স্পেনের ভালেন্সিয়া, কাস্তিয়া-লা মাঞ্চা ও আন্দালুসিয়া অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় এখন পর্যন্ত ২০৫ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এছাড়া আরও অন্তত ১৯০০ মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।
মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার পর্যন্ত দেশটির ওই অঞ্চলগুলোতে ব্যাপক বর্ষণ হয়। দেশটির আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, প্রতি বর্গমিটারে ৪০০ লিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে এবং কিছু জায়গায় তা ৬০০ লিটার ছাড়িয়ে যায়।
শীতের পর গ্রীষ্মে মাটি খুব শুকনো থাকায় পানি ঠিকমতো শুষে নিতে না পারায় এ আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি আবহাওয়া কর্তৃপক্ষের।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, তিন মিটার উঁচু পানির স্রোত রাস্তায় নেমে এসে গাড়িগুলোকে খেলনার মতো স্তূপ করে ফেলেছে। বানের তোড়ে সেতু ভেসে গেছে, রেলওয়ে টানেল ধসে পড়েছে এবং মাঠ ডুবে গেছে। স্থানীয়দের অনেকে তাদের বাড়ি ও গাড়ির ছাদে আশ্রয় নিয়েছিলেন, কিন্তু বানের ধাক্কায় তাদের অনেকেরই প্রাণহানি হয়েছে।
উদ্ধার কার্যক্রম তদারক সংস্থা সেন্টার ফর কোঅর্ডিনেটেড অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটেড অপারেশন্সের (সিইসিওপিআই) তথ্যানুসারে, মঙ্গলবার রাতভর প্রবল বর্ষণের পর বুধবার সকালে প্রাথমিকভাবে ১২ জনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করা হয়, যা এখন বেড়ে ২০৫ জনে দাঁড়িয়েছে। কেবল ভালেন্সিয়া অঞ্চলেই ২০২ জনের প্রাণ গেছে। এছাড়া কাস্তিয়া-লা মঞ্চায় দুজন ও আন্দালুসিয়ায় একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে এখনও বহু মানুষ নিখোঁজ থাকায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্প্যানিশ দৈনিক দিয়ারিওর খবরে বলা হয়েছে, এখনও অন্তত ১ হাজার ৯০০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, অনেকে তাদের গাড়ি বাঁচাতে ভূগর্ভস্থ গ্যারেজে গিয়েছিলেন, কিন্তু প্রচণ্ড বন্যায় সেখানেই মৃত্যু হয় তাদের।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ১ লাখ ৩০ হাজারের বেশি বাড়ি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তবে শুক্রবার পর্যন্ত ২৩ হাজার বাড়ি এখনও বিদ্যুৎবিহীন রয়েছে, বাকি সব বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ সংস্থা ইবারদ্রোলা।