বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন আইন- ১৯৯২ এর সংশোধিত বিল ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (সংশোধন) বিল-২০২৪’ জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) জাতীয় সংসদে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের 'সচিব' পদের নাম পরিবর্তন করে সংশোধনী বিল উত্থাপন করা হয়েছিল।
বিলটির সংশোধনী আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ হচ্ছে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা। টিসিবি নামে একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা বাজারে ন্যায্যমূল্যের পণ্য বিক্রি করে।
তিনি বলেন, ‘উপজেলা পর্যায়ে গিয়ে দেখেছি একটি কার্ড দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে পাঁচ-ছয়টি পণ্য কিনতে হয়। অনেকে তা নিতে পারেন না। যাদের প্রয়োজন নেই তাদেরও টিসিবি থেকে আলাদা জিনিস নিতে হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: বিপন্ন ভাষাগুলোর সংরক্ষণ-গবেষণার লক্ষ্যে সংসদে নতুন বিল উত্থাপন
তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যদি বাজার নিয়ন্ত্রণে কোনো আইন এনে থাকে, তারা যদি সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য কোনো আইন এনে থাকে, তাহলে বলা হবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভালো কাজ করছে।
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন সময় তারা (বাণিজ্য মন্ত্রণালয়) বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। বাজারে গেলে বাজার ঠিকঠাক থাকে। কিন্তু তারা বাজার ত্যাগ করার পরই পূর্বের অবস্থায় ফিরে যায় বাজার।’
তিনি বলেন, সিন্ডিকেট ভাঙা ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আছে বলে আমার জানা নেই।
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, বাজারে সব পণ্যের দাম বেড়েছে।
তিনি বলেন, ‘ওষুধের দাম অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়ছে। কোম্পানিগুলো কোটি কোটি টাকার মুনাফা কোথায় নেবে জানি না। ওষুধ কোম্পানিগুলো শুল্ক ফাঁকি দিয়ে কম শুল্কে কাঁচামাল আনলেও আমাদের দেশে দাম বেশি।’
আরও পড়ুন:আইনি-কূটনৈতিক জটিলতায় তারেককে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকলে মানুষ উন্নত চিকিৎসা পাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, আইন করে ক্যান্সারের ওষুধ ও কিডনি চিকিৎসার খরচ কমানোর কথা বলা হচ্ছে। এই কোম্পানিগুলো কি বাইরের? এটা কি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি? আমাদের দেশীয় মালিক। তাদের কি বিবেক নেই? শতকরা কত ভাগ লাভ দরকার? শতভাগ লাভ।’
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথ বলেন, এই বিল জনগণের স্বার্থে নয়। এখানে শুধু একটি শব্দ পরিবর্তন। ভোগ্যপণ্যের মূল্য নির্ধারণ, নিত্যপণ্যের প্রাপ্যতা, বাজারে সহজলভ্যতা, আমদানি-উৎপাদন সমন্বয় ও জনগণের জন্য সহজ করার দায়িত্ব যদি ট্যারিফ কমিশনকে দেওয়া হয় তবেই জনগণের স্বার্থ থাকবে।
তিনি বলেন, ‘সিন্ডিকেট ভেঙে গরিব মানুষের কাছে নিত্যপণ্য সহজলভ্য করা। এটা ট্যারিফ কমিশনের কাজ সরকারকে পরামর্শ দেওয়া।’
শুধু একটি শব্দ বদলের জন্য বিল সংসদে আনার সমালোচনা করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘সংসদে সাড়ে তিনশ’ সদস্যকে ডেকে একটি কেবল একটি ‘সচিব’ পদ থেকে পরিচালক পদ পরিবর্তন করা, প্রধানমন্ত্রীকে আপনার সামনে বসানো এবং আপনার (মন্ত্রী) কাছ থেকে শব্দ পরিবর্তন করা অর্থের অপচয়।’
আরও পড়ুন: ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগের বিধান রেখে সংশোধনী বিল পাস