কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে গ্যাসভর্তি একটি গাড়ি বিস্ফোরিত হয়ে অগ্নিকাণ্ডে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় বাড়িঘর ও গুদাম পুড়ে যায়। এতে ২৭০ জনেরও বেশি আহত হয়। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাতে নাইরোবির ম্রাদি এলাকায় এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয় বলে জানিয়েছেন সরকারের মুখপাত্র আইজ্যাক মাওয়াউরা।
তিনি জানান, রাতের আগুন লাগার সময় অনেক বাসিন্দা তাদের বাড়ির ভেতরে ছিলেন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ১৪ বছরের কারাদণ্ড
মাওয়াউরা বলেন, ট্রাক বিস্ফোরণে বিশাল আকারের আগুনের গোলা জ্বলে ওঠে এবং একটি উড়ন্ত গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুন লেগে ওরিয়েন্টাল গোডাউন নামে একটি গুদাম পুড়ে যায়। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে শুরু হওয়া এ অগ্নিকাণ্ডে আরও বেশ কয়েকটি যানবাহন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দিনের আলো ফোটার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ও দোকানপাট পুড়ে গেছে। বিস্ফোরণের সূত্রপাত হওয়া গাড়ির শেলটি তার পাশে পড়েছিল। বিস্ফোরণস্থল থেকে প্রায় ২০০ মিটার (গজ) দূরে একটি চারতলা আবাসিক ভবনের ছাদ উড়ন্ত গ্যাস সিলিন্ডারের আঘাতে ভেঙে গেছে। মাটিতে পড়ে ছিল বৈদ্যুতিক তার। পুড়ে যাওয়া গুদামে কয়েকটি ট্রাকের শেল ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট ছিল না।
উদীয়মান রাজনীতিবিদ আলফ্রেড জুমা জানান, তিনি তার বাড়ির পাশের একটি গুদামে গ্যাস সিলিন্ডার থেকে বিকট শব্দ শুনতে পান। জুমা বলেন, 'আমি প্রতিবেশীদের ঘুম থেকে জাগাতে শুরু করি।’
তিনি বলেন, তিনি একটি কালো গাড়িকে ওই এলাকা দিয়ে না যাওয়ার জন্য সতর্ক করেছিলেন, কিন্তু চালক জোর করে যাওয়ার সময় ধোঁয়ার কারণে তার গাড়ি থেমে যায়। ‘তিনি তিনবার গাড়িটি চালু করার চেষ্টা করেছিলেন এবং তখনই একটি বিস্ফোরণ ঘটে এবং আগুন (গুদামে) ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য বিস্ফোরণ ঘটে।’
তিনি বলেন, তিনি দুটি শিশুকে ধরে রেখেছিলেন এবং বিস্ফোরণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা একটি নর্দমার মধ্যে লুকিয়ে ছিলেন। তার পরিবারের রোকজন সেময় সেখানে ছিল না, কিন্তু জুমা আগুনে তার সমস্ত কিছু হারিয়েছেন।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ার ডিটেনশন সেন্টার থেকে শতাধিক রোহিঙ্গা পালিয়েছে
স্থানীয় বাসিন্দা ক্যারোলিন কারাঞ্জা বলেন, 'পুলিশ সবাইকে ফিরিয়ে দিচ্ছিল। তাই আমার বাড়িতে প্রবেশ করা কঠিন ছিল। সকাল পর্যন্ত আমাকে ঘুমানোর জায়গা খুঁজতে হয়েছে।
তিনি বলেন, গন্ধ ও ধোঁয়ায় এখনও দম বন্ধ হয়ে আসছে। তাকে কিছু সময়ের জন্য দূরে থাকতে হবে কারণ তার ছোট বাচ্চা রয়েছে।
পুলিশ ও কেনিয়া রেডক্রস তিনজনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে। এমবাকাসির পুলিশ প্রধান ওয়েসলি কিমেতো বলেন, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
সরকার ও রেডক্রস জানিয়েছে, আহত ২৭১ জনকে বেশ কয়েকটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আবাসিক এলাকার কাছাকাছি শিল্প কারখানা গড়ে ওঠার বিষয়ে নগর পরিকল্পনা সম্পর্কে প্রশ্ন উত্থাপন করেছে বাসিন্দারা। কাউন্টি সরকারের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিল্ডিং কোড এবং বিধিবিধান উপেক্ষা করার জন্য ঘুষ নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজায় ২৪ ঘণ্টায় ১৫০ জন নিহত: স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়