লাইফস্টাইল
ডেঙ্গু সম্পর্কে ১০টি প্রচলিত ধারণা: জেনে নিন সঠিক তথ্য
সুনির্দিষ্ট অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান প্রাদুর্ভাবের সঙ্গে শুরু হওয়া ডেঙ্গু মহামারি এখন একটি বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ। এই মহাসংকটের ভেতরে আবার সমাজে ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গু ও এর চিকিৎসা নিয়ে নানা ধরনের ভুল ধারণা।
সরাসরি চিকিৎসকের শরণাপন্ন না হয়ে অনেকেই নির্ভর করা শুরু করেছেন এই প্রচলিত ধারণাগুলোর ওপর। এই বিপথগামীতার সাপেক্ষে অপরিহার্য হয়ে পড়েছে অবিলম্বে গণসচেতনা সৃষ্টি। এই সচেতনা সৃষ্টির লক্ষ্যে চলুন জেনে নেওয়া যাক, ডেঙ্গু সম্পর্কে ১০টি প্রচলিত ধারণা।
ডেঙ্গু নিয়ে ১০টি ভুল ধারণা
ডেঙ্গু ছোঁয়াচে রোগ
এই ভুল ধারণার কারণে অধিকাংশ মানুষই ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে আক্রান্ত ব্যক্তিকে এড়িয়ে চলেন। কিন্তু ডেঙ্গু সংক্রামিত ব্যক্তির সংস্পর্শে অন্য কোনো ব্যক্তি এলে তিনি ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হন না। ডেঙ্গু রোগ মূলত ডেঙ্গু বা ডেঙ্গি ভাইরাস বহনকারি এডিস মশার কামড়ের মাধ্যমে ছড়ায়।
তবে সংক্রামিত গর্ভবতী মায়ের থেকে ভ্রূণে চলে যেতে পারে এই ভাইরাস। এছাড়া রক্ত ও অঙ্গদানের মাধ্যমেও এই স্থানান্তরটা হতে পারে। তবে এরকম সংক্রমণের দৃষ্টান্ত বিরল।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ, নির্ণয়ের প্রক্রিয়া, চিকিৎসা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
ডেঙ্গু শুধু গ্রাম এলাকা বা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে হয়
গ্রামাঞ্চলে খেত-খামার, বন-জঙ্গলের আধিক্যের কারণে অনেকেই এরকমটা ভেবে থাকেন। এছাড়া উন্নত দেশগুলোর তুলনায় উন্নয়নশীল দেশগুলোতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বেশি দেখা যায়। তাই বলে উন্নত দেশগুলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর তুলনায় কম ডেঙ্গু ঝুঁকিপূর্ণ হবে, ব্যাপারটি তা নয়। উন্নত দেশগুলোতে দ্রুত চিকিৎসা নেয়ার সুবিধা এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা থাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপটা কম বলা যেতে পারে।
প্রকৃতপক্ষে শহর-গ্রাম উন্নত বা উন্নয়নশীল দেশ; যে স্থানই হোক না কেন, ডেঙ্গু ভাইরাস বাহিত এডিস মশা রয়েছে এমন যে কোনো স্থানই ঝুঁকিপূর্ণ।
শুধুমাত্র শিশু ও বয়স্কদের ডেঙ্গু হয়
শিশু আর বৃদ্ধরাই শুধু ডেঙ্গুর শিকার হয়- তা যে একদম অমূলক তা সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোতেই প্রমাণ পাওয়া যায়। আসলে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার জন্য বয়স কোনো কারণ নয়। এখানে মূল বিষয়টি হচ্ছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। অনেক বয়স্ক লোকদের মধ্যেও বেশ ভালো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দেখা যায়। অন্যদিকে, এই ক্ষমতার দিক দিয়ে দুর্বল হওয়ার কারণে যৌবনে পদার্পণকারি সুঠাম দেহের মানুষও ডেঙ্গুর শিকার হতে পারেন।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু প্রতিরোধ: বাড়িকে মশামুক্ত রাখার প্রাকৃতিক উপায়
যে কোনো মশা কামড়ালেই ডেঙ্গু হয়
এটি একদমই ভুল ধারণা। ডেঙ্গু ভাইরাস বহন করে এডিস ইজিপ্টি (Aedes aegypti) ও এডিস অ্যালবোপিকটাস (aedes albopictus) নামক প্রজাতির স্ত্রী মশা। এই এডিস ইজিপ্টি প্রজাতিটি অনেক বড়। এদের পা বা উপাঙ্গুলোতে সাদা দাগ থাকে।
ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তিকে এই মশা কামড়ালে এটি সেই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়। এ অবস্থায় প্রায় এক সপ্তাহ বা তার পরে মশাটি কোনো সুস্থ ব্যক্তিকে কামড়ালে তার ডেঙ্গু রোগ হবে।
ডেঙ্গু মশা শুধু দিনেই কামড় দেয়
ডেঙ্গু ছড়ানো মশা দিনের বেলায় সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে। বেশিরভাগ সময় সূর্যোদয়ের দুই ঘণ্টা পরে এবং সূর্যাস্তের কয়েক ঘণ্টা আগে। কিন্তু তাই বলে যে এগুলো রাতে কামড়ায় না- এমনটি নয়।
রাতের বেলা সাধারণত অফিস, মল এবং ইনডোর অডিটোরিয়ামের ভেতরে অধিক আলোকিত জায়গায় এই মশার উৎপাত বেশি থাকে।
আরও পড়ুন: মশা কেন আপনাকেই কামড়ায়?
ডেঙ্গু জীবনে কেবল একবারই হয়
অনেকেই ভেবে থাকেন যে, যার একবার ডেঙ্গু হয়েছে তার আর কখনো ডেঙ্গু হবে না। এটি একদমই সঠিক নয়।
ডেঙ্গু ভাইরাস চার ধরনের হয়ে থাকে। এগুলোকে ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩ এবং ডেন-৪ নামে চিহ্নিত করা হয়। এখানে ডেন-১ কামড়ানোর পর সংক্রমিত ব্যক্তি সঠিক চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে গেলে তিনি ডেন-১ থেকে অনাক্রম্যতা পাবেন। কিন্তু পরবর্তীতে ডেন-২-এর কামড় খাওয়ার পর তিনি আবার সংক্রমিত হয়ে যাবেন। অর্থাৎ সুস্থ হওয়ার পর এক ধরনের মশা থেকে রক্ষা পেলেও অন্যান্য ধরণগুলোর জন্য ঝুঁকি থেকে যাবে। তাত্ত্বিকভাবে বিবেচনা করলে, এভাবে জীবনে ৪ বার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
ছাগলের দুধ, গিলয় ও পেঁপে পাতার রস খেলে ডেঙ্গু নিরাময় হয়
ছাগলে দুধ, গিলয় ও পেঁপে পাতার রসের বিপুল স্বাস্থ্যগুন থাকায় অনেকেই এরকমটা দাবি করেন। কিন্তু ডেঙ্গুর নিরাময়ে এদের সরাসরি কোনো ভূমিকা নেই।
পেঁপের রস প্লাটিলেট উৎপাদনে সাহায্য করতে পারে। তবে তা অনেক অল্প পরিমাণে এবং এটি কোনো তাৎক্ষণিক প্রক্রিয়া নয়। বিশেষজ্ঞদের নির্দেশনা অনুসারে ওষুধের পাশাপাশি সম্পূরক হিসেবে ছাগলের দুধ, পেঁপে বা গিলয়ের নির্যাস খাওয়া যেতে পেতে পারে। তবে ডেঙ্গু নিরাময়ের জন্য পুরোপুরি এগুলোর উপর নির্ভর করা যাবে না।
আরও পড়ুন: শিশুকে ডেঙ্গু থেকে রক্ষার উপায়
এমনকি কিছু ক্ষেত্রে এগুলো উল্টো নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। পেঁপে এবং গিলয়ের রস খেলে গ্যাস্ট্রিক এবং বমি হতে পারে। ডেঙ্গুর সময় এই বমি বা বমি ভাব এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। জরুরি পরিস্থিতিতে চিকিৎসকগণ প্লাটিলেটের হ্রাস-বৃদ্ধি তদারক করে থাকেন। এ সময় শরীরের অভ্যন্তরে অতিরিক্ত চাপ-সৃষ্টি হয়- এমন বিষয়গুলো এড়িয়ে চলা উচিত।
আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর ঈদে মিলাদুন্নবী
বাংলাদেশের আকাশে আজ কোথাও পবিত্র রবিউল আউয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে আগামী রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) থেকে পবিত্র রবিউল আউয়াল মাস গণনা করা হবে। সে হিসেবে আগামী বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালিত হবে।
শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মুকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার।
আরও পড়ুন: আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী
সভায় জানানো হয়, আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আকাশে পবিত্র রবিউল আউয়াল মাসের চাঁদ দেখা পাওয়ার সংবাদ পাওয়া যায় নি। ফলে আগামীকাল শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) পবিত্র সফর মাস ৩০ দিন পূর্ণ হবে এবং আগামী রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) থেকে পবিত্র রবিউল আউয়াল মাস গণনা শুরু হবে। এছাড়া আগামী বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালিত হবে।
সভায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. বশিরুল আলম, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মু. আ. আউয়াল হাওলাদার, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম-সচিব মো. সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া, সিনিয়র উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. আবদুল জলিল, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপপরিচালক মহা. আসাদুর রহমান, বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. ফরিদ উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ঈদে মিলাদুন্নবীর ছুটি ২০ অক্টোবর
ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে বঙ্গভবনে মিলাদ মাহফিল
বিআরটিএ স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স যেভাবে করবেন
অতি গুরুত্বপূর্ণ নথি হওয়া সত্ত্বেও কাগজের ড্রাইভিং লাইসেন্স তোলা নিয়ে ছিলো হাজারও ঝামেলা। গ্রাহকদের অনেকবার দ্বারস্থ হতে হতো বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বা বিআরটিএর।দেশের ডিজিটালকরণ কার্যক্রম অন্যান্য রাষ্ট্রীয় পরিষেবাগুলোর মত ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তিকেও সহজ করতে শুরু করেছে। জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্ট ন্যাশনাল আইডি (এনআইডি) কার্ডের মত ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্যও প্রস্তুত করা হয়েছে স্মার্ট কার্ড। এই বিআরটিএ স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স সারা দেশ জুড়ে গাড়ি চালনায় বৈধতার স্বীকৃতি দিবে। চলুন, এই স্মার্ট লাইসেন্স কার্ড পাওয়ার উপায় জেনে নেওয়া যাক।
বিআরটিএ স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স কী
ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া থেকে শুরু করে রাস্তাঘাটে এর তদারকের প্রক্রিয়াকে আরও সহজ ও গতিশীল করার লক্ষ্যে বিআরটিএর নতুন পরিষেবা স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স।
এই স্মার্ট কার্ডে একজন গাড়ি চালকের জীবন বৃত্তান্ত সহ গাড়ি চালনার সব তথ্য লিপিবদ্ধ থাকে। এর মাধ্যমে রাস্তাঘাটে চলাচলের সময় চালকের বৈধতা যাচাইয়ে ট্র্যাফিক পুলিশের তদারকের কাজ খুব কম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হবে।
২০১৬ সালে এই কার্যক্রম শুরু হলেও স্মার্ট কার্ড প্রাপ্তি নিয়ে ছিলো সমূহ জটিলতা। পূর্বে বিএসপি (বিআরটিএ সার্ভিস পোর্টাল) পোর্টালে লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স ও স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আলাদা ভাবে আবেদন করতে হতো।
কিন্তু ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর এই দুটিকে একত্রীত করে একটি কম্বাইন্ড অনলাইন ফর্ম চালু করা হয়। শুধু তাই নয়, আবেদন পদ্ধতি এবং স্মার্ট কার্ড প্রদান আরও সহজতর করার জন্য এসময় আরও কিছু বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়।
চলুন, এক নজরে দেখে নেয়া যাক সেই বিধিমালা।
বিআরটিএর নতুন স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর সুবিধাগুলো
১) নতুন নিয়মে আবেদনকারীকে ৩ থেকে ৪ বারের পরিবর্তে শুধুমাত্র একবার পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে হয়। আর এই একদিনেই লিখিত, মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষাসহ বায়োমেট্রিক এনরোলমেন্টও সম্পন্ন করা হয়।
২) বিএসপি পোর্টালে নিবন্ধনকারীগণ ঘরে বসেই অনলাইন ভেরিফিকেশন বেজড কিউআর কোড সম্বলিত লার্নার লাইসেন্স পেয়ে যান। এটি মুলত স্মার্ট কার্ড হাতে পাওয়ার আগ পর্যন্ত সারা দেশে মোটরযান চালনার অস্থায়ী অনুমতিপত্র।
৩) এছাড়াও এই পোর্টালের সেবার মধ্যে আছে লাইসেন্স ফি প্রদান, পরীক্ষার ফল জানা, স্মার্ট কার্ড আবেদন দাখিল, এবং আবেদনপত্র বা স্মার্ট কার্ডের বর্তমান স্ট্যাটাস জানার সুবিধা।
৪) ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর এই স্মার্ট কার্ড প্রতিটি গ্রাহকের কাছে ডাকযোগে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন: ঘরে বসে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাবে
বিআরটিএ স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার পূর্বশর্ত
লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্সের পূর্বশর্তগুলোই এই আবেদনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। অর্থাৎ গাড়ি চালনার জন্য আবেদনকারীর মানসিক ও শারীরিক সুস্থতা থাকতে হবে। কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণি পাশ হতে হবে। পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর ক্ষেত্রে কমপক্ষে ২১ বছর এবং অপেশাদারের বেলায় ন্যূনতম ১৮ বছর বয়সী হতে হবে।
সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বিষয় হলো-
লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা যাবে না।
বিআরটিএ স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স করার পদ্ধতি
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদনের জন্য যে কাগজপত্র প্রয়োজন, তার অধিকাংশই এই আবেদনের ক্ষেত্রেও দরকার। অর্থাৎ-
১) আবেদনকারীর সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজের ছবি (৩০০/৩০০ পিক্সেল)
২) রেজিষ্টার্ড ডাক্তারের নিকট থেকে সংগৃহীত মেডিকেল সনদপত্র
৩) আবেদনকারীর এনআইডি
৪) আবেদনকারীর গ্যাস/বিদ্যুৎ/পানি যে কোন ১টি (আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানা তার এনআইডি থেকে ভিন্ন হলে, বর্তমান ঠিকানার ১টি ইউটিলিটি বিল)
৫) শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র
স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য অতিরিক্ত নথি হিসেবে লাগবে
১) লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স পাসের প্রমাণপত্র
প্রযোজ্য ক্ষেত্রে পুলিশি তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য এই লিঙ্কগুলো দেখুন-
http://www.brta.gov.bd/site/page/511a7af4-20c8-4450-b4a6-5f92dde1b23f/-
http://www.brta.gov.bd/site/page/4258fc8f-8aec-4895-b11d-a0b33b489af2/-
উল্লেখ্য, এই নথিগুলো অনলাইন আবেদনের পূর্বেই স্ক্যান করে প্রস্তুত রাখতে হবে। পাসপোর্ট সাইজের ছবির স্ক্যান করা ফাইল ১৫০ কেবি(কিলোবাইট), আর বাকি সবগুলো ফাইলের সাইজ ৬০০ কেবির বেশি হওয়া যাবে না।
আরও পড়ুন: ট্রেড লাইসেন্স করার পদ্ধতি: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, খরচ ও সময়
অনলাইনে বিআরটিএর নতুন স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর আবেদন পদ্ধতি
অনলাইনে আবেদনের জন্য সরাসরি চলে যেতে হবে বিএসপি পোর্টালে (https://bsp.brta.gov.bd/)।
আবেদনের জন্য প্রথমেই নিবন্ধনের মাধ্যমে এই পোর্টালের অধীনে নিজের একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।
এই অ্যাকাউন্টে ড্রাইভিং সম্পর্কিত গ্রাহকের যাবতীয় তথ্য জমা থাকবে। চলুন, ধাপে ধাপে এই আবেদন প্রক্রিয়াটি জেনে নেয়া যাক-
নিবন্ধন
প্রথমে বিএসপি পোর্টালের একদম উপরে ডানদিকে ‘নিবন্ধন’ মেনুতে ক্লিক করতে হবে। পুরো নিবন্ধন সম্পন্ন করার জন্য গ্রাহকের জন্ম তারিখ, এনআইডি এবং মোবাইল নাম্বার দিতে হবে।
মোবাইল নাম্বারে আসা ওটিপি (ওয়ান-টাইম-পাসওয়ার্ড)- এর মাধ্যমে মোবাইল নাম্বারটি যাচাই করে নিতে হবে। তারপর পাসওয়ার্ড নির্ধারণের মাধ্যমে শেষ হবে নিবন্ধন প্রক্রিয়া।
