ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী সবাইকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন ও শিক্ষার্থীদের সমাবেশকে ঘিরে কোনো নিরাপত্তা হুমকি নেই।
মঙ্গলবার(৩১ ডিসেম্বর) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি ঢাকায় থার্টিফার্স্ট নাইট ও ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনের জন্য পরিকল্পিত নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব তপন কুমার বিশ্বাস আতশবাজি, ক্লাস্টার বোমা ও আকাশে ফানুস উড়ানো বন্ধের উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করেন।
উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মেট্রোপলিটন এলাকায় অতিরিক্ত তিন হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েনের ঘোষণা দেন ডিএমপি কমিশনার।
ব্যবস্থাটির বিষয়ে ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘নিয়মিত পুলিশ মোতায়েনের মধ্যে প্রতিটি ফাঁড়ি থেকে টহল দল এবং প্রতিটি স্টেশন থেকে একাধিক দল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। থার্টি ফার্স্ট নাইটের জন্য আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, গুলশান, ৩০০ ফুট সড়ক এবং উত্তরা দিয়াবাড়ির মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোকে নির্ধারণ করে আমাদের নিয়মিত মোতায়েন তিন হাজার কর্মকর্তাকে যুক্ত করেছি।’
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিবেশ ম্যাজিস্ট্রেটরা পুলিশকে সহযোগিতা করবেন। যেখানে প্রয়োজন সেখানে সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগের জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন।
শব্দ দূষণের বিরুদ্ধে অভিযান
তপন কুমার বিশ্বাস উদযাপনের সময় মাত্রাতিরিক্ত শব্দদূষণ রোধে করণীয় তুলে ধরেন।
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত সক্রিয় থাকবে। তারা বিদ্যমান আইন প্রয়োগ, জরিমানা করা এবং লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
অবৈধ আতশবাজির বিরুদ্ধে অভিযান
উদযাপনের প্রস্তুতি হিসেবে ডিএমপি গত সপ্তাহে অভিযান চালিয়ে ক্লাস্টার বোমা ও রকেট বোমাসহ ১২৭ কেজি আতশবাজি জব্দ করে। এ ঘটনায় পাঁচটি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং আটকদের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘শব্দদূষণ রোধে দেশবাসীকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানাচ্ছি। এর দায় শুধু পুলিশ বা পরিবেশ অধিদপ্তরের নয়; প্রত্যেক ব্যক্তিকে ভূমিকা রাখতে হবে।’
একটি নিয়ন্ত্রিত উদযাপন
আতশবাজি নিয়ে উদযাপনকারী অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ কেন এই ধরনের পরিবেশগত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয় এমন প্রশ্নের জবাবে কমিশনার বলেন, ‘বৈশ্বিকভাবে নববর্ষ উদযাপন প্রায়ই নির্ধারিত এলাকায় হয়। এখানে আমাদের এ ধরনের আয়োজনের অভাব রয়েছে, তবে ভবিষ্যতে ঢাকায় নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ন্ত্রিত অনুষ্ঠান আয়োজনের কথা ভাবছি আমরা।’
পুলিশের মনোবল ও প্রস্তুতি
পুলিশের মনোবল নিয়ে উদ্বেগের বিষয়ে তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, ‘বাহিনী আগের সব ধাক্কা কাটিয়ে উঠেছে। যে চ্যালেঞ্জগুলো আমাদের মনোবল কমিয়ে দিয়েছিল, সেগুলো সমাধান করা হয়েছে। আমরা এখন অনেক ভালো অবস্থায় আছি।’
জননিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রস্তুতির ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, উদযাপনের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো হুমকি চিহ্নিত করা হয়নি।
ঢাকা নববর্ষকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত হওয়ার পাশাপাশি ডিএমপি এবং পরিবেশ অধিদপ্তর উভয়ই উৎসবকে নিরাপদ এবং পরিবেশগতভাবে দায়িত্বশীল করতে জনসাধারণের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে।