বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১০টায় জেলা দায়রা ও জজ আদালত (নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল) এর বিচারক মুন্সী মোঃ মশিয়ার রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- শহরের কালিশংকরপুর এলাকার গাফফার খানের ছেলে সাব্বির খান, হাউজিং এ ব্লকের আজম আলীর ছেলে হেলাল উদ্দিন ড্যানী ও ভেড়ামারা উপজেলার দশমাইল ক্যানেল পাড়ার মৃত মসলেম শেখের ছেলে আব্দুর রহিম শেখ ওরফে ইপিয়ার।
রায় ঘোষণার সময় প্রধান আসামি সাব্বির খান উপস্থিত ছিলেন। বাকি দুই আসামি পলাতক রয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ২৩ মে সন্ধ্যায় কুষ্টিয়া শহরতলীর মোল্লাতেঘরিয়া পূর্বপাড়া এলাকা থেকে জিলা স্কুলের ৮ম শ্রেণির মেধাবী ছাত্র হৃদয়কে দুর্বৃত্তরা অপহরণ করে। অপহরণের চারদিন পর হৃদয়ের মা তাসলিমা খাতুনের কাছে ফোন করে মুক্তিপণ হিসাবে ১২ লাখ টাকা দাবি করে তারা।
পরবর্তীতে বহু দেন-দরবার শেষে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণের বিনিময়ে অপহরণকারীরা হৃদয়কে ছেড়ে দিতে সম্মত হয়। অপহরণকারীদের কথামত ২ জুন গোপনে নির্দিষ্ট স্থানে ২ লাখ টাকা পৌঁছে দেয় হৃদয়ের মা তাসলিমা খাতুন।
কিন্তু ছেলেকে ফেরত না পেয়ে হৃদয়ের মা বাদী হয়ে কুষ্টিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ২০০০’র ৭/৮ ধারা আইনে মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনায় পুলিশ ১০ জনকে আটক করে। আটকদের তথ্যনুযায়ী ৩রা অক্টোবর সন্ধ্যায় সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে কুষ্টিয়া হাউজিং এলাকা থেকে আজব আলীর ছেলে অপহরণকারী হেলাল উদ্দীন ওরফে ড্যানীকে আটক করে পুলিশ। পরে সে হৃদয়কে অপহরণ ও হত্যার স্বীকারুক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়।
তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভেড়ামারা-কুষ্টিয়া মহাসড়কের ১০ মাইল নামক স্থানে ফখরুলের ইটভাটার পাশে মিজানুর রহমানের জমি থেকে স্কুলছাত্র মুতাসসিম বিন মাজেদ ওরফে হৃদয় অপহরণের ১৩৪ দিন পর তার পুতে রাখা গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
কুষ্টিয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট আকরাম হোসেন দুলাল জানান, পুলিশের দেয়া তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ ও শুনানি শেষে আসামিরা জড়িত থাকায় আজ এই রায় ঘোষণা করলেন আদালত।