এখন প্রদত্ত মোবাইল নাম্বার ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করা যাবে বিএসপি পোর্টালে। যারা ইতিপূর্বে নিবন্ধন করেছেন, তারা এই সাইটের ‘প্রবেশ করুন’ মেনুতে যেয়ে লগইন করে সরাসরি নিজেদের অ্যাকাউন্টে চলে যেতে পারবেন।
শিক্ষানবিশ বা লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন
লগইনের পরপরই আসবে গ্রাহক ড্যাশবোর্ড। এর বামদিকে প্রদর্শিত মেনুগুলো থেকে ‘ড্রাইভিং লাইসেন্স’- এর সাবমেনু ‘ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন’-এ ক্লিক করতে হবে।
এবার যে নতুন পেজটি আসবে, তাতে আবেদনের পূর্বশর্ত ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের লিস্ট দেখানো হবে। ‘এখানে ক্লিক করুন’ লিঙ্ক থেকে মেডিকেল সার্টিফিকেট ফর্মটি ডাউনলোড করে নিতে হবে। এই ফর্মের ভিত্তিতে রেজিস্টার্ড ডাক্তার বা মেডিকেল অফিসারের নিকট থেকে মেডিকেল সার্টিফিকেট গ্রহণ করতে হবে।
উপরন্তু, পেজে উল্লেখিত শর্তগুলো মেনে ‘আমি সম্মত’ বাটনে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে অগ্রসর হতে হবে।
আরও পড়ুন: ভুয়া এনআইডি-ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি, আটক ৫
জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য
এই ধাপের মাধ্যমেই শুরু হবে ড্রাইভিং লাইসেন্সের ৫টি ধাপ সমন্বিত আবেদন প্রক্রিয়া। যেহেতু পূর্বে একবার এনআইডি সংখ্যা দেওয়া হয়েছে, তাই এখানে সে অনুসারে প্রাথমিক তথ্যাবলি স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রদর্শিত হবে। তারপর ২য় ধাপে যাওয়ার জন্য ‘নেক্সট’ বাটনে ক্লিক করতে হবে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর তথ্য
এখানে ড্রাইভিং লাইসেন্সের ভাষা, ধরণ, মোটরযানের শ্রেণি, আবেদনকারির ধরণ বাছাই করতে হবে। শিক্ষানবিশ বা লার্নার এবং স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্সের বিষয়টি এখানেই নির্ধারণ করতে হবে আবেদনের ধরণ নির্বাচনের মাধ্যমে।
তারপর ‘নেক্সট’ বাটনে ক্লিক করলে তথ্য সফলভাবে সংরক্ষিত হয়েছে- এই মর্মে একটি পপআপ বার্তা আসবে। তাতে ‘ওকে’ করে পরের ধাপে যেতে হবে।
আবেদনকারির প্রাথমিক তথ্য
এখানে কিছু তথ্যাদি এনআইডি অনুসারে আগে থেকে প্রদর্শিত থাকবে। কিছু তথ্য টাইপ করে লিখতে বলা হবে। তন্মধ্যে লাল তারকা চিহ্নিত বক্সগুলো অবশ্যই পূরণ করতে হবে। এনআইডির বাইরে আবশ্যিক তথ্য হিসেবে শিক্ষাগত যোগ্যতা, রক্তের গ্রুপ, পেশা, বৈবাহিক অবস্থা, জাতীয়তা এবং দ্বৈত নাগরিকত্ত আছে কিনা তা উল্লেখ করতে হবে। এরপর ‘নেক্সট’- এ ক্লিক করে পূর্বের ন্যায় পপআপ বার্তায় ‘ওকে’ করতে হবে।
ঠিকানা ও যোগাযোগের তথ্য
এই ধাপে আবেদনকারির সঙ্গে যোগাযোগের জন্য স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা সহ জরুরি যোগাযোগের তথ্য অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। এনআইডিতে থাকা স্থায়ী ঠিকানা বামদিকে বাংলায় প্রদর্শিত থাকবে, আর ডানদিকে সেগুলো ইংরেজিতে লিখতে হবে।
বর্তমান ঠিকানা যদি এখনও অপরিবর্তিত থাকে, তাহলে ডান দিকে একইভাবে ইংরেজিতে লিখতে হবে। তা না হলে ‘না’ বাটনে ক্লিক করে পরিবর্তিত বর্তমান ঠিকানা বাম পাশে বাংলায় আর ডান পাশে ইংরেজিতে টাইপ করে লিখে দিতে হবে। তারপর সেই আগের মত ‘নেক্সট’ এবং ‘ওকে’ বাটনে ক্লিক করে পরের ধাপে অগ্রসর হতে হবে।
সংযুক্তি ও স্মার্ট কার্ড বিতরণ তথ্য
এই শেষ ধাপে আগে থেকে সংগ্রহে রাখা প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের স্ক্যান কপিগুলো সংযুক্ত করতে হবে। ‘চুজ ফাইল’-এ ক্লিক করে সফলভাবে আপলোড করার পর ‘সংরক্ষণ করুন’ বাটনে ক্লিক করলে ফাইলগুলো সংযুক্ত হয়ে যাবে। ‘দেখুন’ বাটনে ক্লিক করে তা একবার দেখে নেয়া যেতে পারে।
ডাকযোগে কার্ড প্রেরণের জন্য ঠিকানা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই নির্দিষ্ট করা থাকবে। তবে গ্রাহক কার্ড প্রাপ্তির জন্য নিজের সুবিধা মত স্থায়ী বা বর্তমান যে কোন ঠিকানা বাছাই করতে পারেন। এমনকি এর বাইরে অন্য জায়গাও তিনি ঠিক করতে পারেন। সেক্ষেত্রে ‘আদার্স’ নির্বাচন করে পূর্ণ ঠিকানা উল্লেখ করে দিতে হবে।
সবশেষে ‘সাবমিট’ বাটনে ক্লিক করার পর শেষ বারের মত তথ্য যাচাই করতে বলা হবে। এখানে কোনও পরিবর্তন প্রয়োজন হলে আবেদনকারি প্রয়োজনীয় পরিবর্তনগুলো করে নিতে পারবেন। আর সব কিছু ঠিক থাকলে ‘ফি জমা’ বাটনে ক্লিক করতে হবে।
ফি জমা
এখানে মনে রাখা জরুরি যে, এখানে শুধুমাত্র লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন ফি জমা দিতে হবে।
পুরো আবেদনটি প্রথমে এক নজরে দেখানো হবে। সব ঠিক থাকলে ‘ফি জমা দিন’ বাটনে ক্লিক করে ‘পেমেন্ট কনফারমেশন’ পেজে যেতে হবে। এখানে মোবাইল নাম্বার সহ ফি জমা দেয়ার মাধ্যম উল্লেখ করার পর পেমেন্ট শর্তাবলির পাশের বক্সটিতে টিক মার্ক দিতে হবে। তারপর ‘নিশ্চিত’ বাটনে ক্লিক করলে ফি সফলভাবে জমা হওয়ার একটি পেজ প্রদর্শিত হবে।
এখানে ‘প্রিন্ট লার্নার’ বাটনে ক্লিক করলে শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং ‘হেয়ার’ বাটনে ক্লিক করলে মানি রিসিপ্ট প্রিন্ট হবে।
আরও পড়ুন: ২০২৩ সালে বিশ্বের শীর্ষ ১০ বিলাসবহুল গাড়ি
স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স- এর জন্য আবেদন
অনলাইন আবেদনের এই অংশে আসার পূর্বে অবশ্যই ড্রাইভিং- এ দক্ষতা যাচাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। বিএসপি পোর্টালে গ্রাহক ড্যাশবোর্ডে ‘ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন’ মেনুতে ক্লিক করলে দেখা যাবে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বা অনুত্তীর্ণ হওয়ার বার্তাটি। এছাড়া আবেদনের সময় প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারেও জানানো হবে পরীক্ষার ফলাফল।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্তি
‘দেখুন ও পরবর্তী ধাপ’ বাটনে ক্লিক করলে সংযুক্তির পেজটি প্রদর্শিত হবে। লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদনের সময় সংযুক্ত নথিগুলো এখানে আগে থেকেই সংযুক্ত দেখাবে।
আলাদা ভাবে আপলোড করতে হবে পাস লার্নার; তথা ড্রাইভিং দক্ষতা যাচাই পরীক্ষা উত্তীর্ণের প্রমাণপত্র। এছাড়া প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অতিরিক্ত নথির সংযুক্ত করা যেতে পারে।
ফি পরিশোধ
ব্যাংকের মাধ্যমে ফি দিতে হলে ‘ব্যাংকের মাধ্যমে ফি জমা’ আর অনলাইনে দিতে হলে ‘অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর ফি জমা’ বাটনে ক্লিক করতে হবে।
অনলাইনের ক্ষেত্রে অনলাইন পেমেন্ট পেজে ‘পে নাউ’ বাটনে ক্লিক করে পরিশোধ সম্পন্ন করতে হবে।
আর ব্যাংকের ক্ষেত্রে ব্যাংক থেকে প্রদত্ত মানি রিসিপ্টে উল্লেখিত ই-ট্র্যাকিং নাম্বারটি সংগ্রহ করতে হবে। অতঃপর তা ‘ই-ট্র্যাকিং নম্বর প্রবেশ করুন’ ঘরে লিখে ‘ই-ট্র্যাকিং নম্বর যাচাই’ বাটনে ক্লিক করতে হবে।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে পরিশোধের যাবতীয় তথ্য এক নজরে প্রদর্শন করা হবে। তারপর ‘সাবমিট’ বাটনে ক্লিক করলেই চূড়ান্ত ভাবে সম্পন্ন হবে ফি পরিশোধ।
আরও পড়ুন: রাতে হাইওয়েতে গাড়ি চালানোর সময় প্রয়োজনীয় কিছু সতর্কতা
ই-পেপার ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহ
