কিছু শর্তের ভিত্তিতে আগামী ১০ ডিসেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
তিনি বলেন, ‘তাদের (বিএনপি) জানানো হবে যে তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে পারে। তবে আমরা তাদের অনুরোধ করছি যে তারা যেন কোনও সহিংসতায় লিপ্ত না হয়, কোনও বাধা সৃষ্টি না করে এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করে।’
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে একটি বিলাসবহুল মোটর লঞ্চ উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির সমাবেশ আয়োজনের জন্য অনুমতি দিতে তারা ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনারকে বলেছেন।
আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা মনে করি বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল এবং তাদের রাজনীতি করার অধিকার আছে। তারা পদ্ধতিগত ও গঠনমূলকভাবে রাজনীতি করলে আমাদের বলার কিছু নেই।’
তিনি অবশ্য বলেন, বিএনপি রাজনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন ও খারাপ কিছু করার চেষ্টা করলে সরকারের আপত্তি থাকবে।
মন্ত্রী বলেন, সরকার সারাদেশে বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দিচ্ছে। তবে ২৫ থেকে ৩০ লাখ মানুষকে রাজধানীতে নিয়ে আসার বিষয়ে বিএনপি নেতাদের বিভিন্ন বক্তব্যে প্রমাণিত হয়েছে যে তারা পুরো ঢাকা শহরকে অচল করে দেয়ার চেষ্টা করবে। ‘তাই আমরা তাদের যেকোন বড় ভেন্যুতে যেতে বলেছি।’
আসাদুজ্জামান বলেন, শেষ পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি চেয়েছে বিএনপি। ‘সুতরাং, আমরা (ডিএমপি) কমিশনারকে বিএনপিকে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অনুমতির বিষয়ে) জানাতে বলেছি। এটাও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ।’
যোগাযোগ করা হলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল আলমগীর বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে এখনও এ বিষয়ে তাদের জানানো হয়নি।
তবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করবেন কি না সে বিষয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান তিনি।
এর আগে ১৫ নভেম্বর একটি প্রতিনিধি দল ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে দেখা করে এবং ১০ ডিসেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তাদের বহুল আলোচিত সমাবেশের অনুমতি চায়।
ডিএমপি কমিশনার অবশ্য বিএনপিকে অন্য কোনও বিকল্প ভেন্যুর নাম দিতে বলেছেন।
চলমান আন্দোলনের গতি অব্যাহত রাখার পদক্ষেপের অংশ হিসাবে, বিএনপি ২৭ সেপ্টেম্বর নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ, ভোলা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও যশোরে পুলিশের গুলিতে দলের পাঁচ জনের মৃত্যু এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতে ১০টি বিভাগীয় শহরে ধারাবাহিক জনসভার ঘোষণা দিয়েছে।
বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা ও পরিবহন ধর্মঘট কাটিয়ে ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল, ফরিদপুর ও সিলেটে সমাবেশের আয়োজন করেছে দলটি।
আগামী ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগরীতে গণসমাবেশের মধ্য দিয়ে বিভাগীয় সমাবেশ শেষ করবে বিএনপি।
বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে যে আগামী সাধারণ নির্বাচন কোনো রাজনৈতিক সরকারের অধীনে নয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে। সংবিধানে এ ধরনের কোনো বিধান না থাকায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এই দাবি তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।