বুয়েট ছাত্র ফারদিন নূর পরশের মৃত্যুর সঙ্গে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী আমাতুল্লাহ বুশরার কোনো সম্পর্ক নেই বলে আদালতে প্রতিবেদন দেবে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ ডিবি কার্যালয়ে বুশরা সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘এটা আদালতের ব্যাপার। ফারদিনের মৃত্যুতে বুশরার যোগসূত্র খুঁজে না পাওয়ায় আমরা এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেব।’
ফারদিনের লাশ উদ্ধারের পরই গত ১০ নভেম্বর বুশরাকে ঢাকার বনশ্রীর বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৬ নভেম্বর পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন: ফারদিন আত্মহত্যা করেছে: ডিবি
দীর্ঘ ৩৮ দিনের তদন্ত শেষে আজ ডিবি প্রধান বলেন, নিখোঁজ হওয়ার আগে ফারদিন ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় একাই ঘুরে বেড়াত।
তিনি বলেন, ফারদিনকে খুন করা হয়নি, তিনি হতাশা থেকে গত ৪ নভেম্বর সুলতানা কামাল সেতু থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
এছাড়া ফারদিনের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তার পকেটে মোবাইল ও টাকা এবং হাতে ঘড়ি ছিল বলে জানান ডিবি প্রধান।
আজ বুয়েটের ৪০ জন শিক্ষার্থী ডিবি কার্যালয়ে এসেছেন। প্রায় তিন ঘণ্টা তদন্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার পর শিক্ষার্থীরা বলেন, তারা ডিবির তদন্তে সন্তুষ্ট এবং বিভিন্ন প্রমাণ দেখে তা প্রাসঙ্গিক বলে মনে করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ফারদিন একজন অন্তর্মুখী এবং খারাপ ফলাফলের কারণে বিরক্ত ছিলেন।
পুরো বিষয়টি পর্যালোচনা করে আমরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে হত্যার কোনো চিহ্ন নেই।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গতকাল তার পরিবারের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলেছি। যদি একজন ব্যক্তি দরজা বন্ধ করে আত্মহত্যা করে, কোন সাক্ষী থাকে না। ঘটনাটি দেখে মনে হয় সে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করেছে। এরপর আমরা একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি।’
ফারদিন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র এবং নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার কুতুবপুর এলাকার বাসিন্দা।
নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন পর ৭ নভেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জে একটি কটন মিলের পেছনে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
ময়নাতদন্ত করা নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক শেখ ফরহাদ জানান, ফারদিনের মাথায় ও শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
ওই দিনই ফারদিনের বাবা কাজী নুরুদ্দিন রানা বাদী হয়ে রামপুরা থানায় ছেলে হত্যার ঘটনায় মামলা করেন এবং পরে মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আরও পড়ুন:ফারদিন আত্মহত্যা করেনি, তাকে খুন করা হয়েছে: বাবার দাবি