স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন দাখিল করা শেষ। এখন এটি বিআরটিএ কর্তৃক অনুমোদিত হলে ড্যাশবোর্ডে ই-পেপার লাইসেন্স ফর্ম প্রদর্শন করা হবে। এটি ডাউনলোড এবং প্রিন্ট করে স্মার্ট কার্ড প্রাপ্তির আগ পর্যন্ত বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। এছাড়াও স্মার্ট কার্ড আসার আগ পর্যন্ত লাইসেন্সের সর্বশেষ অবস্থা দেখানো হবে ড্যাশবোর্ডে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স- এর স্মার্ট কার্ড প্রাপ্তি
ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্মার্ট কার্ড প্রস্তুতির সার্বিক কার্যক্রম শেষ হয়ে গেলে ড্যাশবোর্ডে তা প্রদর্শন করা হবে। পরিশেষে আবেদনে উল্লেখিত ঠিকানায় ডাকযোগে প্রেরণ করা হবে ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্মার্ট কার্ডটি।
বিআরটিএ স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স- এর জন্য প্রয়োজনীয় খরচ
শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য শুধুমাত্র বিএসপি পোর্টালের মাধ্যমে ফি পরিশোধ করতে হবে। যে কোনও একটি মোটরযানের জন্য ফি ৫১৮ টাকা, আর দুইটি মোটরযানের জন্য ফি ৭৪৮ টাকা।
স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদনের সময় ১০ বছর মেয়াদী অপেশাদার লাইসেন্সের জন্য দিতে হবে ৪ হাজার ৫৫৭ টাকা। আর ৫ বছর মেয়াদের পেশাদার লাইসেন্সের জন্য খরচ হচ্ছে ২ হাজার ৮৩২ টাকা।
শেষাংশ
বিআরটিএ স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স করার সময় প্রথম সতর্কতা হলো প্রতিটি তথ্য সঠিকভাবে দেওয়া। কোনও ভুয়া তথ্য দেওয়া হলে লার্নার এবং স্মার্ট কার্ড উভয় ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন বাতিল করা হবে। শুধু তাই নয়, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ভুয়া তথ্যদানকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দ্বিতীয়ত, দক্ষতা যাচাইয়ের পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়ার বিষয়টি আমলে নিতে হবে। কেননা অকৃতকার্য হলে আবার নতুন করে পরীক্ষার জন্য তারিখ চেয়ে আবেদন করতে হবে। তাই নিরবচ্ছিন্ন ভাবে ড্রাইভিং লাইসেন্স কার্ড হাতে পেতে হলে এই বিষয়গুলোতে সতর্কতা অবলম্বন বাঞ্ছনীয়।
আরও পড়ুন: মোটর ড্রাইভিং লাইসেন্স করার পদ্ধতি: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও খরচ
স্মরণীয় একটি সফর: রাহুল আনন্দের বাড়িতে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ
সফররত ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে বাংলাদেশের জনপ্রিয় মিউজিক্যাল ব্যান্ড ‘জলের গান’র সংগীতশিল্পী, গীতিকার ও যন্ত্রশিল্পী রাহুল আনন্দের ধানমন্ডির বাসায় যান।
এসময় ম্যাক্রোঁর সঙ্গে ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, বাংলাদেশে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপুই, ফরাসি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ ডি ঢাকা (এএফডি) এর পরিচালক ফ্রাঁসোয়া গ্রোসজিন এবং দুই দেশের প্রতিনিধিত্বকারী অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট নৈশভোজের পর এ সফর করেন এবং দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় সেখানে অবস্থান করেন।
আরও পড়ুন: ধানমন্ডিতে চলছে ভাস্কর রাশার ড্রিফটউড শিল্পকর্মের প্রদর্শনী
রাহুল আনন্দের সঙ্গে তার স্ত্রী উর্মিলা শুক্লা, ছেলে টোটা এবং আরও তিনজন বাংলাদেশি শিল্পী আশফিকা রহমান, কামরুজ্জামান স্বাধীন ও আফরোজা সারার সঙ্গে আড্ডা দেন তিনি।
রাহুলের প্রাণবন্ত ঘরোয়া পরিবেশনে ‘আমি বাংলায় গান গাই’ এবং লালন সংগীতসহ বিভিন্ন গান শোনার পাশাপাশি রাহুলের বাজানো বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের সুর শোনেন ম্যাক্রোঁ।
তারা একে অপরকে উপহারও দিয়েছেন।
রাহুল আনন্দ ফরাসি প্রেসিডেন্টকে একটি 'একতারা' উপহার দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, এটি তাকে (ম্যাক্রোঁ) এই স্মরণীয় সফরের কথা মনে করিয়ে দেবে।
অন্যদিকে, ম্যাক্রোঁ রাহুল আনন্দকে একটি কলম উপহার দিয়ে এটি তার কবিতা ও গান লেখার কাজে ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন।
এই শিল্পী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার আইডিতে উপহারের ছবি শেয়ার করেছেন।
এই সফর উপলক্ষে রাহুল আনন্দ ও তার পরিবার তাদের ১৪০ বছরের পুরোনো ধানমন্ডির বাসভবনের প্রবেশদ্বার ফুল দিয়ে সাজিয়েছিলেন।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট তার বাড়িতে ঐতিহাসিক সফরের পরে গণমাধ্যমের সঙ্গে তার সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে রাহুল আনন্দ বলেন, এই সাক্ষাৎ ছিল দুজন শিল্পীর মধ্যে একটি সংক্ষিপ্ত অথচ সুন্দর সাংস্কৃতিক বিনিময়। কারণ ফরাসি প্রেসিডেন্টও একজন সংগীতশিল্পী ও একজন সংগীত অনুরাগী।
কীভাবে তাদের মধ্যে যোগাযোগ হলো সে সম্পর্কে এই শিল্পী গণমাধ্যমকে জানান, চলতি বছরের জুনে বিশ্ব সংগীত দিবস-২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ ডি ঢাকায় ‘মেড ইন বাংলাদেশ’- শিরোনামে একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি সংগীত পরিবেশন ও নাট্য মঞ্চস্থ হয়েছিল। সেখানে তিনি বেলজিয়ান শিল্পী ম্যাক্স ভ্যান্ডারভর্স্টের সঙ্গে সমন্বয় করেছেন এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট এই পারফরম্যান্স সম্পর্কে জানার পরে আগ্রহী হয়েছেন।
রাহুল আনন্দ গণমাধ্যমকে বলেন, আমি মনে করি এবং নিজেকে পাখি বলে ডাকি। আমি একজন যন্ত্রশিল্পী এবং আমি আমার নিজের যন্ত্র নিজে তৈরি করি। তাই গাছ আমার শৈল্পিক কার্যকলাপের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং আমি সারাদেশে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। কীভাবে একতারা বাজাতে হয় আমি তাকে তা দেখিয়েছি, তিনি শিখেছেনও এবং আমি অবাক হয়েছি যে তিনি খুবই দ্রুত শিখতে পারেন।
ম্যাক্রোঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে রাহুল আনন্দ বলেন, ‘তার সমর্থনের মাধ্যমে এই অকল্পনীয় যোগাযোগ তৈরি হয়েছে। এভাবেই ফ্রান্সের সম্মানিত প্রেসিডেন্ট আমার বাড়িতে এসেছিলেন এবং আমি তার সামনে আমাদের বাংলাদেশি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে উপস্থাপন করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি।’
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর এই সংক্ষিপ্ত দুদিনের সফর ঐতিহাসিক হয়ে গেছে। কারণ ১৯৯০ সালের পর প্রথম ফরাসি প্রেসিডেন্ট হিসেবে ম্যাক্রোঁ বাংলাদেশ সফর করেছেন।
আরও পড়ুন: কীভাবে এল বাংলা ক্যালেন্ডার: দিনলিপি গণনার ইতিবৃত্ত
ব্লু জোন রহস্য: রোগহীন দীর্ঘজীবী সম্প্রদায়ের খোঁজে
সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন সঠিক খাবার ও ভারসাম্যপূর্ণ পরিবেশ। কিন্তু যখন দীর্ঘায়ুর কথা আসে, তখন তালিকায় যুক্ত হয় সুষ্ঠু জীবনধারণ পদ্ধতি। খাদ্যাভাসের ওপর নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা সার্বিকভাবে বদলে দিতে পারে মানুষের জীবনযাত্রাকে। আর তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছে ব্লু জোন। সেখানকার মানুষগুলো কেবল দীর্ঘজীবীই নয়, জীবদ্দশার সময়গুলোতে তারা নিজেদের সুস্থতাকেও ধরে রাখে। আজকের নিবন্ধটিতে উদ্ঘাটিত হবে সেই ব্লু জোনের রহস্য। চলুন, জেনে নেওয়া যাক, কীভাবে ব্ল জোন নিবাসীরা রোগহীনভাবে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে।
ব্লু জোন কী
