বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা সরকারের সমালোচনা করে বলেছেন, এক লাখ ৩০ হাজার সিরিয়ান নিখোঁজের বিষয়ে জাতিসংঘের প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত থাকা মানবাধিকার নীতির পরিপন্থী।
সোমবার এক ভার্চুয়াল বৈঠকে বিএনপির নীতিনির্ধারকরাও ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করে ব্যাংক পরিচালকদের মেয়াদ ৯ থেকে ১২ বছর বাড়ানোর সরকারের পদক্ষেপকেও গণতান্ত্রিক ও সুশাসনবিরোধী বলে অভিহিত করেছেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নিখোঁজ ১ লাখ ৩০ হাজার সিরীয় নাগরিকের পরিবারকে তাদের আত্মীয়-স্বজন ও প্রিয়জনদের হদিস জানতে সাহায্য করার জন্য জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত প্রস্তাবে বাংলাদেশ ভোটদানে বিরত থাকে।
বৈঠকে আরও বলা হয়, ‘জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের দ্বারা প্রস্তাবটি গৃহীত হয়েছিল। বাংলাদেশের প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত থাকা মানবাধিকার নীতির পরিপন্থী।’
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের সদস্য নির্বাচিত হলেও সরকার এ বিষয়ে ভোটদানে বিরত থাকে। ‘এটি প্রমাণ করেছে যে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের বর্তমান অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগ মিথ্যা নয়। সভায় এই অবৈধ সরকারের সকল মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গণতন্ত্র বিরোধী কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানানো হয়।
আরও পড়ুন: ক্ষমতাসীনদের স্বার্থ রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করা হচ্ছে: রিজভী
বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) বিল-২০২৩ এরও বিরোধিতা করা হয়েছে যা ২১ জুন সংসদে পাস হয়েছিল। নতুন আইনানুযায়ী ব্যাংক পরিচালকদের মেয়াদ বাড়িয়ে ১২ বছর করা হয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বৈঠকে মনে হয়েছে দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় নৈরাজ্য সৃষ্টি করে ব্যাংকিং খাতকে পুরোপুরি ধ্বংস করা হয়েছে। বিশেষ করে খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রে, সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্নীতিতে লিপ্ত হয়ে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিয়ে খেলাপিদের সব ধরনের সুবিধা দিচ্ছে।’
বৈঠকে দেখা গেছে, পুনঃতফসিলকৃত ঋণ,রাইট অব লোন, ফাইন্যান্স কোর্টে ঝুলে থাকা বিপুল পরিমাণ ঋণ এবং খেলাপি ঋণের তালিকাভুক্ত হচ্ছে না আরও অনেক খেলাপি ঋণ।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বৈঠকে বলা হয়, খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, সব ঋণ তালিকাভুক্ত হলে প্রকৃত খেলাপি ঋণ ৪ লাখ কোটি টাকার বেশি হবে।
আরও পড়ুন: ইইউ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে মির্জা ফখরুলের বৈঠক
এতে অভিযোগ করা হয়, সরকারের কাছের প্রভাবশালী বড় ব্যবসায়ীরা খেলাপি ঋণ বারবার পুনঃতফসিল ও রিট অব করে লুকিয়ে রাখা হয়। ‘এই সরকার সচেতনভাবে ব্যাংকিং খাতকে ধ্বংস করছে। সভায় ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধনী) বিল-২০২৩ বাতিল দাবি করা হয়।
বিএনপির নীতিনির্ধারকরা কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সরকারের ব্যর্থতার জন্য নিন্দা করেছেন যা শেষ পর্যন্ত দরিদ্র জনগণকে প্রভাবিত করেছে।
তারা কাঁচা চামড়ার ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের ক্রমবর্ধমান দাম কমানোর জন্য পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়: ইইউ রাষ্ট্রদূতকে ফখরুল