয়তা দান করে। কোথাও হয়ত ঝোপঝাড় এতটা ঘন হয়ে গেছে যে তা বিচরণের অযোগ্য।
কোথাও বা খাড়া পিচ্ছিল ঢাল কিংবা স্বাভাবিক রাস্তা হলেও পথের প্রান্তে হয়ত রাস্তা শেষ বা অন্য কোনো রাস্তার সঙ্গে যোগসাজশ নেই। এ ধরনের রাস্তাগুলোতে প্রায়ই সাবধানতামূলক সাইনবোর্ড দেওয়া থাকে। অতিরিক্ত রোমাঞ্চের আশায় এগুলো উপেক্ষা করা মানেই ভয়াবহ বিপদের মুখে পড়ার সম্ভাবনা বাড়ানো। এই উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে সাপগুলো অধিক সক্রিয় থাকে এবং এদেরকে শনাক্ত করাও বেশ কঠিন হতে পারে।
আরও পড়ুন: রাসেলস ভাইপার সাপ নিয়ে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা
মিয়াজাকি বা সূর্যডিম আম কেন এত দামি
একটির দাম প্রায় ৩০ হাজার টাকা। আর প্রতি কেজির প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা। আন্তর্জাতিক বাজারে এমনি অদ্ভূত দাম মিয়াজাকি বা সূর্যডিম আমের। বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশসহ ভারতীয় উপমহাদেশে ব্যাপক হারে চাষ হয়েছে বিশ্বের সব থেকে দামি এই আমের। আমের অন্যান্য জাত থেকে ব্যতিক্রমী ফলন হওয়ায় ফলচাষীসহ ফলপ্রেমীদের মাঝে দারুণ সাড়া ফেলেছে বিদেশি আমটি। বিশেষ পরিবেশে বেড়ে ওঠা এই আম রঙ, স্বাদ ও আকারে অন্য সব আম থেকে একদমি আলাদা। মিয়াজাকি বা সূর্যডিম আমের এমন অদ্ভূত নাম হলো কীভাবে, আর আকাশচুম্বি দামের পেছনে আসল কারণটাই বা কী, চলুন জেনে নেওয়া যাক।
আমের নাম মিয়াজাকি বা সূর্যডিম কেন
উৎপত্তিস্থল জাপানের কিউশু রাজ্যের মিয়াজাকি নামক শহরে হওয়ায় শহরের নামটি যুক্ত হয়ে গেছে আমের নামের সঙ্গে। তবে জাপানি ভাষায় আমগুলো পরিচিত ‘তাইয়ো-নো-তামাগো’ নামে, যার বাংলা অর্থ ‘সূর্যের ডিম’। তাই বাংলা ভাষাভাষি অঞ্চলে ‘সূর্যডিম’ নামেই আমটি অধিক পরিচিতি পেয়েছে।
অবশ্য আমের রঙ অনেকটা গাঢ় লাল হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে ‘রেড ম্যাংগো’ বা ‘লাল আম’ নামটিই অধিক প্রসিদ্ধ।
জাপানে মিয়াজাকি আমের প্রথম চাষের সময়কাল ১৮৬৮ থেকে ১৯১২ সাল হলেও ফলটি সবচেয়ে বেশি পরিচিতি পায় ১৯৭০ দশক থেকে।
আরও পড়ুন: নিরাপদে স্ট্রিট ফুড খাওয়ার ১০টি উপায়
মিয়াজাকি আম দেখতে কেমন
তাইয়ো নো তামাগো আম দেখতে অনেকটাই মুরগির ডিমের মতো। আমগুলোর ওজন সর্বোচ্চ ৩৫০ গ্রাম এবং এতে চিনির পরিমাণ ১৫ শতাংশ বা তার বেশি। আকারে এটি সাধারণ আমের চেয়ে বেশ বড় ও লম্বা এবং গন্ধ ও স্বাদে মিষ্টতাও বেশি। রঙ গাঢ় লাল বা লাল ও বেগুনীর সংমিশ্রণ।
ওপরের খোসার নিচে ভেতরের সুস্বাদু খাওয়ার অংশটি একেবারেই আঁশমুক্ত এবং উজ্জ্বল হলুদ সুগন্ধযুক্ত।
উত্তর আমেরিকার ডোল ব্র্যান্ডের আমের সঙ্গে এর কিছুটা মিল আছে। তবে মূল্যের দিক থেকে তাইয়ো নো তামাগো অনেকটাই এগিয়ে।
আরও পড়ুন: নিরাপদ ব্রয়লার মুরগি কী, কেন খাবেন
মিয়াজাকি আমের দাম এত বেশি কেন
২০১৬ সালে জাপানের ফুকুওকায় নিলামে এক জোড়া মিয়াজাকি আমের মূল্য উঠেছিল ৫ লাখ জাপানি ইয়েন। মূল্যটি সে সময়ের বাজার রেট অনুযায়ী ৪ হাজার ৫৪৭ মার্কিন ডলারের সমতূল্য ছিল। ইন্টারনেটের সুবাদে এই খবরটি ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই মূলত সবার নজর কাড়ে জাপানি আমটি।
তাইয়ো নো তামাগোর সর্বোচ্চ ফলন হয় এপ্রিল থেকে আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে। গাছ থেকে সংগ্রহের পর সেরা আমগুলোর সরাসরি চলে যায় নিলামে। প্রতি বছর এপ্রিল মাসে মিয়াজাকি শহরের পাইকারি বাজারে শুরু হয় এই নিলাম। স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে আমের রঙ, মিষ্টতা, স্বাদ, ও আকার-আকৃতির বিচারে নির্ধারিত হয় সেরা মানের আম।
নিলামে দেশের বড় বড় ফল ডিস্ট্রিবিউটররা সেগুলোর জন্য বিড করে। গড়পড়তায় নিলামের মূল্য থাকে আম প্রতি ৫০ মার্কিন ডলার বা ৫ হাজার ৮৬৩ টাকা (১ মার্কিন ডলার = ১১৭ দশমিক ২৫ বাংলাদেশি টাকা)। তবে কখনও কখনও এই মূল্য অনেক বেড়ে যায়। এখন পর্যন্ত একটি আমের সর্বোচ্চ দাম উঠেছে ২ হাজার মার্কিন ডলার (২ লাখ ৩৪ হাজার ৫০৩ টাকা)।
২০১৯ সালে জাপানে এক জোড়া তাইয়ো নো তামাগোর দাম উঠেছিল প্রায় ৫ হাজার মার্কিন ডলার, যা সে সময়ের বাজার রেট অনুসারে প্রায় ৪ লাখ টাকারও বেশি। ২০২৩ সালে ভারতে এই আমের কেজি বিক্রি হয়েছে আড়াই লাখ রুপিতে।
এমন চোখ কপালে তোলা দামের নেপথ্যে রয়েছে আমটির সুনির্দিষ্ট চাষাবাদ পদ্ধতি এবং দুষ্প্রাপ্যতা। সঠিক পরিবেশের মাঝে সুক্ষ্ম পরিচর্যার মাধ্যমে যে উন্নত মানের আমের উৎপাদন হয় তা পৃথিবীর আর কোথাও পাওয়া যায় না। এছাড়া পরিপক্কতা লাভের পর যে গভীর লাল বর্ণটি আসে তা আমের অন্যান্য জাতের মধ্যে বেশ দুর্লভ।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই আমগুলোর কেনাবেচা শুধুমাত্র সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং বিভিন্ন কর্পোরেট উপহার এবং বিশেষ উদযাপনের দিনগুলোতে উপহার হিসেবে বিক্রি হয় এই আম। এমনকি হাত বদলের আগে এগুলোকে যত্ন সহকারে সুক্ষ্ম কারুকাজ মেশানো বাক্স বা মোড়কে ভরা হয়।
আরও পড়ুন: ওমেগা-৩ ডিম কি আসলেই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি?
