পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় পাঞ্জাব প্রদেশে পুলিশের গাড়িতে ডাকাতদলের হামলায় অন্তত ১২ পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) রহিম ইয়ার খান জেলার কাচা এলাকায় সিন্ধু নদের তীরে ডাকাতদের গোপন আস্তানা হিসেবে পরিচিত একটি এলাকায় পুলিশের গাড়ি থামলে দুটি গাড়ি লক্ষ্য করে ডাকাতরা বন্দুক ও রকেটচালিত গ্রেনেড হামলা চালায়।
পাঞ্জাবের পুলিশের প্রধান উসমান আনোয়ার বলেন, বশির শার নামের এক ডাকাত ও তার দলের আত্রমণে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও পাঁচজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ডাকাতদের বিরুদ্ধে এখনও অভিযান চলছে। এই প্রদেশ থেকে ডাকাতি নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) নিহত কর্মকর্তাদের শেষকৃত্যে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সরকারি কর্মকর্তারা অংশ নেবেন বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে বাঁধা অবস্থায় ৫ জনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার
এ ঘটনার পর পাকিস্তানের জ্যেষ্ঠ প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক ও ইসলামাবাদভিত্তিক পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল্লাহ খান বলেন, ডাকাতরা বন্দুক, রকেটচালিত গ্রেনেড, হ্যান্ড গ্রেনেড ও পিস্তলে সজ্জিত ছিল।
তিনি বলেন, ‘এসব অস্ত্র সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তানে চোরাচালানের মাধ্যমে এসেছে।’
পুলিশ সূত্রে খবর, বন্যার কারণে জলমগ্ন কৃষিজমির ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের একটি গাড়ি বিকল হয়ে গেলে অন্য গাড়িটিও সেটি ঠিক করার জন্য থামে। এরপরই পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতরা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তানে সহিংসতা বেড়েছে, যার বেশিরভাগেই জঙ্গিদের দায়ী করা হয়েছে। তবে পুলিশের ওপর এমন ব্যাপক হামলার ঘটনা দেশটিতে বিরল।
ডাকাতরা প্রায়ই পাঞ্জাবসহ দেশটির বিভিন্ন স্থানে মহাসড়ক থেকে যাত্রীদের ছিনতাই করে। পাঞ্জাবের কিছু এলাকা এতটাই বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে যে, লোকজন ডাকাতি এড়াতে সূর্যাস্তের পরে বাইরে ভ্রমণ এড়িয়ে চলে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের গোলাগুলি, নিহত ৭