নবগঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেছেন, শিগগিরই সব ধরনের অপরাধের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে এবং সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনা হবে।
বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে শপথ গ্রহণের পর জাতির উদ্দেশে টেলিভিশনে দেওয়া প্রথম ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘স্বৈরাচারী সরকারের নির্দেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা অপরাধ করেছে শিগগিরই তাদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে। সব সেক্টরের অপরাধের বিচার হবে।’
সব মন্ত্রণালয়, সংস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের জন্য এই বার্তা প্রযোজ্য হবে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, নিষ্ঠুর ও ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী সরকার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রভাবিত করে ক্ষমতা দখল করে রেখেছিল। আগের সরকারের এসব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে আমরা প্রতিষ্ঠানগুলোর হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনব।
সব প্রতিষ্ঠান ও এর সদস্যদের নিজ নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন এবং দেশকে গৌরবের সর্বোচ্চ স্তরে উন্নীত করার মাধ্যমে 'দ্বিতীয় বিজয়' উপভোগ করার আহ্বান জানান ড. ইউনূস।
তিনি বলেন, 'জাতির পক্ষ থেকে আমি সবাইকে নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে নির্ভীকভাবে এগিয়ে আসার এবং উৎসাহ ও আনন্দের সঙ্গে তাদের পূর্ণ ক্ষমতা দিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’
নোবেলবিজয়ী ড. ইউনূস বলেন, সব নাগরিক যাতে ভয় ও দুশ্চিন্তামুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে বসবাস করতে পারে এমন একটি পরিবেশ নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থীরা প্রাণ হারিয়েছে।
তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের ফলাফল হিসেবে গঠিত এই নতুন অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন সবার সরকার হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করে। এই প্রশাসনের অধীনে দেশের সব নাগরিক নিজেদের আকাঙ্ক্ষা পূরণের অধিকার পাবে।
বিজয়ী শিক্ষার্থীরা, জনগণ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের সর্বশক্তি দিয়ে নৈরাজ্যের বিষবাষ্প ছড়ানোর যে কোনো অপচেষ্টা প্রতিহত করবে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, নৃশংস স্বৈরাচারী শাসনের পতনের সঙ্গে সঙ্গে আগামীকাল (শুক্রবার) এক নতুন যুগের সূচনা হবে যেখানে রাজনৈতিক পরিচয় বা মতামত নির্বিশেষে জনগণ গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার এবং মানবাধিকারকে সমুন্নত রেখে নির্ভয়ে মত প্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতা উপভোগ করতে সক্ষম হবে।
দেশের সব মানুষের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, 'এই লক্ষ্য অর্জনে আমাদের সহযোগিতা করুন।’
ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘সারা বিশ্ব অবাক বিস্ময়ে বলছে, ব্রাভো বাংলাদেশ, ব্রাভো বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা। আমাদের লক্ষ্য এই অর্জনকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।’