যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জের খালিয়া গ্রামের মাঠে মাঠে সারিবদ্ধভাবে বসে বাটি-ডালা হাতে নিয়ে ‘সাদা সোনা’ খ্যাত রসুন রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।
জানা গেছে, প্রায় পাঁচ যুগেরও বেশি সময় ধরে এ গ্রামের মাঠে মাটে রসুন চাষ হয়ে আসছে। অনেক পরিবার রসুন চাষের মাধ্যমে তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করেছেন। ভূমিহীন চাষিরা অন্যের জমি বর্গা নিয়েও রসুন চাষ করে থাকেন।
সোমবার সকালে সরেজমিনে রাজগঞ্জের ঝাঁপা ইউনিয়নের খালিয়া গ্রামের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, চাষিরা সারিবদ্ধভাবে বসে রসুন রোপন করছেন। এই গ্রামের মাঠগুলোতে মূলত বাণিজ্যিক ভিত্তিতে রসুন চাষ করা হয়।
বর্ষা মৌসুমের পরপরই সাধারণত কার্ত্তিক মাসের শুরুতে রসুনের বীজ রোপন করা হয়। দীর্ঘ পরিচর্যার পর ফাল্গুন মাসের শেষ দিকে জমি থেকে রসুন তোলা শুরু হয়। দেশি জাতের রসুন বাড়িতেই বীজ তৈরি করে সংরক্ষণ করে থাকেন এখানকার চাষিরা। প্রতিটি বীজ রসুন থেকে ২০/২৫টা বীজ রোপন করা যায়।
আরও পড়ুন: ন্যায্যমূল্য ও সংরক্ষণ ব্যবস্থা নিশ্চিতের দাবি ফরিদপুরের পেঁয়াজ চাষিদের
বিঘা প্রতি প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ মণ রসুন উৎপাদন করে থাকেন তারা। রসুন আহরনের মৌসুমে বাজারে দাম প্রতি কেজি প্রায় ৪০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি করেন তারা।
চাষি আব্দুল হালিম জানান, এবছর প্রায় আড়াই বিঘা জমিতে রসুন রোপন করেছেন। বিঘা প্রতি তার ৩০ হাজার টাকার মতো খরচ হবে। প্রতি বিঘা জমি হতে তিনি প্রায় ৬০ হাজার টাকার বেশি রসুন বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাবাদী তিনি। অনেকে আবার জমি লিজ নিয়ে রসুন চাষ করেছেন।
চাষিরা জানান, রসুন বিক্রি করতে আমাদের মোকামে যেতে হয় না। স্থানীয় রাজগঞ্জ বাজারে বিভিন্ন এলাকা থেকে বেপারীরা রসুন কিনতে আসেন। সেখান থেকে ট্রাক বোঝাই হয়ে এখানকার রসুন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলে যায়।
আরও পড়ুন: খামারিরা বিপদে, খুলনায় ১০ লাখ মুরগি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত
স্থানীয় ইউনিয়ন কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্র জানায়, রাজগঞ্জের খালিয়া গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে রসুন উৎপাদিত হয়। বহু বছর ধরে এখানকার চাষিরা খেত থেকেই বাছাই করে বীজ সংরক্ষণ করে পরবর্তীতে রোপন করেন। গুনে মানে উৎকৃষ্ট হওয়ায় স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে এর চাহিদাও রয়েছে অনেক।