বিএনপির সিনিয়র নেতা রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, ক্ষমতাসীন দলের স্বার্থ রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙ্গে পড়েছে।
রবিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি শোকপ্রকাশ করে বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাফিলতির কারণে ঈদের ছুটিতে সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৩৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘দলীয় কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নীরব ভূমিকার মধ্যে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা তৎপর থাকায় পুরো জাতি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।’
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, দেশ সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হওয়ায় শুধু সাধারণ মানুষই নয়, পুলিশ সদস্যদেরও হত্যা করা হচ্ছে।
রিজভী বলেন, ‘গতকাল (শনিবার) ছিনতাইয়ের ঘটনায় পুলিশ বাহিনীর এক সদস্য নিহত হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এতটাই ভেঙ্গে পড়েছে যে প্রতি পদে পদে মানুষের জীবন হুমকির মুখে পড়েছে।’
তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারালেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বেপরোয়া চালকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না।
বিএনপি নেতা বলেন, ক্রমবর্ধমান সামাজিক অবক্ষয়ের মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের মদদপুষ্ট বিকৃত যুবকরা জনমনে উপদ্রব সৃষ্টি করছে এবং বিভিন্ন অপরাধে লিপ্ত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর সুইজারল্যান্ড সফর ‘অত্যন্ত রহস্যময়’: রিজভী
তিনি বলেন, ‘এই দানবরা তাদের আক্রমণ থেকে নারীসহ কাউকে রেহাই দিচ্ছে না…আমরা এমন একটি খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি যে বোনদের উত্যক্ত করার বিচার চাইতে গেলে তরুণদের হত্যা করা হচ্ছে। বাবা-মা তাদের মেয়েদের সম্ভ্রম ও মর্যাদা রক্ষা করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হাতে প্রাণ হারাচ্ছেন।’
রিজভী বলেন, ‘মানবাধিকার এখন সর্বত্র ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শুধুমাত্র বিরোধী দলের কর্মসূচি নস্যাৎ করার জন্য সহিংস হামলা চালাচ্ছে এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করছে; তাই সমাজে নৈরাজ্যের অন্ধকার নেমে এসেছে।’
বাজার মনিটরিং করতে এবং ব্যবসায়িক সিন্ডিকেটদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও রান্নার জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানো থেকে বিরত রাখতে ব্যর্থতার জন্য বিএনপির এই নেতা সরকারের সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, ‘গডফাদার, মাফিয়া ও সিন্ডিকেটররা চারিদিকে লাভবান হচ্ছে। বিভিন্ন মন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতা জড়িত থাকায় এসব সিন্ডিকেট খুবই শক্তিশালী।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ভারতে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচের দাম ২৫ টাকা, কিন্তু সিন্ডিকেটের অসাধুতার কারণে বাংলাদেশে বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়। ‘কিছু জায়গায় কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজিতে। এই ধরনের সিন্ডিকেশন শুধুমাত্র একটি দুর্নীতিবাজ ও দুর্নীতিবাজ সরকারের অধীনেই সম্ভব। তারা মানুষের ক্ষুধা নিয়ে মজা করে।’
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগের প্ররোচনায় বিএনপির সমাবেশে হামলা করা হচ্ছে: রিজভী