ব্লু জোন ধারণাটির সূত্রপাত হয়েছে মূলত ২০০৪ সালে প্রকাশিত জিয়ান্নি পেস এবং মিশেল পউলেইনের জনসংখ্যা সংক্রান্ত গবেষণা থেকে। তারা ইতালির সার্ডিনিয়ার নুরো প্রদেশকে শতবর্ষী পুরুষদের অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করে তার নাম দিয়েছিলেন ‘ব্লু জোন’। পরবর্তীতে এই গবেষণালব্ধ ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে আমেরিকান লেখক ড্যান বুয়েটনার খুঁজে বের করেন আরও ৪টি অঞ্চল।
প্রকৃতপক্ষে ব্লু জোন হলো বিশ্বের সেই অঞ্চলগুলো, যেখানকার অধিবাসীদের আয়ু পৃথিবীর মানুষের সাধারণ গড় আয়ুর তুলনায় বেশি। চলুন, ব্লু জোন হিসেবে চিহ্নিত সেই জায়গাগুলোর ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেই।
আরও পড়ুন: জিমে অনুশীলনের সময় সম্ভাব্য দুর্ঘটনা এড়ানোর উপায়
বিশ্বের ৫টি ব্লু জোন
নুরো প্রদেশ, সার্ডিনিয়া, ইতালি
এটি ইতালির সার্ডিনিয়ার স্বায়ত্তশাসিত দ্বীপ অঞ্চলের একটি প্রদেশ। সার্ডিনিয়া হলো ইতালির মূল ভূখণ্ডের অদূরে বনে ঘেরা এক রুক্ষ দ্বীপ, যার সম্মুখে রয়েছে সুন্দর বালুকাময় সমুদ্র সৈকত।
এখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় মাথাপিছু শতবর্ষজীবী মানুষের সংখ্যা প্রায় দশগুণ বেশি। এমনকি নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে এই আয়ুর অনুপাত সমান।
নুরো নিবাসীদের প্রধান খাবার সেখানকার ঐতিহ্যগত ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্য। এই তালিকার বেশিরভাগই শস্যজাত, শাক-সবজি, দুগ্ধজাত দ্রব্য এবং একদম স্বল্প পরিমাণ মাংস।
আরও পড়ুন: শিশুকে ডেঙ্গু থেকে রক্ষার উপায়
পাহাড়ী দ্বীপ সার্ডিনিয়ার মানুষেরা গাড়ির বদলে পায়ে হেটেই বেশি পাহাড়ী পথসহ অন্যান্য রাস্তাগুলো অতিক্রম করে। এখনও সেখানকার অধিকাংশ অধিবাসীদের মেষ চড়াতে দেখা যায়। অফিস থেকে লোকেরা সরাসরি বাড়িতে এসে পরিবারের সঙ্গে দুপুরের খাবার খায়।
সার্ডিনিয়ানরা পরিমিত পরিমাণে অ্যালকোহল পান করে। স্থানীয় এই ওয়াইন ক্যানোনৌ বা গ্রেনেচ নামে পরিচিত।
বিশ্বের শীর্ষ ১০ পুলিশ কুকুরের প্রজাতি
মানুষের প্রতি অকৃত্রিম বিশ্বাস আর ভালোবাসার পাশাপাশি বৈচিত্র্যময় ক্ষমতা শুধুমাত্র পোষা প্রাণীর থেকেও অধিক গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে কুকুরকে। আনুগত্যের সঙ্গে যখন এদের বিস্ময়কর বুদ্ধিমত্তা যোগ হয় তখন অনায়াসেই এরা মানুষের এমন সঙ্গীতে পরিণত হয়, যার কোনো বিকল্প হয় না। এদের মধ্যে বিশেষ কিছু কুকুরের অসাধারণ দক্ষতা রয়েছে। এগুলোকে সঠিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নানা ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ব্যবহার করা সম্ভব। অপরাধীদের পিছু ছোটা থেকে শুরু করে লুকানো মাদকদ্রব্য উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে এরা অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠে। এগুলোর মধ্য থেকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ১০টি পুলিশ কুকুরের জাত সম্বন্ধে আলোচনা করা হয়েছে এই নিবন্ধে। চলুন, যে বৈশিষ্ট্যগুলোর কারণে কুকুরগুলোকে অন্য সব প্রজাতিদের থেকে আলাদা- তা জেনে নেওয়া যাক।
পৃথিবীর ১০টি সেরা পুলিশ কুকুরের জাত
জার্মান শেফার্ড
১৮৯৯ সাল থেকে বিভিন্ন জার্মান কুকুর ব্যবহার করে এই জাতটি তৈরি করেছিলেন ম্যাক্স ভন স্টেফানিৎস। সে সময় ভেড়া পালনের উদ্দেশ্যে তৈরি এই কুকুর পরে যেকোনো কিছু খুঁজে বের করা ও উদ্ধারসহ পুলিশের নানা কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যে অ্যালসেশিয়ান নামে বহুল পরিচিত এই জাত এমনকি যুদ্ধেও অংশ নিয়েছিল।
এই জাতের উচ্চতা পুরুষ কুকুরের ক্ষেত্রে ৬০ থেকে ৬৫ সেন্টিমিটার এবং স্ত্রী কুকুরের বেলায় ৫৫ থেকে ৬০ সেন্টিমিটার। পুরুষ জার্মান শেফার্ডের ওজন ৩০ থেকে ৪০ কেজি, আর স্ত্রী কুকুরের ওজন হয় ২২ থেকে ৩২ কেজি।
বিফ ওরফে ব্রায়ান নামের শেফার্ড ১৯৪৭-এর ২৯ মার্চ ১৩তম ল্যাঙ্কাশায়ার ব্যাটালিয়ান প্যারাট্রুপারদের কাজে সহায়তা করেছিল।
শেফার্ডরা এখনও সহায়ক ভূমিকা পালন করে মৃতদেহ অনুসন্ধান, মাদকদ্রব্য শনাক্তকরণ, বিস্ফোরক শনাক্তকরণ এবং মাইন শনাক্তকরণের কাজে।
বিশ্ব জুড়ে উচ্চ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অ্যালসেশিয়ান সরবরাহকারী প্রসিদ্ধ নিরাপত্তা পরিষেবা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো ডেনমার্কের এজেন্সি গার্ড ডগ পেট্রোল, ব্রিটিশ কোম্পানি আন্তর্জাতিক ভিআইপি বডিগার্ড (আইভিআইপিবি) লিমিটেড এবং যুক্তরাজ্যের স্পার্টা সিকিউরিটি গ্রুপ।
আরও পড়ুন: কেক ও বিস্কুট খাওয়ার ক্ষতিকর দিক: বিকল্প কিছু স্বাস্থ্যসম্মত পুষ্টিকর খাবার
বেলজিয়ান ম্যালিনোইস
শনাক্তকরণ, গার্ড, গাইডসহ নানা পুলিশি কর্মকাণ্ডের জন্য সহায়ক এই কুকুর বিভিন্ন নামে পরিচিত। সেগুলোর মধ্যে বেলজিয়ান শেপডগ, বেলজিয়ান শেফার্ড বা চিয়েন ডি বার্জার বেলজ নামগুলো সর্বাধিক পরিচিত।
এই জাতটি প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালনের পর থেকে আজ অবধি সামরিক কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
এই জাতের মধ্যে পুরুষ কুকুরগুলো সাধারণত ৬০ থেকে ৬৬ সেন্টিমিটার আর স্ত্রীগুলো ৫৬ থেকে ৬২ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। ওজনে একটি পুরুষ কুকুর ২৫ থেকে ৩০ কেজির কাছাকাছি আর স্ত্রী কুকুর প্রায় ২০ থেকে ২৫ কেজি পর্যন্ত হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিক্রেট সার্ভিস, ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর ওকেটজ ইউনিট, অস্ট্রেলিয়ান প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং ক্রুগার ন্যাশনাল পার্কের অ্যান্টি-পাচিং ক্যানাইন ইউনিট ম্যালিনোইসদের ব্যবহার করে থাকে।
অস্ট্রেলিয়ান আর্মিদের আফগানিস্তানে যুদ্ধের সময় একজন বিদ্রোহীকে বন্দি করার কাজে সহায়তার জন্য কুগা নামের ম্যালিনোইসকে ডিকিন পদক দেওয়া হয়।
ম্যালিনোইসদের মতো পুলিশ কুকুরদের পরিষেবা দানকারী প্রখ্যাত নিরাপত্তা সংস্থাগুলো হলো- যুক্তরাজ্যের আইভিআইপিবি ও আমেরিকার ইন্টিগ্রিটি কেনাইন পরিষেবা।
আরো পড়ুন: বিশ্বের সবচেয়ে দামি ১০ কফি
ব্লাডহাউন্ড
প্রখর ঘ্রাণশক্তি সম্পন্ন শিকারীদের মধ্যে হাউন্ডের কোনো জুড়ি নেই। হরিণ, বন্য শুয়োর, খরগোশ শিকারের জন্য এদের প্রজনন শুরু হয়েছিল সেই মধ্যযুগে।
সর্বপ্রথম কে এই জাতটি তৈরি করেছিল তা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। কিন্তু আনুমানিক ১০০০ খ্রিস্টাব্দে বেলজিয়ামের সেন্ট-হুবার্ট মঠে সন্ন্যাসীদের হাতে এর প্রথম জাতের জন্ম।
এখনও সারা বিশ্বে হাউন্ডদের ব্যবহার করা হয় আইন প্রয়োগকারীদের পলায়নরত বন্দি, নিখোঁজ ব্যক্তি ও হারিয়ে যাওয়া পোষা প্রাণীদের খুঁজে বের করতে।
একটি পুরুষ হাউন্ডের ওজন ৪৬ থেকে ৫৪ কেজি এবং স্ত্রী হাউন্ডের ওজন হয়ে থাকে ৪০ থেকে ৪৮ কেজি। পুরুষ কুকুর উচ্চতায় ৬৪ থেকে ৭২ সেস্টিমিটার হয়, যেখানে স্ত্রী কুকুরগুলো ৫৮ থেকে সর্বোচ্চ ৬৬ সেস্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।
ইউএস আর্মির ৬১৫-তম মিলিটারি পুলিশ কোম্পানির মাসকট হলো একটি ব্লাডহাউন্ড। আইভিআইপিবি প্রতিষ্ঠান উচ্চ প্রশিক্ষিত ব্লাডহাউন্ড সরবরাহ করে থাকে।
আরো পড়ুন: বিশ্বের সেরা ১০ মনোমুগ্ধকর জলপ্রপাত
বক্সার
জার্মানিতে গড়ে ওঠা এই ম্যাস্টিফ জাতটি তৈরি করা হয়েছিল ওল্ড ইংলিশ বুলডগ এবং বর্তমানে বিলুপ্ত বুলেনবিসারের প্রজনন থেকে। বক্সাররা ব্র্যাচিসেফালিক হয়ে থাকে, অর্থাৎ এদের চওড়া অথচ ছোট মাথার খুলি থাকে।
একটি পুরুষ বক্সারের উচ্চতা ৫৬ থেকে ৬৪ সেন্টিমিটার আর স্ত্রী কুকুরের উচ্চতা ৫৩ থেকে ৬১ সেন্টিমিটার। পুরুষ বক্সার ওজনে ৩০ থেকে ৩২ কেজি হয়, অন্যদিকে স্ত্রী বক্সারের ওজন ২৫ থেকে ২৭ কেজির মধ্যে থাকে।
ধৈর্যশীলতা, শিশুদের প্রতি উৎসাহী ও সুরক্ষামূলক হওয়ার কারণে বক্সাররা বাচ্চাদের সঙ্গে খুব তাড়াতাড়ি সখ্য করে নিতে পারে।
সামরিক সংঘাতে দায়িত্ব পালনের সময় বীরত্বের জন্য পাঞ্চ ও জুডি নামে বক্সার জুটিকে ডিকিন পদক দেওয়া হয়েছিল। আইভিআইপিবির পুলিশ কুকুর সেবার মধ্যে এই বক্সাররাও আছে।
আরো পড়ুন: মানুষের পরে পৃথিবীর সবচেয়ে বুদ্ধিমান ১০ প্রাণী
ডোবারম্যান পিনসার
১৮৯০ সালের দিকে লুই ডোবারম্যান নামে জার্মানির এক কর সংগ্রাহক তৈরি করেছিলেন এই কুকুরের জাতটি। দৃঢ়চেতা ও অনুগত ডোবারম্যান বুদ্ধিমান, সতর্ক ও রক্ষক কুকুর হিসেবে পরিচিত।
পুরুষ কুকুরগুলো যেখানে ৬৮ থেকে ৭২ সেন্টিমিটার, স্ত্রী কুকুরগুলো সেখানে ৬৩ থেকে ৬৮ সেন্টিমিটারের হয়ে থাকে। পুরুষ ডোবারম্যানের আদর্শ ওজন ৪০ থেকে ৪৫ কেজি এবং স্ত্রীগুলো ৩২ থেকে ৩৫ কেজির হয়ে থাকে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রহরী কুকুর হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার পর থেকে এরা জনপ্রিয় হতে শুরু করে।
ক্যাপি নামের ডোবারম্যান জাপানি সৈন্যদের ব্যাপারে সতর্ক করে জীবন বাঁচিয়েছিল ২৫০ জন মার্কিন মেরিনদের। যুদ্ধে নিহত হওয়া কুকুরদের মধ্যে প্রথম সমাধিস্থ করা হয় কার্ট নামে এক ডোবারম্যানকে। সেটি পরে বিশাল এক সমাধি ক্ষেত্রে পরিণত হয়। সেখানকার স্মৃতিস্তম্ভে কার্ট ও ক্যাপিসহ আরও ২৩টি ডোবারম্যানের নাম খোদাই করা আছে।
আইভিআইপিবির নিরাপত্তা কুকুর পরিষেবায় এই কুকুরটিও অন্তর্ভুক্ত আছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বসেরা ১০ পিরামিড: চিরন্তন কিংবদন্তির খোঁজে
ধানমন্ডিতে চলছে ভাস্কর রাশার ড্রিফটউড শিল্পকর্মের প্রদর্শনী
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, নারীর ক্ষমতায়ন ও প্রকৃতিকে তুলে ধরে ভাস্কর আখতার আহমেদ রাশার ড্রিফটউড শিল্পকর্মের সপ্তাহব্যাপী একক প্রদর্শনী শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত সফিউদ্দীন শিল্পালয়ে এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্টুডিও ভার্টিক্যাল আয়োজিত এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর।
'শিকড়ে প্রোথিত, ভালোবাসায় প্রসারিত' শিরোনামের প্রদর্শনীটি দেশে রাশার প্রথম প্রদর্শনী। রাশা হলেন একজন প্রবাসী ভাস্কর যিনি শাখা, শিকড় ও কাণ্ডের মতো প্রাকৃতিক উপাদান শিল্পের জন্য ব্যবহার করেন।
আরও পড়ুন: কীভাবে এল বাংলা ক্যালেন্ডার: দিনলিপি গণনার ইতিবৃত্ত
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এর আগে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি, নিউ ইয়র্ক ও ওয়াশিংটন ডিসিতে বেশ কয়েকটি একক ও দলীয় প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন।
ভাস্কর রাশা বলেন, ‘আমি বাংলাদেশে আমার জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি এবং আটলান্টিক উপকূলের সৈকতে ড্রিফটউড সংগ্রহ করার মাধ্যমে প্রক্রিয়াটি শুরু হয়। আমি আনন্দিত। কারণ আমি মুক্তিযুদ্ধের দিকে মনোযোগ দিয়েছি, বিশেষ করে বিদেশে বাংলাদেশের বন্ধুদের জন্য।’
প্রদর্শনীতে ৫৩টি শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হচ্ছে। আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে এ প্রদর্শনী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন শিল্প সংগ্রাহক আবুল খায়ের লিটু।
আরও পড়ুন: গ্যালারি কসমসে শুরু হলো আর্টক্যাম্প ‘স্প্লেন্ডার্স অব বাংলাদেশ’
অ্যানির তৃতীয় একক প্রদর্শনী ‘কনটেম্পরারি ন্যারেটিভস’ এএফডিতে শুরু
কেক ও বিস্কুট খাওয়ার ক্ষতিকর দিক: বিকল্প কিছু স্বাস্থ্যসম্মত পুষ্টিকর খাবার
প্রায় সব বয়সের লোকেদেরই হাল্কা নাস্তা হিসেবে প্রিয় পছন্দ কেক ও বিস্কুট। জন্মদিন সহ বিভিন্ন উৎসবমুখর অনুষ্ঠানে সবচেয়ে ভালো লাগা উপহারগুলোর মাঝে অনায়াসেই জায়গা করে নেয় এই মিষ্টি জাতীয় খাবারগুলো। কিন্তু খাবারগুলো যে কতটা ক্ষতিকর তা দুঃখজনকভাবে সবার দৃষ্টি এড়িয়ে যায়। নিত্য দিনের খাদ্যাভাসে এই খাবার দু’টির উপস্থিতি দীর্ঘ মেয়াদে ভয়াবহ স্বাস্থ্যহানির কারণ হতে পারে। কিন্তু কেক ও বিস্কুটের বিকল্প হিসেবে এমন কিছু খাবার রয়েছে, যা নিমেষেই মুক্তি দিতে পারে সেই অনাকাঙ্ক্ষিত ঝুঁকি থেকে। চলুন, কেক ও বিস্কুট খাওয়ার ক্ষতিকর দিকগুলোর পাশাপাশি সেই বিকল্প পুষ্টিকর খাবারগুলোর ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
কেক ও বিস্কুট খেলে স্বাস্থ্যের যে ক্ষতি হয়
কেক ও বিস্কুট রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায়, কারণ এতে থাকে প্রচুর চিনি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অধিক পরিমাণে খাওয়া হলে চূড়ান্ত পর্যায়ে ডায়াবেটিস, স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগ হতে পারে।
এ ধরণের বেকারি পণ্যগুলোতে সাধারণত তরল উদ্ভিজ্জ তেল, মাখন, পাম এবং নারকেল তেল ব্যবহার করা হয়। ফলে, এগুলোতে থাকা চর্বিগুলো কম ঘনত্বের কোলেস্টেরল (এলডিএল) বাড়িয়ে দেয়। উল্লেখ্য, পাম তেল সস্তা এবং খাওয়ার জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকারক তেলগুলোর মধ্যে একটি। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্ষমতা কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
এছাড়া শর্করা এবং স্টার্চ সম্পন্ন খাবারের কারণে দাঁতে ক্যাভিটিস হতে পারে। কেক ও বিস্কুটের কার্বোহাইড্রেট এবং চর্বি ওজন বাড়াতে সহায়তা করে।
আরো পড়ুন: জবা ফুলের চা: গুণাগুণ, পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ও বানানোর পদ্ধতি
সাধারণ মিষ্টি বিস্কুটে প্রতি ২৫ গ্রামে শূন্য দশমিক ৪ গ্রাম লবণ থাকে। অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এছাড়া এতে দেহে পানির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, বিধায় শরীর ভরপুর অনুভূত হয় এবং ওজন বৃদ্ধি পায়।
এ ধরণের বেকারি পণ্যে থাকে বিউটিলেটেড হাইড্রোক্সাইনিসোল (বিএইচএ) এবং বুটিলেটেড হাইড্রোক্সিটোলুইন (বিএইচটি)। এগুলো হলো প্রিজার্ভেটিভস যা মানুষের রক্তের জন্য ক্ষতিকর।
কীভাবে এল বাংলা ক্যালেন্ডার: দিনলিপি গণনার ইতিবৃত্ত
বাংলা ক্যালেন্ডার বা বাংলা বর্ষপঞ্জি। নামটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাঙালির হাজার বছরের সংস্কৃতি ও আবেগ। প্রাচীনকাল থেকে তদানীন্তন পদ্ধতিগুলোর স্পর্শে বাঙালির দিনলিপির গণনা সমূহ বিবর্তনের সাক্ষী হয়েছে। জুড়ে গেছে নানা অঞ্চলের নানা রীতি। জীবনের বিশেষ দিবসগুলোর হিসাব রাখার তাগিদে ভিন্ন রূপ পেয়েছে বাংলা পঞ্জিকা।কিন্তু এর শুরুটা কোথায়, কীভাবে এল বাংলা ক্যালেন্ডার! চলুন, বিবর্তনের সময়রেখা থেকে খুঁজে নেওয়া যাক সেই বাংলা বর্ষপঞ্জির ইতিহাস।
বাংলা বর্ষপঞ্জি ধারণার প্রাচীনতম বিকাশ
জ্যোতির্বিজ্ঞানের বিভিন্ন হিসাব-নিকাশ করার জন্য সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ছিল স্বতন্ত্র বর্ষপঞ্জি পদ্ধতি। তাদের ছয়টি বেদাঙ্গের একটির নাম ছিল জ্যোতিষ। এই শাস্ত্র মতে বৈদিক প্রথাগত বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করা হতো।
রাজা বিক্রমাদিত্য প্রবর্তিত বিক্রমীয় বর্ষপঞ্জিকা চালু হয়েছিল ৫৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে। বিক্রমাদিত্য নামের এই ক্যালেন্ডার অনুসরণ করা হতো ভারত ও নেপালের বিভিন্ন রাজ্যের গ্রামগুলোতে।