পশু কুরবানির পর ঘর ও আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখবেন যেভাবে
পবিত্র ঈদুল আজহায় বিপুলসংখ্যক পশু কুরবানি হয় দেশজুড়ে। স্বভাবতই এখানে গুরুত্ববহ হয়ে ওঠে কুরবানি-পরবর্তী শহর পরিষ্কারের বিষয়টি। পশু জবাইয়ের পর সঠিকভাবে তার বর্জ্য নিষ্কাশন না হওয়ার দরুণ শহরবাসীকেই পোহাতে হয় হাজারও ভোগান্তি। বিগত বছরগুলোতে মশাবাহিত রোগের উপদ্রব বাড়াতে পরিবেশজনিত এই জটিলতা আশঙ্কাজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়া ধর্মীয় দিক থেকেও পরিবেশ আবর্জনামুক্ত রাখা প্রত্যেক কুরবানি পালনকারীর ঈমানি দায়িত্ব। তাই চলুন, পশু কুরবানির পর বাসা ও তার চারপাশ বর্জ্যমুক্ত রাখার কয়েকটি উপায় জেনে নেওয়া যাক।
ঈদুল আজহায় পশু কুরবানির পর বর্জ্য অপসারণের ১০টি উপায়
একটি উপযুক্ত স্থান নির্বাচন
শহর বা গ্রাম নির্বিশেষে একটি নির্দিষ্ট এলাকার লোকজন আলাদাভাবে কুরবানি না দিয়ে কয়েকজন একসঙ্গে হয়ে একটি নির্দিষ্ট স্থানে কুরবানি করা উত্তম। মূলত বসতবাড়ি থেকে যথাসম্ভব দূরে এমন একটি স্থান নির্বাচন করা উচিৎ, যেখান থেকে সহজেই পশুর বর্জ্য নিষ্কাশন করা যায়। এতে করে সিটি করপোরেশন কর্মীরা দ্রুত সময়ে বর্জ্য অপসারণের কাজ করতে পারবে।
এ সময় খেয়াল রাখা উচিৎ, স্থানটি যেন চলাচলের রাস্তার উপরে না হয়। সাধারণত খোলামেলা পরিবেশে পশুর জীবাণু বেশি ছড়াতে পারে না।
যারা সবার সঙ্গে একত্রিত হয়ে নির্দিষ্ট স্থানটিতে কুরবানি দিতে পারছেন না, তারা তাদের পশুর বর্জ্যগুলো নিজ দায়িত্বে কাছাকাছি ডাস্টবিনে ফেলে আসবেন।
আরও পড়ুন: ঈদুল আজহায় ডিপ ফ্রিজ খুঁজছেন? যেসব বিষয় জানা প্রয়োজন
পশুর রক্ত পরিষ্কার
পশু জবাইয়ের পর প্রথম কাজ হচ্ছে পশুর রক্ত সরিয়ে ফেলা। এর জন্য রক্ত সম্পূর্ণ ঝরে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। অতঃপর পর্যাপ্ত পানি দিয়ে রক্ত ধুয়ে ফেলতে হবে। রক্ত অপসারণের জন্য কাছাকাছি কোনো ড্রেন ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকতে হবে যেন রক্তের সঙ্গে কোনো কঠিন বর্জ্য ড্রেনের মুখ বন্ধ করে না দেয়। তরল রক্ত দ্রুত সরিয়ে ফেলার পর রক্তের দাগ ও দুর্গন্ধ দূর করার জন্য জীবাণুনাশক ব্যবহার করতে হবে।
বর্জ্য খোলা স্থানে না রাখা
পশুর রক্তসহ অন্যান্য কঠিন ও তরল বর্জ্য উন্মুক্ত স্থানে রাখা ঠিক নয়। কেননা এতে রক্ত আর নাড়ি-ভুঁড়ি বাতাসের সংস্পর্শে এসে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দুর্গন্ধ ছড়ায়। এগুলো গর্ত করে ভেতরে রেখে মাটিচাপা দিতে হবে, অথবা সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়িতে রেখে আসতে হবে। গাড়ি আসার আগ পর্যন্ত কোনো পলিব্যাগে ভরে কাছাকাছি কোনো ডাস্টবিনে যেয়ে ফেলে আসা যেতে পারে।
গর্ত করা
পশুর দেহের উচ্ছিষ্ট ও বর্জ্য নিষ্কাশনের উত্তম পন্থা হলো মাটিতে গর্ত করে পুঁতে ফেলা। অন্যথায় যেখানে-সেখানে ফেলে রাখলে তাতে পচন ধরে মারাত্মক দুর্গন্ধ ছড়াবে। এই পরিবেশ দূষণ পরবর্তীতে নানান রোগের কারণ হতে পারে। তাই কুরবানির আগেই নিকটবর্তী কোনো মাঠ বা পরিত্যক্ত জায়গায় ৩ থেকে ৪ ফুট গর্ত তৈরি করে রাখা উচিৎ।
