এদিকে বাঁধ দেয়ার ফলে পানির স্বাভাবিক গতিপথ বন্ধ হয়ে ওই এলাকার আরাজি মারেয়া সরকারপাড়া ও যুগিদুয়ার গ্রামের দেড় শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
জানা যায়, স্থানীয় প্রভাব ও ক্ষমতার বলে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি মিলে শুকনো মৌসুমে রাতের আঁধারে রড, সিমেন্ট ও কনক্রিট দিয়ে ১০ ফুট উচ্চতার একটি বাঁধ তোলেন। পানির প্রবল স্রোতেও সেটি অক্ষত রয়েছে।
এ ঘটনায় বোদা উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। অভিযোগে বলা হয়, ‘স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ঈদ্রীস আলী, ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম, মফি, কাফী, বাকীসহ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি মাছ শিকারের উদ্দেশ্যেই এই বাঁধ দিয়েছেন।’
রেজাউল ইসলাম নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, ওই বাঁধের জন্য আমন ধানের বীজতলা ও আমন ধানের চারাগাছ পানির নিচে তলিয়ে গেছে। দ্রুত সেটি সরানো না হলে অনেক কৃষক দুর্ভোগে পড়বেন।
রাবেয়া সুলতানা নামে আরেক বাসিন্দা জানান, বাড়িতে পানি জমে আটকে থাকায় থাকায় চুলাও জ্বালানো সম্ভব হচ্ছে না।
একই এলাকার মোস্তাফিজার রহমান বলেন সামান্য বৃষ্টি হলেই এখানকার বেশিরভাগ বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। যারা বাঁধ দিয়েছেন, প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বেশি কিছু বলা যায় না।
সরেজমিন দেখা যায়, ওই বাঁধ সরিয়ে না নেয়ায় ওই এলাকার মানুষের বসতবাড়িতে এখনো হাঁটু পানি জমে আছে। পানির নিচে তলিয়ে গেছে আমনের বীজতলা ও আমন ধানের চারাগাছ। পানিবন্দী হয়ে পড়ায় বয়স্ক, শিশুদের নিয়ে বিপাকে পড়েছেন গ্রামবাসীরা।
এ বিষয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ঈদ্রিস আলি বলেন, ‘বড়শশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ময়ূর আলীর মৌখিক অনুমতি নিয়ে আমরা কালভার্টের মুখে বাঁধ দিয়েছি। অন্য আর কারও অনুমতি নেইনি। তবে আমাদের জমিগুলো কালভার্টের মুখে হওয়ার কারণে ঠিকমতো পানি থাকে না। আমন ধানের ক্ষেতে পানি সরবরাহ করতেই এই বাঁধ দেয়া হয়েছে।’
বড়শশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন বলেন, ‘কালভার্টের মুখে বাঁধ দেয়া নিয়ে আমি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য ওহাবসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা একাধিকবার বিচার-সালিশ করেছি। ঈদ্রিস ও তার লোকজন আমাদের কোনো কথাই শোনেনি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছি।’
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার উল্লেখ করে বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোলায়মান আলী জানান, উভয়পক্ষকে নির্মিত বাঁধটি ভেঙে ফেলার কথা বলা হয়েছে। বিষয়টি নজরে রাখা হচ্ছে।