একদম প্রথম দিকে হিন্দু পণ্ডিতদের মধ্যে সময় গণনার সবচেয়ে প্রসিদ্ধ পদ্ধতি ছিল চাঁদ-সূর্য ও গ্রহ পর্যবেক্ষণ। সংস্কৃতের জ্যোতির্বিদ্যার বিভিন্ন গ্রন্থে এর নিদর্শন পাওয়া যায়।
এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- পঞ্চম শতাব্দীতে আর্যভট্টের আর্যভট্টিয়া, ষষ্ঠ শতকে লতাদেবের রোমাক ও বরাহমিহিরের পঞ্চ সিদ্ধান্তিক, সপ্তম শতাব্দীতে ব্রহ্মগুপ্তের খন্ডখ্যাদ্যাক এবং অষ্টম শতাব্দীতে সিদ্ধাধিশ্যাক।
পৃথকভাবে বাংলা ভাষায় ক্যালেন্ডারের ধারণাটির সূত্রপাত ঘটেছিল সপ্তম শতাব্দীর হিন্দু রাজা শশাঙ্কের শাসনামলে। প্রাচীন নিদর্শন স্বরূপ দুটি শিব মন্দিরে পাওয়া যায় বঙ্গাব্দ শব্দটি, যার শাব্দিক অর্থ বাংলা সন। মন্দির দুটির বয়স মুঘল আমলের থেকেও বহু শতাব্দীর পুরোনো।
দশম শতাব্দীর মাঝামাঝিতে সম্পন্ন হয়েছিল সূর্যসিদ্ধান্ত গ্রন্থটি। এটি গ্রহ-নক্ষত্রের মাধ্যমে সময় গণনা পদ্ধতির গ্রন্থগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী। এই সংস্কৃত গ্রন্থে লিপিবদ্ধ পদ্ধতি এখনও অনুসরণ করা হয় পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা ও ঝাড়খণ্ডের মতো ভারতীয় রাজ্যগুলোতে।
এই সূর্যসিদ্ধান্তেই সর্বপ্রথম বাংলা বছরের প্রথম মাস হিসেবে বৈশাখ শব্দটি উল্লেখ করা হয়।
অবশ্য ত্রয়োদশ শতাব্দীর আগে বাংলার রাজবংশগুলোর মধ্যে দেখা যায় বিক্রমাদিত্যের ব্যবহার। পালদের শাসনামলে বৌদ্ধ গ্রন্থ ও শিলালিপিতে পাওয়া যায় আশ্বিন ও বিক্রম নামের মাসগুলো।
আরো পড়ুন: বাংলা নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রার ইতিহাস: রূপরেখায় অপশক্তির অবসান কামনায় শান্তি মিছিল
বর্তমান বাংলা ক্যালেন্ডারের প্রবর্তন
বাংলার সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহের রাজত্বকাল ছিল ১৪৯৪ থেকে ১৫১৯ সাল পর্যন্ত। বাংলার মুসলিম শাসকদের মধ্যে বাংলা বর্ষপঞ্জি তৈরির ব্যাপারে মুঘল সম্রাট আকবরের পাশাপাশি তার নামটিও শোনা যায়।
হিজরি অনুসারে বাঙালিদের থেকে ভূমি কর আদায়ের রীতিটি ছিল মুঘল শাসনামলেও। চান্দ্র বর্ষপঞ্জি ও সৌর কৃষি চক্রের মাঝে বেশ অসঙ্গতি ছিল। মুঘল সম্রাট আকবর ফসল কাটার কর বছরের সমস্যা সমাধানের জোর তাগিদ অনুভব করেন। তিনি চান্দ্র বর্ষপঞ্জি ও সৌর বর্ষপঞ্জির সমন্বয়ে নতুন বর্ষপঞ্জিকা তৈরির সিদ্ধান্ত নেন। এই কাজের দায়িত্ব অর্পণ করা হয় রাজ্যের প্রধান জ্যোতির্বিজ্ঞানী ফতুল্লাহ শিরাজির উপর।
নতুন নির্মিত পঞ্জিকার নাম ছিল তারিখ-ই-ইলাহি। এখানে জুলাই থেকে পরবর্তী বছরের জুন মাস পর্যন্ত ১২ বছরের সময়ের নাম দেওয়া হয় ফসলি সন। আর এরই ভিত্তিতে তারিখ-ই-ইলাহিকে ফসলি বর্ষপঞ্জিও বলা হতো।
পরে মুঘল গভর্নর নবাব মুর্শিদ কুলি খান সম্রাট আকবরের এই নীতি সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন পুন্যাহের হিসাব পরিচালনার জন্য। পুন্যাহ হচ্ছে প্রজাদের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভূমি কর আদায়ের দিন।
এখানে চান্দ্র ও সৌর বর্ষপঞ্জির সংমিশ্রণটি আলাউদ্দিন হোসেন শাহ ও আকবরের মধ্যে আসলে কে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন- তা নিয়ে বেশ দ্বিমত আছে। অবশ্য আকবরের মুঘল দরবার ছাড়া ভারতের অন্যত্র এই পদ্ধতি তেমন একটা ব্যবহৃত হয়নি। এমনকি তার মৃত্যুর পর বর্ষপঞ্জিটি পরিত্যক্ত হয়ে যায়।
মাসের দিনগুলোর প্রতিটির আলাদা আলাদা নাম ছিল তারিখ-ই-ইলাহি’র একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য। মাসগুলোর নামও ছিল বর্তমান নাম থেকে ভিন্ন।
আকবরের নাতি শাহজাহান গ্রেগরীয় ক্যালেন্ডারের মতো রবিবার থেকে সপ্তাহ শুরুর প্রক্রিয়াটি প্রচলন করেন। এ সময় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে সংস্কার আসে তারিখ-ই-ইলাহি’তে। সৌরচান্দ্রিক বা শক বর্ষপঞ্জির মাসের নামের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এখানকার মাসগুলোর নামে পরিবর্তন আনা হয়। শক পঞ্জি মূলত সৌর ও চান্দ্র বর্ষপঞ্জির সমন্বিত রূপ, যার প্রতিটি বছরকে বলা হয় শক সাল বা শকাব্দ।
প্রতিটি দিনের ভিন্ন নামের বদলে গ্রেগরীয় ক্যালেন্ডারের মতো শুধুমাত্র সাত দিনের সপ্তাহ ঠিক করা হয়। আর এটিই হচ্ছে বর্তমানে বাংলাদেশে ব্যবহৃত বাংলা ক্যালেন্ডারের মূল ভিত্তি।
আরো পড়ুন: বিশ্বসেরা ১০ পিরামিড: চিরন্তন কিংবদন্তির খোঁজে
সময়ের সঙ্গে বাংলা বর্ষপঞ্জির বিবর্তন
ভারতবর্ষে বর্ষপঞ্জির বিকাশ
১৯৫৭ সালের ২২ মার্চ ভারতে নতুনভাবে সংস্কার করা জাতীয় বর্ষপঞ্জির প্রচলন হয়। বিভিন্ন রাজ্যসহ কেন্দ্রের সর্বত্রে গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জীর সঙ্গে এটি ব্যবহার করা হতে থাকে। এতে সূর্য সিদ্ধান্ত-এর নিরয়ণ বর্ষ গণনা রীতির বদলে আনা হয় সায়ন সৌর পদ্ধতি এবং প্রতিটি মাসের দৈর্ঘ্য স্থির রাখা হয়। সেই সঙ্গে জ্যোতি পদার্থবিদ্যার ভিত্তিতে রাখা হয় কিছু প্রস্তাবনা। সেগুলো ছিল-
বৈশাখ থেকে ভাদ্র প্রথম পাঁচ মাসের জন্য ৩১ দিন করার। পরবর্তী সাত মাস, তথা- আশ্বিন থেকে চৈত্র মাসের জন্য ৩০ দিন করার এবং লিপ-ইয়ার বা অধিবর্ষের বেলায় ৩১ দিনে চৈত্র মাস গণনার।
প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়িত না হওয়ায় এগুলোর ভিত্তিতেই নতুন আরেকটি প্রস্তাবনা দেওয়া হয়। সেখানে ১৪ এপ্রিলকে বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন নির্ধারণ করার কথা উল্লেখ ছিল।
বাংলাদেশে বাংলা ক্যালেন্ডার সংস্কার
১৯৬৩ সালে ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহর নেতৃত্বে গঠিত শহীদুল্লাহ কমিটির পক্ষ থেকে রাত ১২টার পর থেকে তারিখ পরিবর্তনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। এর আগে নতুন তারিখ হিসাব করা হতো সূর্যোদয়ের সঙ্গে। প্রস্তাবটি মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশ কর্তৃক গৃহীত হয় ১৯৮৭ সালে। সে অনুসারে ১৯৮৮-৮৯ অর্থবছরে নির্দেশনাও দেওয়া হয় বাংলা দিনপঞ্জিকা বানানোর। কিন্তু কিছু জটিলতার কারণে তা বাধাগ্রস্ত হয়।
বাংলা ক্যালেন্ডারকে আরও বিজ্ঞানভিত্তিক করার উদ্দেশ্যে ১৯৯৫ সালের ২৬ জুলাই একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। ভাষা, গণিতজ্ঞ, পদার্থবিজ্ঞানী ও বিভিন্ন সংস্কৃতিজনদের এই কমিটির প্রধান ছিলেন বাংলা একাডেমির তৎকালীন মহাপরিচালক হারুন-উর-রশিদ। এই কমিটির পক্ষ থেকে আরও ২০টি প্রস্তাবনা দেওয়া হয়।
এগুলোর মধ্যে একটি ছিল চৈত্রের বদলে ফাল্গুন মাসকে লিপ-ইয়ারের মাস হিসেবে ঠিক করা। সেখানে উল্লেখ ছিল যে, গ্রেগরীয় ক্যালেন্ডারে লিপ-ইয়ারের ফেব্রুয়ারি মাসকে অনুসরণ করে বাংলা বর্ষপঞ্জিকার ফাল্গুন মাসে ৩০ দিনের জায়গায় হবে ৩১ দিন।
আরো পড়ুন: একুশে বইমেলার শিকড়ের সন্ধান
এতে দেখা যায়-
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ সালে ৮ ফাল্গুন হলেও, ২০১৫ সালে তা হয়ে যাচ্ছে ৯ ফাল্গুন। এ ছাড়া আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিবস নিয়ে অসমাঞ্জস্যতা ধরা পড়ে।
ফলে জাতীয় দিবসগুলোকে ঠিক করার লক্ষ্যে ২০১৫ সালে তৃতীয়বারের মতো গঠিত হয় আরও একটি কমিটি। এখানে সভাপতি হিসেবে ছিলেন বাংলা একাডেমির তৎকালীন মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান।
কমিটির অন্যরা ছিলেন- একাডেমির পরিচালক অপরেশ কুমার ব্যানার্জি, পদার্থবিজ্ঞানী জামিল চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক অজয় রায়, অধ্যাপক আলী আসগর।
তাদের প্রস্তাব ছিল-
- প্রথম ছয় মাস; তথা- বৈশাখ থেকে আশ্বিন মাস হবে ৩১ দিনে।
- কার্তিক থেকে মাঘ এবং চৈত্র এই পাঁচ মাস হবে ৩০ দিনে।
- শুধু ফাল্গুন মাস গণনা হবে ২৯ দিনে।
- অধিবর্ষের বছরে ফাল্গুন মাসে একদিন যোগ করে গণনা করা হবে ৩০ দিনে।
এই প্রস্তাবটি চূড়ান্তভাবে গৃহীত হয়ে সে অনুসারে ২০১৯ সালে বাংলাদেশে তৈরি হয় সরকারি বর্ষপঞ্জি। আর এটিই বর্তমানে চালু আছে বাংলা বর্ষপঞ্জি হিসেবে।
আরো পড়ুন: বাংলাদেশের শীর্ষ ১৫টি ঐতিহ্যবাহী স্থান
পরিশিষ্ট
দেয়ালে ঝুলানো কাগুজে দিনপঞ্জির প্রতিটি সংখ্যা ও শব্দ মনে করিয়ে দেয় বাংলা বর্ষপঞ্জির ইতিহাস ও স্মৃতিময় দিনগুলোর কথা। দিনলিপি গণনার এই ইতিবৃত্ত জানিয়ে দিল যে, ওগুলো নিজেরাই এক সমৃদ্ধ ইতিহাসের ধারক।ভারতের ত্রিপুরা, আসাম ও পশ্চিমবঙ্গে এখনও অনুসরণ করা হয় পুরোনো বাংলা বর্ষপঞ্জি পদ্ধতি। যুগে যুগে ভিন্ন নাম পেলেও বাঙালি সম্প্রদায়ে সরব ছিল বাংলা বছর, মাস ও দিনের ধারণা। এর প্রভাব এখনও অটুট আছে ধর্মীয়, সামাজিক ও জাতীয় আনুষ্ঠানিকতায়। দিন ও সপ্তাহ সর্বস্ব বৈশাখ থেকে চৈত্র মাস এখন দ্বিধাহীন সময় হিসেবের নির্ভরযোগ্য মাধ্যম।
আরো পড়ুন: পহেলা বৈশাখ: বাংলা নববর্ষের উৎপত্তি এবং ইতিহাস
জাতীয় কবি নজরুলের ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য সর্বজন শ্রদ্ধেয় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী রবিবার (২৭ আগস্ট) সারাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হচ্ছে।
এছাড়াও ‘বিদ্রোহী কবি’ হিসেবে খ্যাত কাজী নজরুল ইসলামকে বাংলা সাহিত্যের একজন পথপ্রদর্শক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
তার ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে মহান কবির জীবন ও কর্ম স্মরণে।
সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কলা ভবন প্রাঙ্গণে অপরাজেয় বাংলায় জড়ো হন।
সেখান থেকে তারা শোভাযাত্রা সহকারে কবির কবর জিয়ারত, পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে আসরের নামাজের পর পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগও শোভাযাত্রা ও দোয়ার মাধ্যমে কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দলের পক্ষ থেকে কবির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
কাদের বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে বাধা হওয়ায় দেশ থেকে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে উৎখাত করতে জাতীয় কবির আদর্শে আবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: রবিবার জাতীয় কবি কাজী নজরুলের ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী
বিএনপির প্রবীণ নেতা রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দলও বিদ্রোহী কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানট সন্ধ্যা ৭টায় ধানমন্ডির নিজস্ব মিলনায়তনে বিশেষ শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। অনুষ্ঠানটি একই সঙ্গে তাদের ফেসবুক গ্রুপ ও ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার করা হবে।
বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ (বিটিভি) বেশ কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেল, বাংলাদেশ বেতার সহ রেডিও স্টেশন এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্ম জাতীয় কবির জীবন ও কর্মের স্মরণে বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে।
কাজী নজরুল ইসলাম ১৮৯৯ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানের চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। এ ছাড়া নজরুল তৎকালীন ভারতীয় উপমহাদেশে তার বিপ্লবী এবং দর্শনীয় সাহিত্যকর্মের জন্য ব্যাপকভাবে সম্মানিত।
কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, নজরুলের ২১ বছরের সাহিত্যিক জীবনে তিনি ২ হাজার ৬০০টি গান, ৬০০টি কবিতা, ৩টি বই এবং ৪৩টি প্রবন্ধ তৈরি করেছিলেন।
শৈশবে বাবা মারা গেলে পরিবারের দায়িত্ব নিতে হয় নজরুলকে। এ কারণে মসজিদে তত্ত্বাবধায়ক ও মুয়াজ্জিন হিসেবে কাজ করতে হয়েছিল তাকে। পশ্চিমবঙ্গের চুরুলিয়ায় একটি পেশাদার ‘লেটো’ গানের দলে কাজ করার জন্য ৯ বছর বয়সে স্কুল ছেড়েছিলেন তিনি।
দলটির সঙ্গে কাজ করার সময় তিনি বাংলা ও সংস্কৃত সাহিত্যের সঙ্গে পরিচিত হন। এক বছর পরে তিনি আবার স্কুলে যান এবং মাথারুন ইংলিশ স্কুলে ভর্তি হন। কিন্তু তার আর্থিক দুরবস্থার কারণে তিনি ষষ্ঠ শ্রেণিতে আরও একবার বাদ পড়েন।
কিছু সময় পর পুলিশ অফিসার কাজী রফিজুল্লাহ তাকে নিয়ে ময়মনসিংহের ত্রিশালে তার বাড়ির কাছে দরিরামপুর স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি করান।
১৯৭১ সালে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে তার সামরিক চাকরি শুরু করার কয়েক বছরের মধ্যে নজরুল তার সাহিত্যিক জীবন শুরু করেন।
তিনি ১৯২১ সালে তার কালজয়ী কবিতা ‘বিদ্রোহী’ (দ্য রিবেল) লেখেন এবং ১৯২২ সালে ‘ধূমকেতু’ (দ্য ধূমকেতু) একটি মাসিক পত্রিকা প্রতিষ্ঠা করেন।
আরও পড়ুন: স্মরণে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম
ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনে ঘন ঘন জাতীয়তাবাদী জড়িত থাকার কারণে নজরুল ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের খপ্পরে পড়েন। তিনি কারাবন্দি থাকা অবস্থায় ‘রাজবন্দীর জবানবন্দী’ (একজন রাজনৈতিক বন্দির জবানবন্দি) লেখেন।
তার কাজগুলো পরে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকে অনুপ্রাণিত করেছিল এবং তার কবিতাগুলো অনেক বাঙালি ও জাতীয়তাবাদীকে পাকিস্তানের অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে অনুপ্রাণিত করেছিল।
স্বাধীনতা, মানবতা, প্রেম ও বিপ্লব নজরুলের অসাধারণ সাহিত্য বার বার এসেছে। তিনি মৌলবাদ ও সব ধরনের বর্ণ, লিঙ্গ ও ধর্মীয় কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ছিলেন।
নজরুল ছোটগল্প, উপন্যাস ও প্রবন্ধও প্রকাশ করেছেন। যদিও তার গান ও কবিতা সমালোচকদের কাছ থেকে সর্বাধিক প্রশংসা পেয়েছে। তিনি তার লেখায় আরবি ও ফারসি শব্দের উদার ব্যবহার এবং বাংলা গজল সুর জনপ্রিয় করার জন্য বিখ্যাত।
তিনি ‘নজরুল গীতি’ নামে পরিচিত তার নিজস্ব সংগীত ধারা আবিষ্কার করেছিলেন। যার মধ্যে অনেকগুলো ভিনাইল ও এইচএমভি রেকর্ডে প্রকাশিত হয়েছিল।
নজরুল যখন ৪৩ বছর বয়সে একটি অজ্ঞাত রোগে ভুগছিলেন এবং ১৯৪২ সালে তিনি তার কণ্ঠস্বর এবং স্মৃতিশক্তি হারাতে শুরু করেন।
ভিয়েনার একটি মেডিকেল টিম বলে তার রোগটি ছিল ‘পিকস ডিজিজ’। একটি বিরল ও মারাত্মক নিউরোডিজেনারেটিভ রোগ।
বাংলাদেশ সরকার এবং তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমন্ত্রণে নজরুলের পরিবার বাংলাদেশে চলে আসেন এবং ১৯৭২ সালে ঢাকায় স্থায়ী হন। একই বছর বাংলাদেশ সরকার তাকে ‘জাতীয় কবি’ খেতাবে ভূষিত করেন।
বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে তার অবদানের জন্য তিনি ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সম্মানসূচক ডিলিট এবং ১৯৭৬ সালে একুশে পদক লাভ করেন।
১৯৭৬ সালের ২৭ আগস্ট বিদ্রোহী কবি ঢাকায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের একটি মসজিদের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।
আরও পড়ুন: নজরুলকে ‘জাতীয় কবি’ ঘোষণার গেজেট প্রকাশের দাবিতে রিট