জবাই পর্ব শেষে পশুর শরীরের যাবতীয় উচ্ছিষ্ট এক করে সেই গর্তে ফেলে তার ওপর ব্লিচিং পাউডার, চুন, বা ফাম-৩০ নামক জীবাণুনাশক ছড়াতে হবে। সবশেষে খড়কুটা ও কাঁটা জাতীয় কিছু ডালপালা দিয়ে আবৃত করে শক্ত করে মাটিচাপা দিতে হবে। এটি এক দিক থেকে বর্জ্য অপসারণের জন্য কার্যকর, অন্যদিকে জৈব সার হিসেবে শস্যক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য উপযোগী। মাটিচাপার দেয়ার পর তার ওপর কিছু মোটা তুষ ছিটিয়ে দিলে পরে কুকুর বা বিড়াল মাটি গর্ত করে ময়লা তুলতে পারবে না।
আরও পড়ুন: ফ্রিজের দুর্গন্ধ দূর করার ঘরোয়া উপায়
নিরাপদে স্ট্রিট ফুড খাওয়ার ১০টি উপায়
অনন্য স্বাদ ছাড়াও বিভিন্ন অঞ্চলের স্ট্রিট ফুডের সঙ্গে মিশে থাকে স্থানীয় ঐতিহ্য। আবাসিক ও অনাবাসিক এলাকাগুলোতে নির্বিশেষে গড়ে ওঠা খাবারের ছোট্ট দোকানগুলোর থাকে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। আবার কোনো কোনো খাবারের রন্ধন প্রণালী ও উপকরণ একচ্ছত্রভাবে শুধু একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলেই পাওয়া যায়। আর এই আবহ গোটা জেলার মধ্যে খাবারসহ দোকানটিকে প্রসিদ্ধ করে তোলে। কিন্তু এই প্রসিদ্ধির সান্নিধ্য পেতে গিয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সম্মুখীন হতে হয় স্বাস্থ্য ঝুঁকির। কেননা রাস্তার পাশের এই খাবারগুলো নানা ধরনের দূষিত পদার্থের সংস্পর্শে থাকে। এছাড়া রন্ধন প্রণালী ও পরিবেশনের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মধ্যেও থাকে যথেষ্ট ঘাটতি। তাই সুস্বাদু হলেও খাবারগুলো চেখে দেখার আগেই সাবধান হওয়া জরুরি। চলুন, ঝুঁকি এড়িয়ে নিরাপদে স্ট্রিট ফুড খাওয়ার কিছু উপায় জেনে নেওয়া যাক-
স্ট্রিট ফুড খাওয়ার ১০টি নিরাপদ উপায়
জনপ্রিয়তার পাশাপাশি গ্রাহকদের ভিন্নতা
একটি খালি স্টলের চেয়ে দীর্ঘ লাইন থাকা স্টল ভালো। আপাতদৃষ্টে ভিড় থাকা মানে উচ্চ চাহিদাকেই বোঝায়। আর এই একই কারণে জনপ্রিয় স্টলগুলোর নাম মুখে মুখে রটে যায়। কেবল ভালো স্বাদই নয়, অধিক লোকসমাগমের পেছনে একটি বড় কারণ থাকে খাবারের গুণগত মান। সাধারণত লোকজন সেই দোকানেই ভিড় জমান, যেখানকার খাবারের প্রতি তাদের নির্ভরতা আছে।
কিন্তু এর থেকেও আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে- স্টলটিতে কারা খেতে যাচ্ছেন। মুলত স্টলের গ্রাহকদের মধ্যে যত বেশি বৈচিত্র্য থাকবে স্টলটি তত বেশি নিরাপদ। বিশেষ করে ভিড়ের মধ্যে নারী ও শিশুসহ পরিবার নিয়ে খেতে আসা লোকেরাও থাকলে অনায়াসেই সেই স্টলগুলো সেরা পছন্দ হতে পারে।
আরো পড়ুন: চিনির কিছু স্বাস্থ্যকর প্রাকৃতিক বিকল্প
স্টলের অবস্থান
মূল পণ্য খাবার হওয়ায় দোকানের চারপাশের পরিবেশ অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। ডাস্টবিন এবং কলকারখানার পেছনে বর্জ্য বা রাসায়নিক নিষ্কাশনের জায়গায় আশেপাশে হলে সে স্টল এড়িয়ে চলতে হবে। নির্মাণাধীন ভবনের আশেপাশে এবং উচ্চ ট্রাফিক থাকা রাস্তার ফেরিগুলোতে বিক্রি হওয়া খাবার অধিক দূষণের শিকার হয়। এছাড়া স্টলের কাছে খোলা ম্যানহোল বা জমে থাকা পানি থাকলে সেই স্টলের খাবার না খাওয়াই ভালো।
