ইসরায়েলে শিগগিরই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরান- এমন ইঙ্গিত দিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউসের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।
দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর অবস্থান লক্ষ্য করে ইসরায়েল যখন সীমান্ত অঞ্চলে হামলা বাড়িয়েছে, এমন সময়ে এ তথ্য সামনে এল।
তবে আশঙ্কা সত্ত্বেও ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, এখনও ইরান থেকে উদ্ভূত কোনো সরাসরি বিমান হামলার হুমকি শনাক্ত করতে পারেনি তারা।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র দানিয়েল হাগারি নিশ্চিত করেছেন যে পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ হলেও এই মুহুর্তে ইরানি ভূখণ্ড থেকে কোনো (ক্ষেপণাস্ত্র) উৎক্ষেপণ ঘটেনি।
আরও পড়ুন: লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ৯৫, আহত ১৭২
হিজবুল্লাহর সঙ্গে ক্রমবর্ধমান সংঘর্ষের ধারাবাহিকতায় লেবাননে ইসরায়েলের আগ্রাসনকে ‘সীমিত ও স্থানীয় স্থল অভিযান’ হিসেবে বর্ণনা করেছে আইডিএফ।
মঙ্গলবার সকালে ইসরায়েলের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানিয়েছেন, স্থলবাহিনীর মধ্যে এখনও কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি।
তবে এর কয়েক ঘণ্টা পর লেবাননের প্রায় ২৫টি গ্রামের বাসিন্দাদের সরে (নিরাপদে) যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী যা সংঘাতের সম্ভাব্য সম্প্রসারণেরই ইঙ্গিত দেয়।
ইসরায়েলের এই ক্রমাগত হামলা লেবাননের নাগরিকদের মাঝে চরম উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি জনসাধারণকে সতর্ক করে বলেছেন, বর্তমানে ‘সবচেয়ে বিপজ্জনক পর্যায়গুলোর মধ্যে একটি’ মোকাবিলা করছে লেবানন।
প্রধানমন্ত্রীর মতে, ক্রমবর্ধমান সংঘাতের কারণে ইতোমধ্যে ১০ লাখের বেশি লেবানিজ নাগরিক বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সহিংসতা অব্যাহত থাকায় এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা করছেন তিনি।
এদিকে, লেবাননের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে ইসরায়েলি বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে। দেশটির রাজধানী বৈরুতসহ একাধিক স্থানে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার বিষয়ে নিশ্চিত করেছে আইডিএফ।
আরও পড়ুন: গত এক সপ্তাহে নিহত হিজবুল্লাহর সাত শীর্ষ কর্মকর্তা
লেবাননের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিডন শহরের কাছে ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরের একটি ভবনে বিমান হামলা চালানো হয়েছে। এর ফলে দেশটিতে ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের আশঙ্কা বেড়েছে।
গাজায় আগ্রাসনের মধ্যে লেবাননসহ ওই অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সব পক্ষকে সংযত হতে বারবার আহ্বান জানাচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়গুলো।
চলমান সংঘাতে ইরান যুক্ত হলে এটি একটি নতুন ও বিপজ্জনক পর্যায়ের উন্মোচন করবে বলে আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। হামলায় আশঙ্কায় উভয় পক্ষই উচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে। কারণ দুপক্ষই জানে, যেকোনো ভুল পদক্ষেপের ফলে বিষয়টি বৃহত্তর আঞ্চলিক সংঘাতে রূপ নিতে পারে।