২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় গণহত্যার খবর প্রচার দমন করতে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করায় ১৯১ জন সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের এই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) বিকালে রাজধানীর ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে দৃক পিকচার লাইব্রেরির উদ্যোগে 'গাজা হলোকাস্ট: কিলিং দ্য ট্রুথটেলারস' শীর্ষক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
দৃকের পরিবারের সদস্য ও বন্ধুবান্ধবদের পাশাপাশি অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত দর্শনার্থীরা ফিলিস্তিনের মুক্তির জন্য চলমান লড়াইয়ে নিহত সাংবাদিকদের ছবি নিয়ে সংহতি প্রকাশ করেন।
এ বছরের শুরুতে ৫ মে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস ২০২৪ উপলক্ষে দৃক পান্থপথের দৃকপাঠ ভবনে একই শিরোনামে ৭ দিনব্যাপী একটি প্রদর্শনী এবং একটি প্যানেল আলোচনার আয়োজন করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: গাজায় এক বছরের যুদ্ধে ৪৩ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত
গাজায় নিহত গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আয়োজিত প্রদর্শনীর ভূমিকায় বিশিষ্ট আলোকচিত্রী ও দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহীদুল আলম বর্ণনা করেন, ‘আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রবেশাধিকার ইসরায়েল বন্ধ করায় ফিলিস্তিনি সাংবাদিকরাই হাসপাতাল ধ্বংসের একমাত্র সাক্ষী ছিলেন। যেখানে একসময় মৃত্যুর পথযাত্রীদের জীবন বাঁচাতে তারা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে শ্রম দিয়েছিল এবং পরিত্যক্ত শিশুরা নির্জন ইনকিউবেটরে পড়ে ছিল। জীবন্ত অবস্থায় তাদের গণকবর দেওয়া হয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘তারা দেখেছে ক্ষুধার্ত মানুষগুলো খাবারের ট্রাকের বাইরে সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে। তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে এবং গর্ভবতী মায়েদের স্তন শুকিয়ে গেছে। তাদের হৃদয় ব্যথায় ভারি হয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে। তারা অনেক কিছু দেখেছে। অনেক বেশি বলেছে এবং শুটিং আর্কেডে কার্নিভালের হাঁসের মতো তুলে ফেলা হয়েছিল। কখনো একা, কখনো পরিবারের সঙ্গে। প্রযুক্তি জায়ান্টদের পরিচালিত ড্রোনগুলো তাদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে।’
শহিদুল আলম বলেন, ‘এই সাহসী সাংবাদিকরা তাদের আত্মত্যাগে বিবেকের প্রদীপ জ্বালিয়ে দিয়েছেন। তারা মাংস এবং হাড়ের চেয়ে বেশি ছিল। সত্য বলার পবিত্র শিল্পের কাছে শহীদ হয়েছেন তারা। তাদের লেন্স এমন একটি আয়না মানবতার অন্ধকারতম কোণগুলোকে তুলে ধরে। তাদের গল্পের ওজন আমাদের সম্মিলিত বিবেকের উপর চাপ দেয়।’
এই সংহতি প্রদর্শনীটি ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং চলমান গণহত্যা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে ফিলিস্তিনকে মুক্ত করার অঙ্গীকারের অংশ।