স্বচ্ছ এবং আবৃত স্টোর
বাংলা হোটেলসহ রাস্তার অধিকাংশ ফুড কোর্টগুলো পথচারীদের প্রলুব্ধ করার জন্য তাদের পণ্যগুলো উন্মুক্ত করে রাখে। এই খাবারগুলো যে কতক্ষণ যাবৎ এরকম খোলা অবস্থায় রয়েছে তা জানার কোনো উপায় নেই। টাটকা বানিয়েই কোনো খাবার ঢেকে না রাখলে দূষিত পদার্থের সংস্পর্শে আসে। আর দীর্ঘক্ষণ রাখা হলে তা অনেক আগেই কুখাদ্যে পরিণত হয়।
অপরদিকে এমন অনেক স্টল দেখা যায় যেগুলো চারপাশ থেকে কাঁচ দিয়ে ঘেরা; শুধু যিনি রান্না করছেন তার দিকে অংশটা খোলা। শতভাগ না হলেও এগুলো উন্মুক্ত স্টলগুলো থেকে উত্তম। এখানে গ্রাহকরা খালি চোখেই খাবারগুলোর বর্তমান অবস্থা বা কিভাবে তা বানানো হচ্ছে- তা দেখতে পারেন।
আরো পড়ুন: রেস্তোরাঁ-শপিং মলে প্রবেশের আগে যে বিষয়গুলোতে সাবধান থাকা জরুরি
রান্নার জন্য ভেতরে রাখা উপকরণগুলো সঠিকভাবে ঢেকে রাখা হলে নিরাপত্তা আরও একধাপ বেড়ে যায়।
সদ্য তৈরি করা খাবার
স্ট্রিট ফুড খাওয়ার সেরা উপায় হচ্ছে সেই স্টলগুলোতে যাওয়া যেগুলো অর্ডার করার পর তাৎক্ষণিকভাবে খাবার বানিয়ে দেয়। সময় বেশি লাগলেও এই স্টলগুলোকেই অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। ইতোমধ্যে যে খাবারগুলো বানিয়ে রাখা হয়েছে সেগুলো এড়িয়ে যেতে হবে। কেননা এগুলোর খাদ্যবাহিত রোগজীবাণুতে পরিপূর্ণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে, যা হজমজনিত বিভিন্ন সমস্যার কারণ হতে পারে।
যারা আচার পছন্দ করেন, তাদের রাস্তার পাশে বিক্রি হওয়া আচারগুলো থেকে দূরে থাকা উচিত। অনেক আগে বানানো থাকায় ইতোমধ্যে সেগুলো ব্যাকটেরিয়ার প্রজনন ক্ষেত্রে পরিণত হয়। এমনকি আচারযুক্ত অন্যান্য খাবারও শরীরের জন্য ভালো নয়।
আরো পড়ুন: গরুর দুধের বিকল্প হিসেবে খেতে পারেন যেসব স্বাস্থ্যসম্মত খাবার
ভিড় থাকা দোকানগুলোতে পরিবেশনে তাড়াহুড়ো করায় খাবার কাঁচা থেকে যাচ্ছে কি না সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
রাঁধুনির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা
ঘরের ভেতর-বাহির নির্বিশেষে যিনি খাবার বানানোর দায়িত্বে আছেন তার পরিষ্কার থাকা অপরিহার্য। ভ্রাম্যমাণ কিচেনের পেছনে বিক্রেতাকে হাতে গ্লাভ্স এবং মাথায় লম্বা টুপি পরিহিত অবস্থায় দেখা গেলে এটি একটি ভালো লক্ষণ। তবে এই গ্লাভ্স নিয়মিত পরিবর্তন করা হচ্ছে কি না সেদিকে খেয়াল দেওয়া দরকার। আবার এই গ্লাভ্স পরিহিত অবস্থায় খাবার তৈরি এবং টাকা লেনদেন করা উচিত নয়। অনেক দোকানে একজন খাবারের দায়িত্বে থাকেন, আরেকজন পরিচালনা করেন লেনদেনের দিকটা। এমন পরিষেবা উন্নত দোকানের পরিচায়ক।
বিক্রেতা তার বাসনপত্র কোথায় পরিষ্কার করছেন এবং রান্নার তেল কীভাবে রাখছেন সেগুলো খুঁটিয়ে দেখা দরকার।পাশাপাশি স্টলের আশেপাশে খাবারের উচ্ছিষ্ট পড়ে স্তূপ হয়ে থাকাটা রাঁধুনির অপরিচ্ছন্নতার কথা জানান দেয়।
আরো পড়ুন: তীব্র গরমে পানিশূন্যতা প্রতিরোধে উপকারী শাকসবজি