নিজেদের খেলোয়াড়ি পরিচয় ধরে রেখেই ফ্রান্সের মোকাবিলা করে ফাইনালে উঠতে চান বলে জানিয়েছেন স্পেন কোচ লুইস দে লা ফুয়েন্তে।
৬৩ বছর বয়সী এই কোচের ছোঁয়ায় বদলে গেছে স্পেনের ফুটবল শৈলী। ছোট ছোট পাসের তিকিতাকার পরিবর্তে এখন বল নিয়েই আক্রমণে ওঠার দর্শনে বিশ্বাসী তার দল। এই কাজে সাফল্য পেতে যা দরকার, শিষ্যদের মাঝে দারুণভাবে সেই ভাতৃত্ববোধের বিকাশ করেছেন তিনি।
দলীয় পারফর্ম্যান্সে মুগ্ধ করে দেওয়ায় চলতি ইউরো আসরের শুরু থেকেই প্রশংসা কুড়াচ্ছে স্পেন। ফুটবলপাড়ায় দলটিকে অনেকে ডাকছেন ‘ব্যান্ড অব ব্রাদার্স’ নামে। স্পেনের খেলোয়াড়দের মুখেও সতীর্থদের একে অপরের পাশে থাকার প্রত্যয় ঝরেছে বারংবার।
অন্যদিকে, রক্ষণশীল আর ধারহীন ফুটবল খেলায় প্রবল সমালোচনায় পড়েছে দিদিয়ের দেশমের ফ্রান্স। ওপেন প্লে থেকে এখন পর্যন্ত কোনো গোল আদায় করতে পারেনি তার দল। পেনাল্টি ও আত্মঘাতী গোলের কল্যাণে সেমিফাইনাল পর্যন্ত উঠেছে গেছে ফ্রান্স।
তবে সেমিফাইনালের আগে প্রতিপক্ষের প্রতি এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি রাখতে নারাজ দে লা ফুয়েন্তে।
আরও পড়ুন: স্বর্গীয় ফুটবল উপহার দিয়েও নিয়তি মানতে হলো জার্মানির
মঙ্গলবার রাত একটায় ইউরোর সেমিফাইনালের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামছে ফ্রান্সও স্পেন।
এসময় নিজের দলের ইতিবাচক পরিবর্তনের কথাও স্বীকার করেছেন তিনি।
ম্যাচের আগে এক সংবাদ সম্মেলনে দে লা ফুয়েন্তে বলেন, ‘স্পেন বর্তমানে একটি চোখ-ধাঁধানো দল- তা আমি অস্বীকার করব না। এটিই আমাদের ডিএনএ। তবে দিনশেষে জয়টাই বড়। আমরা অবশ্যই খেলতে চাই, তবে বাস্তবতার নিরিখে আমরা সবদিক বিবেচনা করি।’
‘আমরা এমন এক গেমপ্ল্যান তৈরি করি যা আমাদের জিততে সগযোগিতা করে। তবে সুন্দর ও আনন্দদায়ক ফুটবলের কথা মাথায় রেখেই আমরা খেলার মডেলটি দাঁড় করাই।’
‘ফলাফল পাওয়ার জন্যই নজরকাড়া ফুটবল খেলার চেষ্টা করি আমরা। এই পর্যায়ে (ফাইনালে উঠতে) ফলাফলটিই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর মাধ্যমেই দিনশেষে আপনার কাজের বিচার ও মূল্যায়ন হবে।’
আরও পড়ুন: বিরল কীর্তিতে রোনালদোর পাশে বসলেন ইয়ামাল
অপরদিকে, নিজের দলকে সমালোচনার জন্য সমালোচকদের একহাত নিয়েছেন ফ্রান্স কোচ দেশম।
তিনি বলেছেন, যাদের কাছে ফ্রান্সের ফুটবল বিরক্তিকর মনে হয়, তাদের অন্য কিছুর প্রতি নজর দেওয়া উচিৎ।
সমালোচকদের সঙ্গে একমত নন দে লা ফুয়েন্তেও। তিনি বলেন, ‘আমি (ফ্রান্স দলে) যা দেখি, তা হচ্ছে- দলটির সামর্থ্য। ফ্রান্সে খুব উঁচুমানের খেলোয়াড় রয়েছে। দল হিসেবেও তারা দুর্দান্ত।’
‘তারা যা (যেভাবে খেলতে) চায়, তা দেখে আপনার ভালো নাও লাগতে পারে। তবে আমি কখনও বিরক্ত হই না।’
সেমিফাইনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে একাদশের গুরুত্বপূর্ণ তিন খেলোয়াড়কে পাচ্ছেন না স্প্যানিশ কোচ। লাল কার্ড ও দুই ম্যাচে দুই হলুদ কার্ড দেখে ফ্রান্সের বিপক্ষে খেলতে পারবেন না রক্ষণ সামলানো দানি কারভাহাল ও রবিন লে নরমান্দ। এছাড়া হাঁটুর চোটে ছিটকে গেছেন মাঝমাঠে প্রাণভোমরা পেদ্রিও।
আরও পড়ুন: ক্রুসের ফাউলে ইউরো শেষ পেদ্রির
তাছাড়া, কোয়ার্টার ফাইনালের হাড়ভাঙা খাটুনির পর শারীরিক সক্ষমতা ফেরাতেও যথেষ্ট সময় পায়নি দলটির খেলোয়াড়রা। এ বিষয়ে দে লা ফুয়েন্তে বলেন, ‘ভ্রমণ, মানসিক চাপ ও খেলা বিবেচনায় ছেলেরা মোটামুটি তরতাজা হয়ে উঠেছে। তবে তারা এ ধরনের অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যেতে অভ্যস্ত, ফলে তারা সেভাবেই মানসিক প্রস্তুতি নিচ্ছে।’