ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা সহজে অপব্যবহারযোগ্য আইনের বিধান মনে বলে করেন শতকরা ৮২.৫ শতাংশ মানুষ৷ পাশাপাশি এই ধারার যুগোপযুগী সংস্কার চান ৪৬.২ শতাংশ মানুষ৷
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) পুলিশ সংস্কার কমিশন পরিচালিত 'কেমন পুলিশ চাই' শীর্ষক জরিপের ফলাফল প্রকাশ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগ৷ সেখানেই এসব তথ্য উঠে এসেছে।
জরিপের ফলাফল অনুযায়ী দেখা যায়, ৩৯.৭ শতাংশ উত্তরদাতা উচ্চ আদালতের সুপারিশমতে ৫৪ ধারার বিধান সংশোধনের পক্ষে মত দিয়েছেন।
জরিপ থেকে জানা যায়, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৭ ধারায় পুলিশ হেফাজতে বা রিমান্ডে আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের ধারাটি সংশোধন অথবা সংস্কার চান ৯১.৭ শতাংশ উত্তরদাতা। তারমধ্যে ৮০.৯ শতাংশ উত্তরদাতা নারী আসামিকে যথেষ্ট শালীনতার সঙ্গে নারী পুলিশের উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদের পক্ষে মতামত দিয়েছেন। আটক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রতি থানায় স্বচ্ছ কাঁচের ঘেরাটোপ ব্যবস্থা সম্বলিত আলাদা জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষ থাকার পক্ষে ৮০.২ শতাংশ মতামত এসেছে।
আরও পড়ুন: জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা-গ্রেপ্তার নয়: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
এছাড়া তল্লাশির সময় পরিচয় দিতে অস্বীকার করলে বা বিনা সার্চ ওয়ারেন্ট তল্লাশি করতে চাইলে তার প্রতিকারে একটি কার্যকর কল সার্ভিস চালুর পক্ষে ৮৭ শতাংশ উত্তরদাতা মত দিয়েছেন।
সেই সঙ্গে আরও দুটি বিষয়ে তারা ব্যবস্থা চান:
১. অভিযানের সময় জিপিএস ট্র্যাকিং সিস্টেম ও ভিডিও রেকর্ডিং ডিভাইসসহ পোশাক পরিধানের উপর জোর দিয়েছেন (৭৭.৪ শতাংশ)
২. রাতের বেলায় গৃহ তল্লাশি করার ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট বা স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি বা সম্মানিত ব্যক্তির উপস্থিতি অপরিহার্য চেয়েছেন ৭৫ শতাংশ উত্তরদাতা। জনমত জরিপে প্রাপ্ত মতামত অন্তর্ভুক্ত করে প্রবিধানমালা জারির ব্যবস্থা সুপারিশ করা যায়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ জরিপে অংশ নিয়েছেন ২৪ হাজার ৪৪২ জন৷ এদের মধ্যে ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সিদের অংশগ্রহণের হার ৮৬.৬ শতাংশ৷ উত্তরদাতাদের মধ্যে চাকরিজীবী ৩৬.৪ শতাংশ, ছাত্র ২৭.২ শতাংশ, ব্যবসায়ী ৭.৬ শতাংশ এবং প্রকৌশলী ৭.১ শতাংশ৷ এসব উত্তরদাতাদের সর্বাধিক ঢাকা জেলা এবং পরবর্তী অবস্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা জেলার৷
জনমত জরিপের ফলাফল পুলিশ সংস্কার কমিশনের ওয়েবসাইটে (www.prc.mhapsd.gov.bd) পাওয়া যাবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিককালে দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে প্রতিহত করতে কিছু সংখ্যক পুলিশ সদস্যের সহিংস ভূমিকা নিয়ে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সংস্কারের দাবি উঠে। পুলিশ বাহিনীর সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত পুলিশ সংস্কার কমিশন জনগণের মতামত জানতে 'কেমন পুলিশ চাই' শিরোনামে জনমত জরিপ পরিচালনা করে।
আরও পড়ুন: ১৮ ডিসেম্বর থেকে রাজনৈতিক সমাবেশ নিষিদ্ধ করল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়