এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর বেঞ্চ এই রায় দেন। রায়ে ভবনের কার পার্কিংয়ের স্থানে দোকান বা অন্য কোনো স্থাপনা থাকলে তা এক মাসের মধ্যে অপসারণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
হাইকোর্ট বলেছে, ওইসব স্থাপনা সরিয়ে নিতে ভবন মালিকদেরকে এক মাসের সময় দিয়ে দুটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রচার করতে হবে। বিজ্ঞপ্তি প্রচারের পর ভবন মালিক যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে স্থাপনা অপসারণ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে রাজউক কার পার্কিংয়ের স্থানে যেসব স্থাপনা থাকবে তা অপসারণ করবে। আর এই অপসারণের সকল খরচ ভবন মালিকের কাছ থেকে আদায় করবে রাজউক।
রায়ে নোটিশের পাশাপাশি এলাকাভিত্তিক রাজউকের সংশ্লিষ্ট অফিসারদেরকে স্থাপনা অপসারণের বিষয়টি ভবন মালিককে জানাতে মাইকিং করতে বলা হয়েছে। কার পার্কিং থেকে যারা স্থাপনা অপসারণ করবে না তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতেও রাজউককে বলা হয়েছে। এছাড়া মহানগরের যেসব স্থানে কার পার্কিংয়ের অনুমতি নেই সেসব স্থানে কার পার্কিং বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে রায়ের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে তিন মাস অন্তর অন্তর একটি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে রাজউক ও সিটি করপোরেশনকে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ এবং রাজউকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. ইমাম হাসান।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, ঢাকা শহরে নির্মিত ভবনে কার পার্কিংয়ের জন্য জায়গা রাখা হলেও ভবন মালিকরা অতিরিক্ত অর্থ প্রাপ্তির আশায় তা অন্য বাণিজ্যিক কাজে বিশেষ করে দোকান ও গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করছে বা ভাড়া দিচ্ছে। ফলে গাড়িগুলো সড়কের ওপর বা ফুটপাতে রাখায় যানজট বাড়ছে। এ কারণে ২০১৫ সালে হাইকোর্টে একটি রিট করা হয়। তখন রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করে। রুল শুনানিকালে রাজউক গুলশান, বারিধারা, বনানী ও মহাখালী এলাকার যেসব ভবনের কার পার্কিংয়ের স্থান অননুমোদিতভাবে অন্য কাজে ব্যবহার করছে তার একটি তালিকা আদালতে দাখিল করে। ওই তালিকা অনুযায়ী এ ধরনের ভবনের সংখ্যা প্রায় তিনশত। সম্প্রতি ওই রুলের উপর চূড়ান্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে হাইকোর্ট রায় দেন।
রায়ের পর রাজউকের আইনজীবী ইমাম হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকা শহরে কোনো ভবন নির্মাণ করতে হলে আইনানুযায়ী রাজউক থেকে নকশা অনুমোদন করতে হয়। ওই নকশা অনুমোদনের ক্ষেত্রে অনেকগুলো শর্ত দেয়া থাকে। যার মধ্যে কার পার্কিং
অন্যতম। যদি কেউ নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে কার পার্কিংয়ের স্থান অন্য কাজে ব্যবহার করে তাহলে রাজউকের নকশা বাতিলের নির্দেশ দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে।
তিনি বলেন, হাইকোর্টের রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি পেলেই আমরা অ্যাকশনে যাব। এ ধরনের অভিযান আমরা পরিচালনা করছি। এ রায় আমাদের পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে আরও সহায়ক হবে।