পানিবন্দী
কুড়িগ্রামে ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দী
কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। শুক্রবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে সকাল ৯ টা পর্যন্ত জেলার সব কটি নদ-নদীর পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে।
তবে পানি কিছুটা কমলেও এখনও বিপৎসীমা সীমার উপরে রয়েছে দুধকুমার নদ ও ধরলা নদীর পানি। এতে জেলার ৯ টি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ।
প্রত্যন্ত এলাকার গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা বিছিন্ন হওয়ার পাশাপাশি ঘরবাড়ি তলিয়ে দুর্ভোগে পড়েছে এই অঞ্চলের মানুষজন।
তিস্তা, ধরলা,দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকার নিম্নাঞ্চলের ঘরবাড়ি পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে।
এসব এলাকার বানভাসি মানুষেরা আসবাবপত্র ও গবাদিপশু পশু নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে উঁচু স্থানগুলোতে। স্যানিটেশন ব্যবস্থা, বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের সংকটে ভুগছেন তারা।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী, জেলার ধরলা নদীর পানি কমে সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ২১ সেন্টিমিটার এবং দুধকুমার নদের নুন খাওয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
অন্যদিকে, ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী পয়েন্টে ২৫ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেলেও বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছি ইউনিয়ন কদমতলা গ্রামের হোসেন আলী বলেন, গত দু’দিন ধরে পানি বেড়েই চলছে। পানি বাড়ার কারণে এলাকার অনেক ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। ধানের বীজতলা ও পটলের খেত এখন পানির নিচে। সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় নৌকা ছাড়া বের হওয়ার কোনো উপায় নাই।
কুড়িগ্রাম সদরের চর জগমন গ্রামের মো. হযরত আলী বলেন, পানি ঘরে ঢুকে খাট তলিয়ে গেছে। রান্নার চুলা পানির নিচে, ঘরে চাল থাকলেও আগুন জ্বালানোর কোনো উপায় নেই।
চর জগমন গ্রামের ছালেহা বেগম বলেন, কিছুদিন আগে পানি উঠার সঙ্গে সঙ্গে নেমে গেছে। এবার পানি বাড়ার ধরন আলাদা। ঘরের অর্ধেক পানিতে ডুবে গেছে। গত দু’দিন ধরে ঘরের জিনিসপত্র ও হাঁস-মুরগি নিয়ে তাবু টাঙিয়ে ব্রিজে আছি। কেউ আমাদের খোঁজ-খবর নেয় না।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এই পানি বৃদ্ধির অবস্থা তিন থেকে চারদিন পর্যন্ত উঠানামা করতে পারে। তারপর পানি নেমে যাবে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, কুড়িগ্রামে বন্যায় ১২হাজার পরিবার পানিবন্দী এবং নদী ভাঙনের শিকার ১৫০০ পরিবার। এসব বন্যাকবলিতদের জন্য সাড়ে ৮ লাখ টাকা, ২৭৫ মেট্রিক চাল এবং ৩০০ শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আমরা বন্যার্তদের তালিকা করছি, তালিকা পেলে উপবরাদ্দ দেওয়া হবে।
গত ১৪ জুলাই শুক্রবার বিভিন্ন বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে জেলায় ৮০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী
১ বছর আগে
কুড়িগ্রামে বন্যায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী
কুড়িগ্রামের দুধকুমার নদের পানি বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) থেকে হু-হু করে বেড়ে নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। ফলে জেলার প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
শুক্রবার (১৪ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার পোড়ারচর গ্রামের শাপলা জানান, সকালে রান্নাঘরের মেঝে তলিয়ে যাওয়ায় রান্না করতে পারছেন না। জিনিসপত্র সরাতে দুপুর গড়িয়ে গেছে।
তার স্বামী বাবুল আলী এক সন্তানকে কোলে নিয়ে আছেন, অপর সন্তানটি তার শরীর ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে। শাপলা তখন চাল আর কাঁঠালের বিচি ভাজছেন। এই খেয়েই তাদের দিন পার করতে হবে। বন্যা হলেই এমন দুর্দশায় পড়ে এসব পরিবার।
পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ ভগবতীপুর গ্রামের নার্গিস নামের আরেক নারী বলেন, চার দিন থেকে পানিবন্দী হয়ে আছি। কেউ খোঁজখবর নেয় না। ঘরের চৌকিতে পানি ওঠায় পাশের উঁচু বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে আছি। এই গ্রামে প্রায় ৪৫/৫০টি বাড়িতে পানি উঠেছে।
নাগেশ্বরী উপজেলার নুনখাওয়া ইউনিয়নের চর কাফনা গ্রামের নুর বখত জানান, গতকাল থেকে পানির তোড় বেড়েছে। নিচু এলাকার বাড়িঘরে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। লোকজন গবাদিপশু নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপরে
১ বছর আগে
কুড়িগ্রামে বন্যায় ১২ হাজার পরিবার পানিবন্দী, খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমারসহ সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে জেলার ৯ উপজেলায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে নিম্নাঞ্চলের প্রায় ১২ হাজার পরিবার।
এতে করে ভোগান্তি বেড়েছে বন্যা কবলিত এলাকার মানুষজনের। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছে চরাঞ্চলের পরিবারগুলো।
বিশেষ করে ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকায় নতুন জেগে ওঠা চরাঞ্চলের ঘরবাড়িতে ৫ দিনে ধরে পানিতে তলিয়ে থাকায় চরম দুর্ভোগে রয়েছেন তারা। অনেকেই ঘর-বাড়ি ছেড়ে নৌকা ও উঁচু স্থানে অবস্থান করলেও শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটে পড়েছেন তারা।
আরও পড়ুন: রেকর্ড বৃষ্টিতে তলিয়ে যাওয়া রংপুরে পানিবন্দী ৫০ হাজার মানুষ
জানা গেছে, উলিপুর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকার পূর্ব বালাডোবা, কালির আলগা, মুসারচর ও সদরের পোড়ার চরসহ ১০টি চরে বসবাসকারী দুই শতাধিক পরিবার ঘর বাড়ি ছেড়ে নৌকা ও উঁচু জায়গায় অবস্থান নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে।
এই পরিবারগুলোর ঘর বাড়ি তলিয়ে থাকায় ঠিকমতো রান্না করতে পারছেন না তারা। পাশাপাশি পরিবারগুলোর হাতে কোনো কাজ না থাকায় শুকনো খাবার এবং নলকুপ তলিয়ে থাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকটে পড়েছেন তারা।
এদিকে নদ-নদীর অববাহিকার গ্রামীণ সড়ক তলিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। জেলার প্রায় ১০০ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
চারণভূমি তলিয়ে থাকায় চরাঞ্চলগুলো গবাদি পশুর খাদ্য নিয়েও বিপাকে পড়েছেন বন্যা কবলিতরা। এছাড়া কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে কুড়িগ্রামের সবকটি নদ-নদীতে পানি বিপদ সীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুপুর ১২টায় দেয়া তথ্যমতে জেলার পাটেশ্বরী পয়েন্টে দুধকুমার নদের পানি বিপদসীমার ৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়াও কুড়িগ্রাম সদরের ধরলার সেতু পয়েন্টে ৩৯ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ৫৫ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৬১ সেন্টিমিটার ও কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি ৮৯ সেন্টিমিটার বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের পুর্ববালাডোবার চরের আব্দুর রহমান জানান, এই চরে ৪৯টি পরিবারের বসবাস। চরটি নতুন এবং নিচু হওয়ায় এখানকার বেশির ভাগ ঘর বাড়িতে কোমর সমান পানি উঠেছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত, বাড়ছে পানিবন্দী মানুষের দুর্ভোগ
১ বছর আগে
বন্যায় কুড়িগ্রামে ভোগান্তি চরমে
কুড়িগ্রামে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা কবলিতরা চরম ভোগান্তিতে রয়েছে। ঘরে পানি প্রবেশ করায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে বাঁধে ও আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে ঠাঁই নিয়েছেন।
জেলার বিভিন্ন এলাকা পানিবন্দী হয়ে পড়ায় খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। একই সাথে গবাদিপশুর খাদ্যেরও তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে। নিম্নবিত্তরা এক বেলা খাচ্ছেন তো আরেক বেলা অনাহারে থাকছেন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানান, শুক্রবার সকালে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫০ সেন্টিমিটার ও ধরলা নদীর পানি ব্রিজ পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মঞ্জুরুল হক জানান, বন্যার ফলে জেলায় প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর রোপা আমন, শাকসবজি ও বীজতলা তলিয়ে গেছে।
অপরদিকে, তিস্তা নদীসহ বেশ কয়েকটি নদীতে তীব্র ভাঙন দেখা দেয়ায় গাছপালা, পুকুর, আবাদি জমিসহ বসতভিটা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। চলতি বন্যায় তিস্তার ভাঙনে সহস্রাধিক বাড়িঘর ও দেড় শ’ বিঘা আবাদি জমি বিলীন হয়েছে।
আরও পড়ুন: মাগুরায় বন্যার পানিতে রাস্তা ডুবে জনদুর্ভোগ চরমে
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, বন্যা দুর্গতদের আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তরসহ তাদের জন্য বিশুদ্ধ পানি ও ভ্রাম্যমাণ লেট্রিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও বৃহস্পতিবার থেকে উপ-বরাদ্ধকৃত ২৮০ মেট্রিক টন চাল ও ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা দুর্গত এলাকায় বিতরণ শুরু হয়েছে।
৩ বছর আগে
কয়রায় বাঁধে ভাঙন, ৩ গ্রামের মানুষ পানিবন্দী
খুলনার কয়রা উপজেলা সদর ইউনিয়নের ঘাটাখালির রিংবাঁধ ভেঙে পানিতে তলিয়ে গেছে গোররা, ঘাটাখালি ও হরিণখোলা গ্রাম। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন অন্তত তিন হাজার মানুষ।
৩ বছর আগে
পঞ্চম দফা বন্যায় কুড়িগ্রামে পানিবন্দী ৬০ হাজার মানুষ
পঞ্চম দফা বন্যায় কুড়িগ্রামে সার্বিক পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। ধরলা নদীর পানি কিছুটা কমলেও বিপদসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সদরসহ কয়েকটি উপজেলার শতাধিক চরের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
৪ বছর আগে
কুড়িগ্রামে নতুন করে শতাধিক চর প্লাবিত, পানিবন্দী ৫০ হাজার
ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রাম পঞ্চম দফা বন্যার কবলে পড়েছে। ধরলা ও তিস্তাসহ সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
৪ বছর আগে
টানা বৃষ্টিতে তিস্তার পানি বৃদ্ধি, লালমনিরহাটে পানিবন্দী ৫ হাজার পরিবার
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে তিস্তার পানি বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। লালমনিরহাটে তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল আবারও বন্যায় প্লাবিত হয়ে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার।
৪ বছর আগে
সাতক্ষীরা উপকূলের বানভাসিদের দুর্দশা বাড়ছে, লক্ষাধিক পানিবন্দী
যতই দিন যাচ্ছে ততই সাতক্ষীরার উপকূলীয় উপজেলা আশাশুনির প্রতাপনগর, শ্রীউলা ও আশাশুনি ইউনিয়নের বানভাসি মানুষের দুর্দশা বাড়ছে।
৪ বছর আগে
চাঁদপুরে পানিবন্দী মানুষের দুর্ভোগ চরমে
চাঁদপুরে গত কয়েক দিন ধরে মেঘনা, ডাকাতিয়া ও ধনাগোদা নদীর পানি বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মুষলধারে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি বেড়ে গিয়ে জেলা শহরের নিম্নাঞ্চলের অনেক রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এসব এলাকায় বসবাসকারীদের দুর্ভোগ বেড়ে চরম আকার ধারণ করেছে।
৪ বছর আগে