শেরপুরের নালিতাবাড়ী সীমান্তের মধুটিলা ইকোপার্কের বাতকুচি টিলাপাড়া এলাকায় বিদ্যুতের তারের ফাঁদে পড়ে একটি বন্যহাতির মৃত্যু হয়েছে। বনবিভাগ ও স্থানীয় এলাকাবাসী ধারণা করছেন হাতিটি খাদ্যের সন্ধানে পাহাড় থেকে নেমে এসেছিল। পাকা ধানখেত রক্ষায় কৃষকদের পাতা বিদ্যুতের ফাঁদে হাতিটি মারা গেছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে একটি জেনারেটর জব্দ ও বেশ কিছু তার এবং শহীদুল ইসলাম (৪৫) নামে একজনকে আটক করেছে বনবিভাগ।
শেরপুর জেলার সহকারী বন সংরক্ষক মো. সাদেকুল ইসলাম খান, বন্যহাতির মৃতদেহ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। বিদ্যুতের ফাঁদেই হাতিটির মৃত্যু ঘটেছে। এটি একটি মাদী হাতি, বয়স আনুমানিক ১০/১২ বছর হবে। মৃত হাতিটির ময়নাতদন্ত শেষে ঘটনাস্থলেই মৃতদেহটি মাটিচাপা দেওয়া হবে।
এ ঘটনায় ইতোমধ্যে একজনকে আটক করা হয়েছে এবং আরও ১০ থেকে ১২ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
বনবিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েকদিন ধরেই ৪০ থেকে ৫০টি বন্যহাতির একটি দল খাদ্যের সন্ধানে পাহাড় থেকে নেমে এসে নালিতাবাড়ীর সীমান্তের গ্রামগুলোতে পাকা আমন ধান ক্ষেতে হানা দিয়ে আসছিল।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে হাতির আক্রমনে নারী নিহত
এলাকার কৃষকরা খেতের ফসল রক্ষায় হাতির দলকে নানাভাবে তাড়ানোর চেষ্টা করছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়ও বন্যহাতির একটি দল বাতকুচি এলাকায় নেমে আসলে কয়েকজন কৃষক ফসল রক্ষায় ধানখেতে জেনারেটরের বৈদ্যুতিক সংযোগ দিয়ে তার ফেলে রাখে।
এর মধ্যেই রাত ১০টার দিকে একটি বন্যহাতি মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া যায়। পরে খবর পেয়ে বনবিভাগের লোকজন ও স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে যান। এসময় তারা দেখতে পান মৃত হাতিটিকে ঘিরে আছে আরও অন্তত ২৫ থেকে ৩০টি সঙ্গীয় বন্যহাতি।
স্থানীয় পরিবেশবিদ দেবদাস চন্দ বাবু বলেন, ইতোপূর্বেও এ ধরনের কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। বনবিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, ওয়াইল্ড লাইফকে এ বিষয়ে আমরা গত বছর নাম ঠিকানা জানিয়ে ছিলাম। কিন্তু তারা কোনো প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য জোড় দাবি জানাচ্ছি।
আরও পড়ুন: চুনতিতে ট্রেনের ধাক্কায় হাতি নিহতের ঘটনায় লোকোমাস্টার বরখাস্ত