চট্টগ্রামে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) নগরীর ষোলশহর থেকে মুরাদপুর এলাকার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেছেন, নিহতদের মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি জানান, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্র আকরাম (২৪) ও পথচারী ফারুক (৩৫)। এছাড়া তাৎক্ষণিকভাবে আরও একজনের পরিচয় জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: কোটা সংস্কার: রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে শিক্ষার্থী নিহত
ফারুকের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেলেও আকরামের শরীরে দৃশ্যমান কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি জানিয়ে কমিশনার বলেন, ফলে তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এক প্রশ্নের জবাবে কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, ষোলশহরের ২ নম্বর গেট ও মুরাদপুরসহ নগরীর একাধিক স্থানে সংঘর্ষ হয়েছে। ফলে ঠিক কোনো স্থানে মৃত্যুগুলো হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীনও গণমাধ্যমে মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, দ্বিতীয় দিনের মতো মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে সংঘর্ষ শুরু হয়। পুরো ষোলশহর ২ নম্বর গেইট থেকে মুরাপুর পর্যন্ত পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে।
আরও পড়ুন: কোটা সংস্কার আন্দোলন: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ
এর আগে, চবিসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনে বিকাল ৩টা থেকে ষোলশহর স্টেশনে জড়ো হওয়া শুরু করে। এরপর তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বের হন।
অপরদিকে, চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনির নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একটি অংশ মিছিল নিয়ে দুই নম্বর গেট থেকে মুরাদপুরের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। এরপর বিকেল ৪টার দিকে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এরইমধ্যে থেমে থেমে ককটেল বিস্ফোরণের শব্দও শোনা গেছে; কারো কারো হাতে অস্ত্রও দেখা যায়।
তবে ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের অবস্থান চোখে পড়েনি। নগরীরর কেজিডিসিএল কার্যালয়ের সামনে পুলিশ সদস্যরা অবস্থান করছেন।
মঙ্গলবার বিকাল ৫টার দিকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মুরাদপুর-ষোলশহরে সংঘর্ষ চলছে।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, তারা মুরাদপুর হয়ে অবস্থান কর্মসূচি সফল করতে ষোলশহর এলাকায় যাওয়ার পথে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাদের ওপর হামলা করেন। এরপর তারা আত্মরক্ষার্থে পাল্টা হামলা চালান।
এসময় তাদের ২ জন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানান আন্দোলনকারীরা।