বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রার আগে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা (৫ জানুয়ারি) রবিবার রাতে তার সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকটি রাজধানীর গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবনে রাত ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে বলে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান ইউএনবিকে জানিয়েছেন।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়া আগামী মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাত ১০টায় লন্ডনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়বেন। লন্ডন থেকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য।
বিএনপির একজন নেতার ভাষ্য অনুযায়ী, “যদি তার স্বাস্থ্যগত কোনো বড় জটিলতা না দেখা দেয়, তবে মঙ্গলবার রাত ১০টায় কাতার এয়ারওয়েজের একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তিনি লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন।”
লন্ডন থেকে দেশে ফেরার পথে তিনি সৌদি আরবে ওমরাহ পালন করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে ২০১৭ সালে চিকিৎসার জন্য লন্ডন গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। তবে এবারের সফরে লন্ডনে তিনি তার ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে সাত বছর পর পুনর্মিলনী করবেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়াকে নির্বাহী আদেশে মুক্তি দেওয়া হয়, যা তার বিদেশে চিকিৎসার পথ সুগম করে।
লিভার সিরোসিসসহ একাধিক স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগতে থাকা ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া লন্ডনে দুই মাস অবস্থান করবেন বলে জানা গেছে। এরপর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে অবস্থিত জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে চিকিৎসা নেবেন।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, “ম্যাডাম (খালেদা) যদি উড়োজাহাজ ভ্রমণের উপযোগী থাকেন, তবে তিনি ৭ জানুয়ারি লন্ডনে যেতে পারেন।”
তার চিকিৎসক দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে চিকিৎসার সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
গত বছর ২৬ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তার লিভার এবং পেটের ফ্লুইড জমা ও রক্তক্ষরণ রোধে একটি বিশেষ পদ্ধতি (টিআইপিএস) সম্পন্ন করেছিলেন।
এ সফরে বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল যাবেন। এতে থাকবেন তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান, চিকিৎসক, বিএনপি নেতৃবৃন্দ, ব্যক্তিগত কর্মী এবং দুইজন গৃহকর্মী।
বিএনপির এক জ্যেষ্ঠ নেতা জানান, খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে এবং সঙ্গে থাকা প্রতিনিধিদের তালিকা ইতিমধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, তারেক রহমান ও তার পরিবার ২০০৮ সাল থেকে লন্ডনে বসবাস করছেন। ২০২০ সালের মার্চ মাসে কোভিড-১৯ মহামারির সময় সরকার তার সাজা স্থগিত রেখে তাকে গুলশানের বাসভবনে থাকার শর্তে মুক্তি দেয়। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের আদেশে তিনি সম্পূর্ণ মুক্তি লাভ করেন।