বুধবার নিজের সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে যোগদান উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সপ্তাহব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র সফর সম্পর্কে সাংবাদিকদের জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
দুর্গা পূজা উপলক্ষে সম্প্রতি ক্রিকেটার লিটন দাসের ফেসবুকে পোস্ট দেয়া এবং পরে একদল মানুষের তীব্র সমালোচনার কারণে তা সরিয়ে ফেলতে বাধ্য হওয়া প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমন ধরনের ঘটনা মোকাবেলার জন্যই সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস করেছে।
‘আমি জানি না কারা এসব লিখেছে এবং কেন, কিন্তু বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করে এবং আমরা অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি করি,’ যোগ করেন তিনি।
যারা সাম্প্রদায়িকতা ছড়ানোর কাজে জড়িত এবং যারা বিকৃতমনা তাদের নীতি নেই বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী এসব প্রতিরোধে সবাইকে এগিয়ে আসার ও সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান এবং সাংবাদিকদের সক্রিয় ভূমিকা পালনের অনুরোধ করেন।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী সাধারণ নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল অংশ নেবে। যদি কেউ না নেয় তাহলে সেটা হবে তাদের সিদ্ধান্ত।
বৃহত্তর ঐক্য প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা জোট হচ্ছে দেখে আমি খুব খুশি। তাদের যেকোনো সহযোগিতা করতে আমি রাজি।’
তবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে দুটি জোট আছে... একটি হলো আওয়ামী লীগ এবং আরেকটি এন্টি-আওয়ামী লীগ। ‘এন্টি-আওয়ামী লীগারদের তো কোথাও যেতে হবে এবং তাদের প্লাটফর্ম দরকার। একটি জোট হচ্ছে এবং সেখানে বড় বড় ও ভালো মানুষ আছেন। এটা নির্বাচনের জন্য ভালো। সুতরাং, আমি তাদের স্বাগত জানাই।’
বহুল আলোচিত ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইভিএম নিয়ে আমার কোনো সমস্যা নেই। আসলে আমি ইভিএমের পক্ষে। আমরা ইতিমধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা আধুনিকায়ন করেছি। এখন তো ডিজিটাল বাংলাদেশ। মানুষ যদি মোবাইল ফোনে টাকা পাঠাতে পারেন তাহলে মেশিনের মাধ্যমে ভোট দিতে সমস্যা কোথায়? একটা ব্যবস্থা থাকা দরকার যাতে আপনি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ভোট দিতে পারেন, তখন আর ভোটকেন্দ্রে যেতে হবে না।’
‘একনেকে ইভিএম প্রকল্প পাস হয়েছে। জনগণ আমাদের নির্বাচিত করেছে এবং তাদের প্রতি আমাদের বিশ্বাস আছে। সুতরাং আমরা জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছি,’ যোগ করেন তিনি।
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গাদের নিজ মাতৃভূমিতে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায় মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের সাথে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী মিয়ানমার ইতিমধ্যে কিছু রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন সিদ্ধান্ত তাদের ওপর। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের জন্য ভালো পরিবেশ নিশ্চিত করতে ভাসানচরে গৃহ ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ করেছে। আমি শিগগির ভাসানচর পরিদর্শনে যাব।’