৩৬ কোটি টাকার বেশি লুটপাট ও এ ঘটনায় পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুল আলমসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ সম্বলিত পৃথক দুটি প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর এ কথা জানান বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারর্দীর বেঞ্চ।
আদালত সুপ্রিম কোর্টের আসন্ন অবকাশের (অবকাশ চলবে ১ আগস্ট থেকে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত) এক সপ্তাহ পর এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে।
গত মে মাসে গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা যায়, রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের আবাসিক প্রকল্পে বালিশ কিনতে খরচ হয়েছে ৫ হাজার ৯৫৭ টাকা। আর একটি বালিশ ফ্ল্যাটে তুলতে খরচ হয়েছে ৭৬০ টাকা।
এমন সংবাদ প্রচারের পর ঝড় ওঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ২০ তলায় একটি বালিশ তুলতে ৭৬০ টাকার সেই খরচ হতবাক করে সবাইকে। এ ঘটনায় গত ১৯ মে স্বাধীন ও বিচারিক তদন্ত চেয়ে রিট করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন।
এ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ২০ মে নির্মাণাধীন ভবনে আসবাবপত্র ও আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র তোলার অস্বাভাবিক খরচ তদন্তে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন চেয়ে রিটের শুনানিও স্ট্যান্ডওভার (মুলতবি) রাখে হাইকোর্ট।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এ ঘটনার তদন্তে দুটি কমিটি করা হয়েছে এবং শিগগিরই এর প্রতিবেদন পাওয়া যাবে বলে জানানো হলে ওই আদেশ দেয় হাইকোর্ট। কিন্তু প্রতিবেদন না পেয়ে হাইকোর্ট এক পর্যায়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে।
পরে গত ২ জুলাই হাইকোর্ট রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন ভবনে আসবাবপত্র বিশ্বাসযোগ্যতার সঙ্গে কেনা ও উত্তোলনের ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব, গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকোশলী, রাজশাহী অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও নির্বাহী প্রকৌশলী এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
একই সঙ্গে বালিশকাণ্ডের এ ঘটনার তদন্তে গঠিত দুটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিল করতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়। সে অনুযায়ী রবিবার রাষ্ট্রপক্ষ দুটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে এদিন শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমাতুল করিম।
এছাড়া রিটের পক্ষে আইনজীবী সুমন শুনানি করেন। শুনানিতে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, আমি প্রতিবেদনে সন্তুষ্ট।
এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কী করা হবে না হবে, সেটা সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়। সরকার কী করে দেখেন। এজন্য ২ থেকে আড়াই মাস মামলার শুনানি মুলতবি রাখেন।
উভয় পক্ষের শুনানির পর হাইকোর্ট সরকার কী পদক্ষেপ নেয় তা দেখবেন উল্লেখ করে অবকাশের এক সপ্তাহ পর আবারও বিষয়টি শুনানির দিন ধার্য করে।