যথাযোগ্য মর্যাদায় ব্যাংককে বাংলাদেশ দূতাবাসে মহান বিজয় দিবস ২০২৩ উদযাপন করা হয়েছে।
১৬ ডিসেম্বর (শনিবার) সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন রাষ্ট্রদূত মো. আব্দুল হাই।
এরপর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের অন্য শহীদ সদস্য ও শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার পরিবারের অন্যান্য শহীদ সদস্য ও শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার শান্তি এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
এরপর রাষ্ট্রদূত মো. আব্দুল হাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন যথাক্রমে দূতাবাসের মিনিস্টার (রাজনৈতিক) ও মিশন উপপ্রধান মালেকা পারভীন, মিনিস্টার (কনস্যুলার) হাসনাত আহমেদ; কাউন্সেলর (ইকনোমিক) সারোয়ার আহমেদ সালেহীন এবং কাউন্সেলর (রাজনৈতিক) নির্ঝর অধিকারী।
অনুষ্ঠানে দূতাবাসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা পর্বে অতিথিরা মহান বিজয় দিবসের তাৎপর্য সম্পর্কে আলোচনা করেন। দূতাবাসের মিনিস্টার (রাজনৈতিক) ও মিশন উপপ্রধান মালেকা পারভীন তার বক্তব্যে শুরুতে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শাহাদত বরণকারী বীর শহীদ ও মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতনের শিকার নারীদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি নতুন প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
এছাড়া, এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আল আমিন সরদার, থাইল্যান্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক নেয়ামত আলী তালুকদার বাংলাদেশ কমিউনিটির পক্ষ থেকে আলোচনাপর্বে অংশ নেন।
রাষ্ট্রদূত মো. আব্দুল হাই তার বক্তব্যের শুরুতে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সব বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গভীরভাবে স্মরণ করে উপস্থিত সুধীমণ্ডলীকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানান।
রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান, মুক্তিযুদ্ধের কঠিন সময়ে বিজয়ের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত শহীদ বুদ্ধিজীবীদের ঢাকায় অবস্থান করে মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতা প্রদানের মাধ্যমে বিজয় নিশ্চিতকরণ ইত্যাদি বিষয় আলোচনা করেন। তিনি নতুন প্রজন্মকে তাদের মেধা ও শ্রম দিয়ে দেশ গঠন করার আহ্বান জানান।
এরপর, বিজয় দিবস ২০২৩ উপলক্ষে দূতাবাস প্রাঙ্গণে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদেশিরা অংশ নেন। এ ছাড়া, প্রবাসী বাঙালি শিশু-কিশোরদের জন্য চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে দূতাবাস। এতে থাইল্যান্ডে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশি শিশু- কিশোররা অংশ নেন। পরে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী প্রত্যেককে শুভেচ্ছা উপহার দেওয়া হয়।
এছাড়া প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারী প্রতিযোগিদের মাঝে পুরস্কার দেওয়া হয়।
মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন দূতাবাসের কাউন্সেলর ও দূতালয় প্রধান মো. মাসূমুর রহমান।
এর আগে, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ১৪ ডিসেম্বর ব্যাংককস্থ রেডক্রস সোসাইটিতে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে দূতাবাস। অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়ে স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন। এছাড়া, দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন।
অনুষ্ঠানে দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মো. আব্দুল হাই, মিনিস্টার (কনস্যুলার) হাসনাত আহমেদ এবং কাউন্সেলর ও দূতালয় প্রধান মো. মাসূমুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে গত ১০ ডিসেম্বর দূতাবাসের সহযোগিতায় থাইল্যান্ডের চনবুরি প্রদেশের পাতায়ার হর্স শু পয়েন্টে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় ৪টি ক্রিকেট দল অংশ নেয়। প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ দল চ্যাম্পিয়ন হয়। ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় রাষ্ট্রদূত এবং মিনিস্টার (কনস্যুলার) উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রদূত চ্যাম্পিয়ন দলকে পুরস্কার দেন।