জামায়াত-শিবিরের ‘সন্ত্রাসীরা কোটা সংস্কার আন্দোলনে প্রথমে আড়ালে ছিল’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'শেষ পর্যন্ত তারা ভয়ংকর রূপ নিয়ে বের হয়ে সামনে এসেছে।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল মারিয়া সিস্তিয়াগা ওচোয়া দে চিনচেত্রুর সঙ্গে রবিবার (২৮ জুলাই) গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এম নাঈমুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
আরও পড়ুন: সহিংসতায় নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড হাসপাতাল, মেট্রোরেল, এক্সপ্রেসওয়ে, সেতু ভবন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন ও ডেটা সেন্টার হলো সরকারের সাফল্যের প্রতীক। এসব স্থাপনাতেই সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে।
তিনি বলেন, ' যেসব আমাদের সব উন্নয়নের প্রতীক, যেগুলো জনগণের জীবনযাত্রা সহজ করেছে এবং নানা সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে, সেগুলোকে ধ্বংসের লক্ষ্য বানিয়েছে তারা।’
পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনাবাহিনীর ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তাদের ধৈর্য ও সংযমের প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘সেনা সদস্যরা মাঠে সর্বোচ্চ ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের ২১ নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। দলীয় বিবেচনা না করে, যারাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, সবাইকে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখন সুপ্রিম কোর্টের স্থিতাবস্থার কারণে কোটা পদ্ধতি কার্যকরও ছিল না।
প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, ‘সে সময় তাদের দাবির যৌক্তিক ভিত্তি কী ছিল?’
সরকার হতাহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা এবং বিনামূল্যে চিকিৎসাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে নিশ্চিত করেন প্রধানমন্ত্রী।
এসময় রাষ্ট্রদূত চিনচেত্রু শান্তি ও সমৃদ্ধি বজায় রাখার জন্য সেনা মোতায়েন ও কারফিউ জারির প্রশংসা করেন।
তার বরাত দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব বলেন, রাষ্ট্রদূত বলেছেন যে এখন ধীরে ধীরে সবকিছুর উন্নতি হচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ‘আমি টেলিভিশনে সব দেখেছি কিন্তু ভাষার ভিন্নতার কারণে ঠিকমতো বুঝতে পারিনি। তাণ্ডবের কারণে ধ্বংসযজ্ঞের বিষয়টি খবরের কাগজ থেকে জানতে পারলাম।’
স্পেনের রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে কয়েকটি ক্ষতিগ্রস্ত স্থান পরিদর্শন করেন। গত ১৬ বছরে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের কথা উল্লেখ করেন তিনি।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে বাজেট বরাদ্দ জনকল্যাণে সরকারের অঙ্গীকারের প্রতিফলন উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'গত ১৬ বছরের উন্নয়ন একটি বাস্তব বিষয় যা যে কেউ যাচাই করতে পারে।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, 'অনেক দেশে এ ধরনের বাজেট সহায়তা নেই।’
বৈঠকে আরও ছিলেন অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ এম জিয়াউদ্দিন।
আরও পড়ুন: ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেল স্টেশন মেরামতে জাপানের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী