বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
তিনি ইউএনবিকে বলেন, ‘ম্যাডাম খালেদা জিয়া অসুস্থতার কারণে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। লিভার, কিডনি, হার্ট ও ফুসফুসের কার্যকারিতাসহ সার্বিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। তবে এখন তিনি মেডিকেল বোর্ডের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।’
এদিকে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আরও পড়ুন:খালেদাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে না দিয়ে ‘হত্যার ষড়যন্ত্র’ করছে সরকার: বিএনপি
সোমবার বিকালে বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল বলেন, ‘খালেদা জিয়া শঙ্কামুক্ত নন এবং তার উন্নত চিকিৎসা দরকার, যা দেশে সম্ভব নয়। সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ, খালেদাকে অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে বিদেশে পাঠাতে হবে। অন্যথায় সরকারকে সব দায় নিতে হবে।’
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার প্রয়াত ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি হাসপাতালে তার সঙ্গে অবস্থান করছেন। খালেদার বোন সেলিমা ইসলাম, ভাই শামীম ইস্কান্দার, কানিজ ফাতেমা তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নিচ্ছেন।
গত ৯ আগস্ট অসুস্থ হয়ে পড়ায় হাসপাতালে ভর্তি হন বিএনপি চেয়ারপার্সন। মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী রবিবার রাতে তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। পরে সোমবার সকালে তাকে আবারও সিসিইউ থেকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়।
ডা. জাহিদ বলেন, মেডিকেল বোর্ড তার সুপারিশে বলেছে তার জরুরিভাবে বিদেশে একটি আধুনিক মাল্টিডিসিপ্লিনারি মেডিকেল সেন্টারে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করা দরকার।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি, সিসিইউতে স্থানান্তর
৭৮ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সন ২০২০ সালে শর্তসাপেক্ষে তার মুক্তির পর থেকে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এর আগে ওই বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় নিম্ন আদালতের পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের পর খালেদাকে পুরান ঢাকা কারাগারে পাঠানো হয়। পরে একই বছর আরেকটি দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন তিনি।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে সরকার ২০২০ সালের ২৫ মার্চ একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে সাময়িকভাবে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়। তবে শর্ত থাকে যে তার গুলশানের বাড়িতে থাকতে হবে এবং দেশ ত্যাগ করতে পারবেন না।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়াকে সিসিইউ থেকে কেবিনে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে