সমগ্র গাজায় ইসরায়েলি হামলার মধ্যেই মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে যোগাযোগ করেছে হামাস। সশস্ত্র গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলের চলমান আগ্রাসন যুদ্ধবিরতি আলোচনা প্রক্রিয়াকে আবারও গোড়ায় নিয়ে যাবে।
সোমবার (৮ জুলাই) এক বিবৃতিতে হামাস বলেছে, গাজা শহর ও এর আশপাশের বড় এলাকাগুলোতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর চলমান হামলা, হত্যাকাণ্ড ও বাস্তুচ্যুতির বিষয়গুলো বিবেচনা করে হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরো প্রধান ইসমাইল হানিয়াহ মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে জরুরি যোগাযোগ করেছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গাজা শহর, রাফা ও উপত্যকার অন্যান্য অঞ্চলে ইসরায়েলের অভিযানের পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করে হানিয়া উল্লেখ করেছেন, আলোচনার পথ ভেঙে পড়লে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার সেনাবাহিনী এর সম্পূর্ণ দায় বহন করবে।
সোমবার জাতিসংঘের অফিস ফর দ্য কোঅর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্সের (ওসিএইচএ) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রবি ও সোমবার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজা শহরের অন্তত ১৯টি ব্লকে বসবাসরত হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে তাৎক্ষণিকভাবে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
আরও পড়ুন: জেনিনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল, ৫ ফিলিস্তিনি নিহত
সোমবার পর্যন্ত আল আহলি ব্যাপটিস্ট হাসপাতাল ও পেশেন্টস ফ্রেন্ডস অ্যাসোসিয়েশন হাসপাতাল খালি করা হয়েছে। তীব্র সামরিক তৎপরতার আশঙ্কায় সংকটাপন্ন রোগীদের উত্তর গাজার ইন্দোনেশিয়ান ও কামাল আদওয়ান হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) সোমবার এক বিবৃতিতে জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গাজা শহরে হামাস ও ইসলামিক জিহাদের অবকাঠামো, কার্যালয়, অস্ত্র, এবং জেরা ও নির্যাতন কক্ষের উপস্থিতি শনাক্ত করে দেশটির সেনাবাহিনী রাতভর ওই এলাকায় অভিযান চালায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, অভিযান শুরুর সঙ্গে সঙ্গে ওই এলাকার বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদে সরে যেতে সতর্ক করে আইডিএফ।
গত সপ্তাহে হামাস জানায়, চুক্তি স্বাক্ষর করার আগে ইসরায়েলের কাছ থেকে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি চায় গোষ্ঠীটি। হামাসের ওই পদক্ষেপকে আলোচনা এগিয়ে নিতে ইতিবাচক হিসেবে দেখছিল মধ্যস্থতাকারীরা।
তবে অতি সম্প্রতি ইসরায়েলের কার্মকাণ্ডে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় ফের অন্ধকারের দিকে ধাবিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনায় প্রতিনিধি দল পাঠাচ্ছে ইসরাইল
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে হামাসের হামলায় দেশটির অন্তত ১ হাজার ২০০ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়। সে সময় ২৫০ ইসরায়েলিকে জিম্মি করে নিয়ে যায় ফিলিস্তিনের সশস্ত্র শাসক গোষ্ঠী হামাস। ওই ঘটনার পর থেকে গাজায় ক্রমাগত হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত অন্তত ৩৮ হাজার ১৯৩ জন নিহত এবং ৮৭ হাজার ৯০৩ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।